মালদহে এসটিএফ-এর বড় সাফল্য, উদ্ধার একুশ লক্ষ টাকার জাল নোট

আবারও বড় সাফল্য পেল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার গভীর রাতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (STF) মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার পিটিএস মোড়ে অভিযান চালায়। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ জাল ভারতীয় নোট। এই ঘটনায় দুই পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে এসটিএফ। ধৃত দুই যুবকের নাম হাজরাত বেলাল ওরফে মাসুদ ও তরিকুল ইসলাম। একজনের বয়স ২৪ বছর এবং অন্যজনের ২৫। ধৃত দুজনেরই বাড়ি মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর ও কালিয়াচক থানা এলাকায়। তারা ফারাক্কাগামী ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ঘোরাঘুরি করছিল। তাদের তল্লাশি চালিয়ে দুটি ব্যাগ ভর্তি জাল নোট উদ্ধার হয়। মোট ২০ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা মূল্যের জাল নোট বাজেয়াপ্ত করেছে এসটিএফ। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া সবকটি নোটই ৫০০ টাকার, মোট সংখ্যা ৪১৭৪টি। প্রাথমিক জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছে, এই জাল নোট বাংলাদেশ থেকে আনা হয়েছে। এই ঘটনায় বৈষ্ণবনগর থানায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে ওই ধৃত দুই যুবকের বিরুদ্ধে। তদন্তে এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
সব রাজ্যেই ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির নির্দেশ কেন্দ্রের

সমস্ত রাজ্যে তৈরি করতে হবে ডিটেনশন ক্যাম্প। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বহিষ্কার করার আগে যাতে তাঁদের গতিবিধি সীমাবদ্ধ করা যায় এবং নজরদারি চালানো যায়, সে কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমনকী এই ডিটেনশন ক্যাম্পে কাদের রাখা হবে তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কোনও সন্দেহভাজনকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠাতে পারবে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। যদি ওই সন্দেহভাজন বিদেশি দাবি করেন যে তিনি বিদেশি নন। তারপরও এই নিয়ে কোনও প্রমাণ দাখিল করতে না পারেন কিংবা আদালত থেকে এই নিয়ে জামিনের ব্যবস্থা করতে না পারেন, তবে তাঁকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে। অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী বিদেশিদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর আগে তাঁদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই ডিটেনশন শিবিরে পাঠানো হবে। সম্প্রতি পাশ হওয়া অভিবাসন ও বিদেশি আইন, ২০২৫-র পরিপ্রেক্ষিতে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এমনকী কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, নিজের দেশে দোষীসাব্যস্ত কোনও বিদেশিকে ভারতে প্রবেশ এবং আশ্রয় দেওয়ার বিষয়েও আরও কঠোর হতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি এবার থেকে কোনও বিদেশি ভারতের কোনও পর্বতশৃঙ্গে আরোহণের ক্ষেত্রেও নিতে হবে সরকারি ছাড়পত্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, কেন্দ্র সরকার বা রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন বা জেলা কালেক্টর বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, এই আদেশের মাধ্যমে জানতে চাইতে পারে যে কেউ আইনের অধীনে বিদেশি কিনা। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে সর্বোচ্চ তিনজন সদস্য থাকবেন, যাদের আইনি অভিজ্ঞতা আছে, যাঁদের কেন্দ্র সরকার যোগ্য বলে মনে করবে। এবার থেকে কোনও বিদেশি কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া ভারতে যে কোনও অঞ্চলে ইচ্ছাধীন মতো যেতে পারবে না। এমনিতেই এসআইআর(SIR) ও এনআরসি(NRC) নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে সংসদের বাইরে এবং ভিতরে এই ইস্যুতে সরব। এমনকী পশ্চিমবঙ্গেও বাংলা ও বাঙালি নির্যাতনের প্রতিবাদে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিষোদ্গার করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়েও তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করছে বঙ্গ বিজেপির নেতারা। এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এই নির্দেশিকাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
অবশেষে গ্রেফতার বিজেপি নেতা রাকেশ সিং

গত সপ্তাহেই প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ভাঙচুরও চালায় একদল বিজেপি সমর্থক। এমনকী রাহুল গান্ধীর ছবিতে লেপে দেওয়া হয় কালি। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রাকেশ সিং ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে এন্টালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে কংগ্রেস। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ এর আগে বিজেপির ৩ জন কর্মী ও রাকেশ সিংয়ের এক অনুগামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এমনকী সোমবার সকালে গ্রেফতার করা হয় রাকেশ সিংয়ের ছেলে শিবম সিংকে। কিন্তু রাকেশের সন্ধান পাচ্ছিল না কলকাতা পুলিশ। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিও পোস্ট করতে দেখা যায় এই বিজেপি নেতাকে। সেই সূত্র ধরেই মঙ্গলবার গভীর রাতে ট্যাংরার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাত ২টা নাগাদ ট্যাংরার ওই ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে রাকেশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একনকী পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে গাড়িতে তোলার সময়ও তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে শ্লোগান তুলতে দেখা গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায়সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজেপি নেতা রাকেশ সিং সোস্যাল মিডিয়াতে রীতিমত সক্রিয়। সম্প্রতি তাঁকে সোস্যাল মিডিয়ায় রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করে ভিডিও বানাতেও দেখা গেছে। কেননা গত সপ্তাহে বিহারে ভোটার অধিকার যাত্রা থেকে রাহুল গান্ধী নাকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রয়াত মাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। তারই পাল্টা প্রতিবাদে রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বে বিজেপি সমর্থকরা গত সপ্তাহে বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। এমনকী সে সময় তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় দফতর ভাঙচুর এবং রাহুল গান্ধীর ছবিতে কালি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে অবশেষে গ্রেফতার করল পুলিশ।