জীবন্ত মানুষের শরীরে জন্মাচ্ছে অসংখ্য সুচ! কারণ অনুসন্ধানে ‘বিজ্ঞান মঞ্চ’ ও মালদা স্বাস্থ্য দপ্তর

শরীরে জন্মাচ্ছে গাদা গাদা সুচ! কী চমকে গেলেন তো? হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। জীবন্ত মানুষের শরীরেই মিলছে অসংখ্য সুচ। গোটা শরীরের মধ্যে যেন কিলবিল করছে সুচগুলি। সুচ নাকি বেড়েই চলেছে। যা দেখে গা শিউরে উঠছে। কালা জাদু? মানব শরীরে এই সুচ কাণ্ড নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত পাড়া-প্রতিবেশীরা। যুবকের বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে মেডিকেল টিম। তারপর বিষয়টি স্পষ্ট হবে দাবি মালদা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের। অন্যদিকে ‘কালা জাদু’ বলে আদৌ কিছু হয় না, এমন দাবি করে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বিজ্ঞান মঞ্চও। মালদার কালিয়াচকের সুলতানগঞ্জের মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা মূক ও বধির যুবক হায়দার আলি। তাঁর বয়স ২৭ বছর। ওই যুবকের স্ত্রী নাসিমা খাতুনের বক্তব্য, কয়েক মাস আগে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে তাঁর স্বামীর পেট থেকে অপারেশন করে দুই দফায় মোট ৩৭টি সুচ বের করা হয়েছে। সেই সুচ চিকিৎসকেরা তাঁদের দেখিয়েওছেন। এখনও পর্যন্ত বাড়ির ঘটিবাটি বিক্রি করে চিকিৎসা চলছে হায়দার আলির। এখন আর তাঁর পরিবারের পক্ষে নার্সিংহোমের খরচ চালানো অসম্ভব। তাঁর পরিবার নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। কীভাবে স্বামীর শরীরে সুচ তৈরি হচ্ছে জানা নেই। তাঁদের দাবি, ‘কালা জাদু’ করেই স্বামীকে কেউ সুচ ঢুকিয়ে দিচ্ছে শরীরে। এই অবস্থায় প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই পরিবারের। কালিয়াচক থানার সুলতানগঞ্জ মধ্যপাড়া এলাকায় মাসির বাড়িতেই থাকেন প্রতিবন্ধী মূক ও বধির যুবক হায়দার আলি। তাঁর স্ত্রীর নাম নাসিমা খাতুন। ছয় বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের দুবছরের মধ্যেই তাঁদের পর পর দুই সদ্যোজাত সন্তান জন্মের সময়ই মারা যায়। হায়দারের মা সামেনা বিবি, দীর্ঘদিন আগেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর হায়দারের বাবা আলেপ শেখ দ্বিতীয়বার বিয়ে করে আলাদা হয়ে গিয়েছেন। হায়দারের বাবার বাড়ি কালিয়াচকের বাঁধন এলাকায়। গত দেড় বছর ধরেই মূলত হায়দার আলির শরীরে এই সুচ সমস্যা তৈরি হয়েছে। নিজে নিজেই সূচ জন্ম নিচ্ছে। হায়দারের এক আত্মীয় মহম্মদ সাকির শেখ বলেন, “গত দেড় বছর আগে হায়দার যখন শরীরের যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। তখন ওকে মালদা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এক্স-রে রিপোর্ট দেখার পরেই সকলের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। হায়দারের হাতে, পেটে, পিঠে কিলবিল করছে সূচ। গত দুই মাস আগে সামসেরগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে অস্ত্রোপ্রচার করে হায়দারের শরীর থেকে দুই দফায় মোট প্রায় ৩০টি সুচ বার করেছিলেন চিকিৎসকেরা। সেই সুচ বেশ বড় সাইজের। আবারও নাকি হায়দারের শরীরে অসংখ্য সূচ দেখা দিয়েছে।” এদিকে হায়দারের শরীরের এই সুচ কাণ্ড নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত পাড়া-প্রতিবেশীরা। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আনারুল শেখ ও যশোদা বর্মনদের বক্তব্য, “এমন অসুখের কথা জীবনে কোনদিনও শুনিনি। জীবন্ত মানুষের শরীরে অসংখ্য সুচ। এটা ভাবাই যায় না। এক্স-রে ছবিতে হায়দারের দুই হাতে, পেটে অসংখ্য সুচ ধরা পড়েছে। এটা কি করে সম্ভব। এই ঘটনার পিছনে অবশ্যই কিছু অন্য কারণ রয়েছে।” তবে এই ঘটনার পেছনে ‘কালা জাদু’র কোনও ঘটনা জড়িত নেই বলে দাবি করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক মনোরঞ্জন দাস। মালদার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, “আগে দেখতে হবে ওই যুবক কোনও সময় মাদকাসক্ত ছিল কিনা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ইনজেকশনের সিরিঞ্জ ব্যবহার করে নেশা করে থাকে কেউ কেউ। শরীরে সুচ ঢুকে থাকলে সেটার একটা প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আগে রোগীকে আমরা মানসিক দিক দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখব। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি টিম ওই যুবকের বাড়িতে যাবে।” চিকিৎসকরা বলছেন, মানবদেহে কখনো সুচের জন্ম হয় না। তাঁদের যুক্তি, যেহেতু ওই যুবক মানসিক রোগী তাই হয়ত নিজে নিজেই সে শরীরের মধ্যে সুচ ঢুকিয়েছে, না হলে যেহেতু ওই যুবক মূক ও বধির তাই তাকে সুস্থ করে তোলার নাম করে কোনও ওঝা তার দেহে সুচ ঢুকিয়ে দিয়েছে। তবে সমস্তটাই এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দুর

নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে ভোটের বৈতরণী পেরোতে চাইছে বিজেপি— এমন অভিযোগ তুলে ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলের সাংসদরা গত কয়েক সপ্তাহ জুড়ে সংসদ এবং সংসদের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এমনকী কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও ২০২৪ সালের ভোটার লিস্ট ধরে ধরে বারাণসী সহ একাধিক কেন্দ্রের ভোট কারচুপির তথ্য সামনে আনছেন। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা দেশজুড়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘ভোট চোর’ শ্লোগান তুলছেন বিরোধীরা। এই আবহে এবার বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধেই পাল্টা ভোট চুরির অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগের তির ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে থেকে জয়ী তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। ২০২৪ লোকসভা ভোটে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে রেকর্ড ৭ লক্ষ ১০ হাজার ভোটে জিতেছেন অভিষেক। এবার এই জয়ের ব্যবধান নিয়েই সরব হল রাজ্য বিজেপি। প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিপুল মার্জিনের জয় নিয়ে এর আগে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর। তিনি রীতিমত সাংবাদিক সম্মেলন করে ডায়মন্ড হারবারে লক্ষ লক্ষ ভুয়ো ভোটার আছে বলে দাবি করেছিলেন। যদিও তারপরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতিনিধি মারফত অনুরাগ ঠাকুরের বাড়িতে সমস্ত তথ্য সম্বলিত ভিডিয়ো ডেটা পাঠিয়েছিলেন। রাজ্যে এসআইআর নিয়ে টালবাহানার মধ্যে আবারও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সম্প্রতি বিজেপির এক সভা থেকে তিনি মন্তব্য করেন, “তিনি নাকি ৭ লক্ষ ভোটে জিতেছেন। জানেন, ৯০০-র বেশি বুথে সেলোটেপ লাগানো ছিল। প্রতি বুথে ৮ জন করে পোলিং এজেন্ট, আর বাইরে ছিল জাহাঙ্গির বাহিনী। আপনি যদি গিয়ে ভিতর থেকে চিৎকার করেন, যে আমি পদ্মফুল বা অন্য কোনও প্রতীক খুঁজে পাচ্ছি না, তাহলে আপনি যখন বুথ থেকে বেরোবেন, তখনই মারবে। আবার যদি নাও টেপেন, শব্দ না হয়, তাও মারবে। এই করে সাত লক্ষ ভোটে জিতেছে।” সব মিলিয়ে অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই উত্তাপ যে আরও বাড়বে তা এখনই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
মোদীর দমদমের সভাতেও ডাক পেলেন না দিলীপ ঘোষ

আগামী ২২ আগস্ট বঙ্গ সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওইদিন নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত নতুন মেট্রো রেলের উদ্বোধন করবেন তিনি। এমনকী ওই দিন দমদমে সভা করার কথাও মোদীর। ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু নবান্ন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে এবারও প্রধানমন্ত্রীর সভায় আমন্ত্রণ পেলেন না বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বিজেপির দাপুটে নেতা দিলীপ ঘোষ। এর আগেও দুর্গাপুরে মোদীর সভায় ডাক পাননি তিনি। বরং সে সময় তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। একনকী সেই বৈঠকে মিডিয়ার সামনে মুখ খোলা নিয়ে নাকি দিলীপ ঘোষকে রীতিমত ভর্ৎসনা করেছিলেন নাড্ডা। সুকান্ত মজুমদার বঙ্গ বিজেপির সভাপতি থাকাকালীন দলে একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। একনকী একাধিকবার সংবাদমাধ্যমের সামনে সে নিয়ে ক্ষোভও উগরে দেন তিনি। তবে শমীক ভট্টাচার্য রাজ্য বিজেপির সভাপতি হওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন ছবিটা হয়তো বদলাবে। দিলীপ ঘোষকে হয়তো আবারও স্বমহিমায় দেখা যাবে। এমনকী রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের একান্ত বৈঠক অত্যন্ত সেই বার্তাই দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবিক ক্ষেত্রে ছবিটা যে বদলায়নি, তা মোদীর দমদমের সভায় দিলীপ ঘোষের আমন্ত্রণ না পাওয়ায় আরও স্পষ্ট হল। দমদমে প্রধানমন্ত্রীর সভায় দিলীপ ঘোষ উপস্থিত থাকবেন কিনা তা নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। অবশেষে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে নিজেই স্পষ্ট করে দিলেন সবটা। এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সভায় আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাই ওইদিন আমি যেতেও পারি, আবার নাও যেতে পারি। আমি কোথায় যাব সেটা আমিই ঠিক করি, তাই আমিই ঠিক করব আমি ওইদিন যাব কী না।” যদিও পাশাপাশি তিনি এও জানান যে, তিনি দলের একজন অনুগত সৈনিক। দল যেমন নির্দেশ তাঁকে দেবেন, তিনি সেই মতো তা পালন করবেন। সব মিলিয়ে দিলীপ ঘোষ যে দলের অন্দরে এখনও কোণঠাসা তা তিনি মুখে না বললেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
শিয়ালদহে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে মারধর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের

এতদিন বিজেপি শাসিত ভিন রাজ্যগুলি থেকেই অভিযোগ আসছিল যে, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে তাঁদের বাংলাদেশী বলে গ্রেফতার করা হচ্ছিল। কিন্তু এবার এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল পশ্চিমবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র খোদ কলকাতা শহরেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়াকে বাংলাদেশি সন্দেহে মারধর করল শিয়ালদহ ব্রিজের নীচে একদল ব্যবসায়ী। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল হোস্টেলের একজন ছাত্র শিয়ালদা ব্রিজের নিচে মোবাইলের দোকানে কিছু দরকারি জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন। সেখানেই চলছিল দর-কষাকষি। এমনকী ওই ছাত্রের সঙ্গে দোকান মালিকের খানিক বচসাও হয়। এরপর নাকি হিন্দিভাষী দোকানদার ওই পড়ুয়াকে গালিগালাজ করতে শুরু করেন। এরপর ওই পড়ুয়া হোস্টেলে ফিরে গিয়ে তাঁর সহপাঠীদের ডেকে আনেন। আর তারপরই ওই চার ছাত্রদের উপর চড়াও হন আশপাশের ব্যবসায়ীরাও। গুরুতর আহত অবস্থায় চারজন ছাত্রকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলেই অভিযোগ পড়ুয়াদের। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা পুলিশের তরফ থেকে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। ঘটনার খবর পেয়ে মুচিপাড়া থানায় যান বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ্যায়। অবিলম্বে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা গুজরাটে মার খাব, রাজস্থানে মার খাব, এখন কলকাতাতেও মার খাব? মানলাম ওড়িশায় বিজেপি সরকার, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকার আছে। কলকাতায় তো বিজেপি নেই। তাহলে এই অপরাধীগুলো কেন গ্রেফতার হবে না?” পাশাপাশি গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের সুরে সুর মিলিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আগে তো ভিন রাজ্যে হত। এখন এখানেও হচ্ছে। এই পরিবেশ তৈরি করছেন দিল্লিওয়ালারা।” অন্যদিকে আক্রান্ত ছাত্রদের অভিযোগ, “আমাদের হস্টেলের কিছু ছেলে মোবাইলের কভার কিনতে যায়। তখন একটা লোক হিন্দিতে বলছে, ‘বাংলাদেশি বলব। কী করবি বল? কী করার আছে কর।’ এরপর আমায় মারল। আমার মোবাইল কেড়ে নিল। আমাদের একটা ছেলেকে আটকেও রেখেছিল। তার জন্য আমরা প্রতিবাদ করি। সেই কারণে, ছুরি-বন্দুক দিয়ে আঘাত করে আমাদের।” অন্যদিকে বিজেপি নেতা সজল ঘোষের দাবি, “শিয়ালদহ মানে গেটওয়ে অফ কলকাতা। যদি সেখানেই এমন বাংলাদেশি বলে তাহলেও নিন্দনীয়। যদিও পুরো বিষয়টিই তদন্ত করে দেখা উচিত।”
বাংলার সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে লাফিয়ে বাড়ছে নতুন ভোটারের সংখ্যা

এসআইআর (SIR) নিয়ে ক্রমশ আশঙ্কা বাড়ছে রাজ্যবাসীর মনে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপও। স্বাভাবিক ভাবেই বাংলায় এসআইআর চালু হওয়া নিয়ে যথেষ্ট আতঙ্কেই আছেন সাধারণ মানুষ। গত মাস থেকে ভোটার এবং আধার কার্ড সংশোধনের জন্য যে পরিমাণ আবেদন পত্র জমা পড়েছে তাতে করে ছবিটা পরিষ্কার। এই আবহে সামনে আসছে আরও একটি তথ্য। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন মাসে রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলি থেকে সবচেয়ে বেশি আবেদন পত্র জমা পড়েছে নতুন ভোটার নিবন্ধনীকরণের জন্য। যে সীমান্তবর্তী এলাকার ভুয়ো ভোটার বা বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়। এমনকী এই প্রশ্নে রাজ্যের শাসক দলের দিকেই ওঠে অভিযোগের আঙুল। শাসক দল তৃণমূল নাকি এই ভুয়ো ভোটারদের নিজেদের ভোট-ব্যাংক বাড়াতে কাজে লাগায়। এই আবহে সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে নতুন ভোটারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়া নিঃসন্দেহেই তাৎপর্যপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচন দফতরের এক আধিকারিকের মতে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলি যেমন— উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং কোচবিহার জেলায় নতুন ভোটার তালিকাভুক্তির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। গত তিন মাসে ফর্ম ৬-এর মাধ্যমে নতুন ভোটার রেজিস্ট্রেশন ৯ গুণ বেড়েছে। আগে যেখানে বিধানসভা কেন্দ্র পিছু গড়ে ১০০টি আবেদন জমা পড়ত, এখন সেখানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি মাসে প্রায় ৯০০। পাশাপাশি ২০২৬-শের নির্বাচনকে মাথায় রেখে নির্বাচন কমিশন এক অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছে। গত দিল্লি বিধানসভার মডেলেই কলকাতা এবং পাশ্ববর্তী শহরাঞ্চলের বহুতল আবাসন ভবনের নিচের নীচে পোলিং বুথ তৈরি করার পরিকল্পনা নিচ্ছে। তবে সেখানে অবশ্য কমপক্ষে ৬০০ মানুষের জনবসতি থাকতে হবে। শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ভোট সচেতনতা বাড়াতেই কমিশনের এই উদ্যোগ বলে জানা যাচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল বলেন, “ভারতীয় নির্বাচন কমিশন আমাদের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। গত দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে এটি চেষ্টা করা হয়েছিল এবং তাতে সেখানে ভোটদানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এবার তা বাংলাতেও চালু করা হবে।” বাংলায় বিগত নির্বাচনগুলিতেও গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলের প্রাপ্ত ভোট শতাংশ অনেকটাই কম ছিল। তবে নির্বাচন কমিশনের এই নতুন প্রকল্পের ফলে শহরাঞ্চলে ভোটদানের হার আদৌ বাড়ে কিনা, সেটাই দেখার।