সরকারি হিসেবে প্রসব সংখ্যা কমলেও, বার্থ সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মালদায়

সংশয়ে জন্ম শংসাপত্র। সরকারি হিসেবে যেখানে প্রসবের সংখ্যা কমছে, সেখানে বার্থ সাটিফিকেট রেজিষ্ট্রেশন আশ্চর্য জনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বরং বলা ভালো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মালদা জেলাতে। যা চরম সন্দেহজনক বলে দাবি করা হয়েছে মালদা বিজেপির তরফ থেকে। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীরা তৃণমূল পঞ্চায়েতগুলো থেকে বার্থ সার্টিফিকেট বানিয়ে নিচ্ছে। এদিকে ইতিমধ্যেই জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়ার নির্দেশে, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।এসআইআর-এর ভয়ে জন্ম সার্টিফিকেট করাচ্ছে বলে দাবি তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে জেলা পঞ্চায়েত দফতর থেকে মোট ৪৪ হাজার ২২৯টি জন্মের শংসাপত্র অনুমোদন করা হয়েছিল৷ ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা এক ধাক্কায় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫ হাজার ৯২১টি৷ আর চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত সেই সংখ্যাটি এসে দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ২৬টিতে। অর্থাৎ ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালে পঞ্চায়েতের অনুমোদিত জন্মের শংসাপত্র বেড়েছে ১১ হাজার ৬৯২টি৷ প্রশাসনিক কর্তাদের নজরে সন্দেহজনক হয়ে উঠেছে ইংরেজবাজারের যদুপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত ও মানিকচক ব্লকের উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতl মালদা শহর সংলগ্ন এই পঞ্চায়েতে ২০২২ সালে মোট শংসাপত্র অনুমোদিত হয়েছিল ২৫ হাজার ৬০২টি৷ ২০২৪ সাল পর্যন্ত এখানে প্রতি মাসে গড়ে ৭১১টি জন্মের শংসাপত্র অনুমোদিত হয়েছে৷ কিন্তু ২০২৫ সালের মার্চ মাসেই এই পঞ্চায়েতে অনুমোদিত হয়েছে ৮০৩টি শংসাপত্র৷ আরও বড় ছবি মানিকচকের উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে৷ সেখানে ২০২২ সালে ৫৩৬টি ও ২০২৩ সালে অনুমোদন করা হয়েছিল ৫৩৮টি শংসাপত্র৷ অথচ ২০২৪ সালে এখানে অনুমোদিত হয়েছে ৪৫৪৭টি৷ চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত অনুমোদিত হয়েছে ৩২৪০টি শংসাপত্র৷ এই পঞ্চায়েতে গত তিন বছরে শংসাপত্র প্রদানের গড় মাসে ১৮৫টি৷ চলতি বছরের মার্চ মাসে ৭২৭টি শংসাপত্র অনুমোদিত হয়েছে৷ তৃণমূল পরিচালিত ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নমিতা চৌধুরীর বক্তব্য, “আসলে এসআইআর নিয়ে মানুষের মনে একটা ভয় কাজ করছে৷ তাই আগে যাঁরা জন্মের শংসাপত্র রেজিস্ট্রেশন করাননি, এখন পঞ্চায়েত দফতরে তাঁদের ভিড় বাড়ছে৷ এই কারণেই শংসাপত্র রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা এভাবে বেড়ে গিয়েছে৷ এর পিছনে অন্য কোনও কারণ নেই৷” যদিও বিষয়টি নিয়ে ময়দানে নামতে দেরি করতে রাজি নয় গেরুয়া শিবিরও৷ বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, “আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের স্বর্গরাজ্য৷ এই ছবিটা তারই প্রমাণ।” মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু জানান, “বিষয়টি সামনে আসতেই ইতিমধ্যেই প্রশাসন এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। আর বিজেপি বলছে অনুপ্রবেশের কথা। সীমান্তে পাহারা দিচ্ছে তো কেন্দ্রীয় বাহিনি। তাহলে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশিদের কারা অনুপ্রবেশ করাচ্ছে ? যে দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা সামনে এসেছে ইতিমধ্যেই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর তার তদন্ত শুরু করেছে।”
তৃণমূলের স্বাধীনতা দিবসের সভায় মমতাকে ‘আজকের মাতঙ্গিনী হাজরা’ সম্বোধন

গত শুক্রবার মালদা শহরের রথবাড়ি মোড়ে তৃণমূলের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এবং শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠান হয়। সেখানে যোগ দিয়ে চড়া সুরে বিজেপিকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতারা। এবার ওই মঞ্চ থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘আজকের মাতঙ্গিনী হাজরা’ বলে সম্বোধন করলেন মালদার তৃণমূল জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। পাশাপাশি এদিন ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিজেপি নেতা-কর্মীদের রক্তে দেশকে আবার নতুন ভাবে স্বাধীন করার ডাক দিলেন তিনি। তাঁর কথায়, বিজেপি নেতারা আজকের ‘মীরজাফর’। তাঁদের রক্ত নিয়ে দেশে নতুন করে স্বাধীনতা আনার ডাক মালদার তৃণমূল সভাপতির। তিনি বলেন, “এ যুগেও বাংলায় মাতঙ্গিনী হাজরা জন্ম নিয়েছেন, তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে লড়াই করে প্রকৃত ও পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে হবে।” তিনি এদিন বিজেপি নেতা-কর্মীদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “মালদার কালিয়াচকের জালালপুরের বাসিন্দা এক যুবককে বাংলা ভাষায় কথা বলায় রাজস্থান থেকে জোর করে পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপে পড়ে এখন সরকার তাঁকে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে। তখন তাঁর বাবা, মা, পরিবার কেঁদেছিল। আমরাও বিজেপি নেতাদের পিছনে লাথি মেরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেব। তখন দেখব তাঁর পরিবার কাঁদে কেমন করে।” বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে খুনি এবং ইংরেজরূপী রাক্ষসের সঙ্গে তুলনা করেন তৃণমূলের এই জেলা সভাপতি। এমনকী মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার পরেও সাংবাদিকদের প্রশ্নেও নিজের মন্তব্যে অনড় আব্দুর রহিম বক্সী। তিনি আরও বলেন, “ভিন রাজ্যে বাংলায় কথা বলায় পরিযায়ী শ্রমিকরা পুলিশি অত্যাচারের মুখে পড়ছেন। বিজেপি শাসিত রাজ্যে তাঁদের ইচ্ছে করে ধরে ধরে জেলবন্দী করা হচ্ছে। বিজেপির নেতারা জেনে রাখুন— সুকান্ত মজুমদার, শমীক ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষরা জেনে রাখুন, আপনাদের পরিবারের লোকজনও ভিন্ রাজ্যে গিয়ে বাংলায় কথা বলে বিপদে পড়তে পারেন। তখন বিজেপির নেতার পরিবারের লোকজনরাও রেহাই পাবেন না। তখন কী করবেন আপনারা?” যদিও তৃণমূল সভাপতির এই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি বলেছেন, “তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। তৃণমূল ভয় পাচ্ছে। ২০২৬ শে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ভয়েই উনি প্রলাপ বকছেন। উনি বিজেপি নেতাদের রক্ত পরে ঝরাবেন। আগেও তো নিজের দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাক। মালদায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে একের পর এক নেতা-কর্মী খুন হচ্ছেন। সেগুলো আটকানোর ক্ষমতা নেই, উনি আবার বিজেপি নেতাদের রক্ত কী ঝরাবেন। ওনারা আগে নিজেদের ঘর সামলাক, মানুষের ভালো দেখতে হবে না। তার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টি আছে।”
৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতেও ব্রাত্য বঙ্গবন্ধু, তবে কি মুজিব মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথ আরও প্রশস্থ হল?

গত বছর আগস্ট মাসে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের ফলে পতন ঘটে হাসিনা সরকারের। এরপরে বাংলাদেশের সর্বত্র অরাজক পরিস্থিতি তৈরি। জনতার তীব্র রোষ থেকে বাদ পড়েননি বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানও। তাঁর মূর্তি ভাঙা থেকে শুরু করে ধানমুন্ডির বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করেন মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু তারপরেও কি আদৌ বদলেছে বাংলাদেশ? শেখ মুজিবের ৫০তম মৃত্যু বার্ষিকিতেও তো বদলাল না ছবিটা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। পরে তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই দিনটিকে জাতীয় ‘শোক দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেন। প্রতিবছর এই দিনে বঙ্গবন্ধুর বাসভবন এবং সমাধিস্থলে তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতেন সমর্থকরা। কিন্তু মহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের নেতৃত্ব নেওয়ার পর পরই বদলে যায় পরিস্থিতি। তিনি শেখ হাসিনা সহ তাঁর দল আওয়ামি লিগের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার বিচার না-হওয়া পর্যন্ত, আওয়ামি লিগের সমস্ত কাজকর্মের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন৷ সেই সঙ্গে, ১৫ আগস্টে ‘জাতীয় শোক’ দিবস পালনের রীতিও আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়ে যায় ইউনূসের শাসনকালে৷ এ বছর শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যু বার্ষিকিতেও তার অন্যথা হল না। এবারও প্রয়াণ দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পেলেন না অনুরাগীরা। শুক্রবার সারাদিন প্রয়াত রাষ্ট্রনায়কের বাসভবন থেকে শুরু করে তাঁর সমাধিস্থলে কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হল না৷ দুটি জায়গাই ঘিরে রাখল বাংলাদেশের পুলিশ। এদিন পুলিশের সঙ্গে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে শুরু করে এনসিপির কর্মী-সমর্থকরাও। বৃহস্পতিবার রাত থেকে তাঁর বাসভবন গণভবনের চারিদিক ঘেরাও করে রাখেন খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) এবং জামাত-ই-ইসলামের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। খালেদর সমর্থনে তাঁরা স্লোগানও দিতে থাকেন। শুক্রবার সকাল গড়িয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি৷ বাসভবনের পাশাপাশি সমাধিক্ষেত্রের ছবিটাও ছিল একইরকম। অতএব সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নব গঠিত রাজনৈতিক দল এনসিপির নেতা-কর্মীদের মুখে যে বারংবার মুজিব বিরোধিতার কথা শোনা যায়, তাকেই যেন বৈধতা দিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাহলে এই ঘটনা কি এটাই প্রমাণ করে, আগামীদিনে মুজিব মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথ আরও প্রশস্থ হল? তা ভবিষ্যতে নিঃসন্দেহেই আরও স্পষ্ট হবে।
পরিবারের দাবি মেনেই সিঙ্গুরের নার্সের মরদেহ কল্যাণী এইমসে স্থানান্তর

গত শুক্রবার সিঙ্গুরের একটি নার্সিংহোমে এক নার্সের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে রীতিমত উত্তপ্ত হয় পরিবেশ। পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ জানানো হয়, তাদের অনুমতি ছাড়াই পুলিশ দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। রাজ্যের হাসপাতালের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে মৃত নার্সের বাবা সুকুমার জানা বলেছিলেন, “আমি চাই ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আমার মেয়ের ময়নাতদন্ত হোক। আমরা চেয়েছিলাম কেন্দ্রীয় হাসপাতালে দেহটি পরীক্ষা হোক, কিন্তু পুলিশ আমাদের কিছু না জানিয়ে জোর করে দেহ নিয়ে গিয়েছে।” এরপরেই গোটা ঘটনা ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর। শুক্রবার দুপুরে মৃতদেহ মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছনোর পর পরই বিজেপি ও সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা সেখানে হাজির হয়। শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে বচসা ও হাতাহাতি। পুলিশের অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও তার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, সিপিএম ও বিজেপি লাশ দখলের রাজনীতি করছে বলেই অভিযোগ করেন। পাশাপাশি এই ঘটনার প্রকৃত সত্য অনুসন্ধানের জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানান। এই রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানান, “পরিবার যেখানে চাইবেন, দেহ সেখানে ময়নাতদন্ত করা হবে। তবে যেহেতু অস্বাভাবিক মৃত্যু, আদালতের অনুমতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” প্রয়োজনীয় অনুমতির পর অবশেষে পরিবারের দাবি মেনেই শনিবার ভোর ৭টা ২০ নাগাদ ওই নার্সের মরদেহ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে গ্রিন করিডোর করে কল্যাণী এইমসে (Kalyani AIIMS) স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে ময়নাতদন্তের পরই ওই নার্সের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলেই পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে কি বেরল কোনও সমাধানসূত্র?

টানা তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিসমাপ্তির লক্ষ্যেই আলাস্কায় বৈঠকে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে এই বৈঠক। বৈঠক শেষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন ট্রাম্প ও পুতিন। সেখানে পুতিন জানান এই বৈঠক ‘গঠনমূলক এবং ফলপ্রসূ’ হয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, এই বৈঠকে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পাশাপাশি তিনি আবারও বৈঠক বসার কথাও জানান। এমনকী মস্কোতে ওই বৈঠক করার জন্য নাকি ট্রাম্পকে প্রস্তাবও দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। সব মিলিয়ে এই বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিরতির কিছুটা হলেও ইঙ্গিত মিলেছে। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এই বৈঠক ঘিরে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছিলেন এই বৈঠকে তাঁর না থাকার সুযোগ নিয়ে পুতিন অনেক বেশি কৌশলী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কিন্তু এদিন বৈঠক শেষে পুতিন স্পষ্ট জানান, এ বার সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় যাওয়া সময় এসেছে। এরই সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পথ খোঁজার কথাও জানিয়েছেন পুতিন। তাঁর দাবি, যুদ্ধের মূল কারণগুলি নিরসন করতে হবে। এই কাজে এবং শান্তি প্রক্রিয়ায় ইউক্রেন এবং রাশিয়ার কেউই বাধা সৃষ্টি করবে না বলেও তাঁর আশা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন যে, পুতিনের সঙ্গে বৈঠক যদিও ফলপ্রসূ হয়, তাহলে দ্বিতীয় বৈঠক ডাকবেন তিনি। সেই মতো আলাস্কায় শুক্রবারের বৈঠক শেষেই দ্বিতীয় বৈঠকের সম্ভাব্য ভেন্যুও ঠিক হয়ে গেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রস্তাব মতো মস্কোতেই সম্ভবত বসতে চলেছে দ্বিতীয় বৈঠক। এমনকী এই বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা বললে, তাতে নাকি আপত্তি করেননি পুতিন। সব মিলিয়ে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনার পারদ যে গলতে শুরু করেছে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া গেল এই বৈঠকে।
বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপালের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রয়াত হলেন বাংলার এক সময়ের রাজ্যপাল লা গনেশন। সূত্রের খবর, গত ৮ অগাস্ট নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান গনেশন। একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। এমনকী সার্জারিও করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শুক্রবার সন্ধ্যায় চেন্নাইতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকজ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের এক্স-হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “একজন আদ্যোপান্ত জাতীয়বাদী হিসেবে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তামিলনাড়ু জুড়ে বিজেপির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। তামিল সংস্কৃতির প্রতিও ছিল তাঁর গভীর ভালবাসা।” তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুরে জন্ম লা গনেশনের। আরএসএস(RSS)-এর একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন, পরে যোগ দেন বিজেপিতে। পরবর্তীতে রাজ্যসভার সাংসদও হয়েছিলেন তিনি। ২০২১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মণিপুরের রাজ্যপাল ছিলেন তিনি। ওই সময় কালের মধ্যেই ২০২২ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল হন তিনি। দক্ষিণ ভারতে বিজেপির বিস্তারের পিছনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর।