‘ইন্দিরা গান্ধীর মতো অবস্থা হবে তাঁরও’— রাহুল গান্ধীকে প্রাণনাশের হুমকি

সম্প্রতি সংসদে নানা ইস্যুতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। যাঁর নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বয়ং রাহুল গান্ধী। এসআইআর নিয়েও গত সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করেন রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক দলগুলির সাংসদরা। এরই মধ্যে এবার প্রাণনাশের হুমকি পেলেন এই কংগ্রেস নেতা। ২০২২ সালে ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায় সাভারকর সম্পর্কে রাহুলের বক্তব্যের জন্যই বিজেপির দুই সাংসদ তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। তাঁরা নাকি বলেছেন রাহুলের অবস্থাও তাঁর ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীর মতো হবে। এর আগেও সাভারকর নিয়ে মন্তব্যের জেরে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে নাকিকের একটি আদালতে মানহানির মামলা করা হয়। যদিও এই মামলায় গত ২৪ জুলাই আদালত তাঁকে জামিন দেয়। এর মধ্যে আবারও সাভারকর নিয়ে মন্তব্যের জেরে প্রাণনাশের হুমকি পেলেন রাহুল। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই কংগ্রেস দলের তরফ থেকে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাহুল গান্ধীর আইনজীবী মিলিন্দ পাওয়ার। আদালত এই আবেদন গ্রহণ করেছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানি হবে বলে আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। রাহুল গান্ধীর আইনজীবী মিলিন্দ পাওয়ার আরও জানিয়েছেন, সংসদের বাদল অধিবেশনে ‘হিন্দুত্ব’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে রাহুল গান্ধীর বাদানুবাদ হয়। এই সময়ই বিজেপির দুই সাংসদ রাহুলকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনকী রাহুলকে বড় সন্ত্রাসবাদী বলেও আখ্যায়িত করেন। এমনকী এই দুই বিজেপি নেতা সাভারকর অনুরাগী বলেও জানিয়েছেন রাহুল গান্ধীর আইনজীবী। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধী যে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন সেই কারণেই তাঁর ক্ষতি করার চেষ্টা হচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কেননা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে গত ১৫ দিন ধরে সংসদের বাইরে এবং ভিতরে কোণঠাসা সরকার। সে কারণেই এ ধরনের হুমকি বলে অভিমত রাহুল গান্ধীর আইনজীবীর। যদিও পুরো বিষয়টিই এখন আদালতে বিচারাধীন।
বাংলায় এসআইআর হবেই! রাজ্যের আইনজীবীর কথায় বাড়ল জল্পনা

বিহারে এসআইআর-এর ফলে ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে ৫৬ লক্ষ ভোটারের নাম। তার পরেই বাংলায় এসআইআর হওয়া নিয়ে তৈরি হয় জল্পনা। আর তারই পাল্টা আক্রমণে বিজেপিকে নিশানা করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন। তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, নির্বাচন কমিশনকে হাতিয়ার করে নিজেদের ভোট-ব্যাংক বাড়াতে চাইছে মোদী সরকার। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলেন তিনি। বঙ্গ রাজনীতির এই টানাপোড়েনের ফলে দ্বিধায় পড়ে যান সাধারণ মানুষ। রাজ্যে এসআইআর হবে কিনা, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েন তারা। অবশেষে সেই জল্পনাতেই শীলমোহর দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিহারের পর বাংলাতেও হবে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এই মর্মে গত ৮ আগস্ট! রাজ্যকে চিঠি পাঠায় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে বিহারের এসআইআর নিয়ে শুনানি চলছে। সেখানে বুধবারের শুনানিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষের আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণ প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই কমিশন কীভাবে একক সিদ্ধান্তে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে? মামলার শুনানিতে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে তো এখনও এসআইআর শুরু হয়নি।” এরপর রাজ্যের আইনজীবী গোপাল শংকর নারায়ণ বলেন, “গত ৮ আগস্ট কমিশনের তরফে নোটিস পাঠানো হয়। রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই এসআইআর শুরু হতে পারে?” রাজ্যের আইনজীবীর আরও দাবি, “কমিশনে গণহারে বিহারে নাম বাদ দিয়েছে। ভোট দেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। কমিশন কীভাবে ছেলেখেলা করতে পারে?” এর পালটা বিচারপতি বাগচী বলেন, “এসআইআর প্রথমবার করা হচ্ছে। সে হিসাবে সমস্ত ভোটারকে বাদ দিতে পারে কমিশন। তবে কমিশন তা করেনি।” এরপর রাজ্যের আইনজীবী বাংলায় এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার আর্জি জানান। পশ্চিমবঙ্গেও যে এসআইআর হতে পারে তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা বাড়ছিল। এমনকী সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও ২০০২ সালের পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা আপলোড করা হয়েছে। বাংলায় বিএলও(BLO)-দেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেই ইস্যুতে খোদ সিইও বলেছিলেন, তাঁরা নিজেদের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে বাংলায় এসআইআর হচ্ছেই, এমনটা তিনি বলেননি। এমনকী এই বিষয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরও মুখ খুলতে চায়নি। তবে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণ-এর কথা সেই জল্পনাই যেন উস্কে দিল।
১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকায় মাত্র দু মাস আগে বানানো নদীবাঁধ ভেঙে বন্যার আশঙ্কা মালদার মানিকচকে

জলের স্রোতে ভেঙে গেল মাত্র দুমাস আগে তৈরি করা বাঁধ। মাস দুয়েক আগে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দে তৈরি হয়েছিল এই বাঁধ। সেই বাঁধ ভেঙে গেল ফুলহরের প্রবল জলের তোড়ে। বাঁধ ভেঙে হু হু করে সংরক্ষিত এলাকায় জল ঢোকার ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়াল মালদার মানিকচক ব্লকের ভূতনীর দক্ষিণ চন্ডীপুর এলাকায়। এর ফলে আতঙ্কে প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ। টানা বৃষ্টির জেরে ফুলহর নদীর জলস্তর বাড়ছিল। তবে বুধবার জলের চাপ সহ্য করতে না পেরে ভেঙে যায় নদীবাঁধ। ফলে আবারও বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিল ভূতনী এলাকায়। গত বছরের মতো এবারও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে গ্রামবাসীরা। সেচ দফতর থেকে প্রশাসন জনপ্রতিনিধি সকলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীরা। বৃষ্টির মধ্যেই পুলিশ-প্রশাসন ও সেচ দফতরের আধিকারিকদের সামনে দেখানো হয় বিক্ষোভ। তাদের অভিযোগ, মাত্র তিন মাস আগে তৈরি হওয়া নদীবাঁধ কীভাবে ভেঙে যেতে পারে। বাঁধের জন্য বরাদ্দ টাকার বেশিরভাগটাই নয়ছয়ের অভিযোগ তুলেছেন তারা। উল্লেখ্য, গত বছর ভূতনীর দক্ষিণ চন্ডীপুরে বাঁধ কেটে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। দু’দফার বন্যায় প্রায় মাস দুয়েক গোটা ভূতনী এলাকা প্লাবিত হয়ে থাকে। এরপর শুখা মরশুমে মালদা জেলা সেচ দফতরের পক্ষ থেকে ভূতনীর দক্ষিণ চন্ডীপুরের কাটাবাঁধের জায়গায় ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দে নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দিন কয়েক আগেই সেই বাঁধ চুঁইয়ে বাঁধের নিচ দিয়ে একটু একটু করে ভূতনীর সংরক্ষিত এলাকার দিকে ফুলহরের জল ঢোকার দৃশ্য নজরে আসে গ্রামবাসীদের। যদিও সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে বালির বস্তা ফেলে সেই জল আটকানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফুলহরের প্রবল জলের স্রোতে ভূতনীর দক্ষিণ চন্ডীপুরের নব নির্মিত বাঁধ ভেঙে গেল। ফলে ফুলহরের জল প্রবল গতিতে হু হু করে ভূতনীর সংরক্ষিত এলাকার দিকে ঢুকতে শুরু করেছে। এই জল দক্ষিণ চন্ডীপুরের বিভিন্ন নিচু এলাকা হয়ে আগামীতে ভূতনীর উত্তর চন্ডীপুর এবং হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ভাসিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা করছে গ্রামবাসীরা। স্বভাবতই এবছর ফের নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হল ভূতনীতে।
ভূতেরাও ভোট দিচ্ছে! ভোটার তালিকা হাতে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্য

ভূতেরাও দিচ্ছে ভোট! ভোটার তালিকা হাতে পেতেই বুধবার মালদার গাজল বিধানসভা কেন্দ্রের সালাইডাঙ্গা অঞ্চলের ৯৮ নম্বর বুথের সিংহ পাড়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। সেখানে ভোটার তালিকায় জ্বলজ্বল করছে মৃত ব্যক্তিদের নাম। শুধুমাত্র একটি বুথেই ২৫ জন মৃত ভোটারের হদিস মিলল মালদায়। তাদের কেউ চার বছর, কবছবার৫-৬ বছর কিংবা তারও বেশি আগে মারা গিয়েছে। তাও ভোটার তালিকা থেকে কাটা হয়নি তাদের নাম। শুধু কী তাই, সেইসব ভূতুড়ে ভোটারদের হয়ে ভোট পড়ছে বলেও অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এই ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় মালদায়। ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তিদের জীবিত রাখা হয়েছে দেখে রীতিমত অবাক হয়ে যান মৃতদের পরিবারও। এই মৃত ভোটারদেরকেই ভোটবাক্সে কাজে লাগানো হয় বলে শুধু মৃতের পরিবারই নয়, অভিযোগ তুলছেন অন্যান্য গ্রামবাসীরাও। ওই এলাকারই বাসিন্দা শ্যামল মুর্মু জানান, তাঁর কাকা সুশান্ত মুর্মু মারা গিয়েছেন ৮ বছর আগে। তাও ভোটার তালিকা থেকে এখনও কাটা হয়নি তাঁর নাম। কী কারণে এতদিন ভোটার তালিকায় তাঁর কাকার নামকে জীবিত রাখা হয়েছে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন শ্যামল বাবু। অন্যদিকে আর এক গ্রামবাসী আনন্দ মাহাতোর বাবা মারা যান চার বছর আগে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এখনও ভোটার তালিকায় রয়ে গেছে তাঁর নাম। গ্রামবাসীরা অবলম্বে এই সমস্ত মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতরও। উত্তর মালদার বিজেপি নেতা মনোতোষ মণ্ডলের দাবি, “এই ভাবেই মৃত ভোটারদের জীবিত রেখে ভোট চুরি করে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় টিঁকে আছে। মৃত ভোটারদেরকে ভোটার লিস্টে জীবিত রেখেই তারা ভোট করাচ্ছে। এই কারণেই তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে না পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর(SIR) হোক। কেননা এসআইআর হলে তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাবে। এ তো শুধুমাত্র একটা বুথের ঘটনা। এ রকম সব বুথেই মৃত ভোটারদের জীবিত করে রেখে ভোটবাক্স ভরায় তৃণমূল।” বিজেপির এই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। তৃণমূল পরিচালিত গাজল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন জানান, “এই এলাকায় পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা, লোকসভা সবই তো বিজেপির। তাহলে তারা কেন এই ভোটার তালিকা সংশোধন করলেন না। যদি সত্যিই মৃত ভোটার লিস্টে থেকে থাকে, তাহলে কেন তাদের নাম কাটা গেল না। নির্বাচন কমিশন তো কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না কেন।” পাশাপাশি তিনি এও জানান, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে। মৃত ভোটার থাকলে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে তদন্ত করে দেখা হবে।
সীমান্তে পাক সেনার অনুপ্রবেশ, পাক সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি— এরপরও চুপ থাকবে দিল্লি?

‘অপারেশন সিঁদুর’-এও শিক্ষা হয়নি পাকিস্তানের। আবারও কাশ্মীর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালালো পাক সেনা। গত ১৩ আগস্ট সকালে জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুলায় উরি সেক্টর দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করে তারা। যদিও এর পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েনি ভারতীয় জওয়ানরা। জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানের সেনার ব্যাট টিমকে ব্যবহার করে জঙ্গিরা ভারতের ফরোয়ার্ড পোস্টে হানা দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপরই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে ভারতীয় জওয়ানরা। শুরু হয় গুলির লড়াই। সংঘর্ষ শুরু হতেই অনুপ্রবেশকারীরা গা-ঢাকা দেয়। পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিমের সঙ্গে জঙ্গিদেরও থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। উরি থানার আওতাধীন ১৬ শিখ এলআই-এর এরিয়া অফ রেসপন্সিবিলিটি(AOR)-এ এই হামলা হয়। সে সময় শহিদ হন এক সেনা জওয়ান। গত মঙ্গলবারই ইসলামাবাদে পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের লড়াইয়ের ভূয়শী প্রশংসা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এর আগে আমেরিকায় দাঁড়িয়ে ভারতকে যোগ্য জবাব দেওয়ার কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান আসিফ মুনির। এবার ভারতের সিন্ধু জলচুক্তি বাতিলের বিরোধিতা করে কার্যত যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সিন্ধুর জল আটকালে সরাসরি যুদ্ধের বার্তা দিলেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মদতে ইসলামাবাদের এই আচরণ যে খুব ভালো ভাবে নিচ্ছে না ভারত সরকার তা স্পষ্ট। এই আবহে জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে ‘অপারেশন অখাল’ চলছে। তবে ইসলামাবাদের তরফে এই ধরনের বিবৃতি সামনে আসার পর ভারত সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এখন সেটাই দেখার। সব মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যেই উত্তেজনার পারদ যে ক্রমশ চড়ছে তা স্পষ্ট।
পাকিস্তানের গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেফতার DRDO গেস্ট হাউসের ম্যানেজার

আবারও রাজস্থানের সিআইডি গোয়েন্দা সংস্থা গ্রেফতার পাকিস্তানী গুপ্তচর। মঙ্গলবার জয়সলমীরের চন্দন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জের কাছে অবস্থিত ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (DRDO) গেস্ট হাউস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই গেস্ট হাউসেরই চুক্তিভিত্তিক ম্যানেজার ছিল মহেন্দ্র প্রসাদ নামে বছর ৩২-এর ওই যুবক। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মহেন্দ্র প্রসাদ সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ভারত সম্পর্কে গোপনীয় তথ্য পাচার করত বলেই অভিযোগ। তার বাড়ি উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ার পালিয়ুঁতে। উল্লেখ্য, গত জুনেও পাক গুপ্তচর সন্দেহে বিশাল যাদব নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল রাজস্থান সিআইডি। দিল্লিতে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলেন তাকে। তার বিরুদ্ধেও পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর হয়ে কাজ করার অভিযোগ ছিল। এমনকী অপারেশন সিঁদুরের সময়েও সে পাকিস্তানে তথ্য পাচার করেছিল। রাজস্থানের সিআইডি-র সূত্রে জানানো হয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই ওই ম্যানেজারের গতিবিধির উপর নজর রাখছিল তারা। সিআইডি-র কাছে খবর ছিল, ভারতে আবারও নাশকতার ছক কষছে জঙ্গিরা। সে বিষয়ে নজরদারির সময়ই মহেন্দ্রর গতিবিধি সন্দেহজনক ঠেকে পুলিশের কাছে। তখনই ট্র্যাক করা শুরু হয় তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট। সেখান থেকে সিআইডি জানতে পারে পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে ওই ব্যক্তি। রাজস্থান পুলিশের সিআইডি-র আইজি বিষ্ণুকান্ত জানান, “স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের আগে সর্বত্র কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। রাজস্থান সিআইডি ইন্টেলিজেন্স দেশবিরোধী এবং নাশকতামূলক কার্যকলাপ নিয়ে সতর্ক গোয়েন্দারাও। তা রুখতে চারিদিকে চলছে কড়া নজরদারি। সেই সময়েই, ডিআরডিও গেস্ট হাউসের ওই চুক্তিভিত্তিক কর্মী মহেন্দ্র প্রসাদের সম্পর্কে সন্দেহজনক তথ্য মেলে। তদন্তের পরই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।” মহেন্দ্রর বিরুদ্ধে DRDO-র বিজ্ঞানী ও সেনাবাহিনীর কর্তারা কখন কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে কী কথা বলছেন সেই সব তথ্য পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের জানিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিক জেরায় মহেন্দ্রর থেকে আরও অনেক তথ্যই জানতে পেরেছেন রাজস্থান সিআইডি-র অফিসাররা।
‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক স্ট্যালিনের রাজ্যেই এবার বাংলার শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা

ভিন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। রাজ্যের শাসক দল এই ইস্যুতে বিজেপির বাংলা বিরোধিতাকে হাতিয়ার করে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ইস্যুতে রাস্তায় নেমে ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু এবার বাংলার পরিযায়ী শ্রমিককে খুন করার অভিযোগ উঠল ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্যতম শরিক স্ট্যালিনের রাজ্যে। মুর্শিদাবাদের সাদ্দাম হোসেন নামে এক পরিযায়ী শ্রমিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। তার পরিবারের অভিযোগ, সাদ্দামকে খুন করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার স্বরূপনগরের বাসিন্দা বছর চব্বিশের সাদ্দাম মাস তিনেক আগে তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে যান। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। মঙ্গলবার সমাজ মাধ্যমে তাঁর ঝুলন্ত দেহের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে তার পরিবার। তার পরিবার সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, সোমবার সন্ধেবেলাও মা ও স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সাদ্দাম। রাতে তাঁর স্ত্রী একাধিকবার ফোন করলেও সাদ্দাম ফোন ধরেনি। মঙ্গলবার ওই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পায় তার পরিবার। সাদ্দামের মা জানান, “ছেলে সোমবার সন্ধেবেলা আমায় ফোন করে বলল, মা আমি আজ টাকা পেয়েছি। কিন্তু, ব্যাঙ্কে টাকা পাঠাতে পারছি না। আমায় আধার কার্ডের ডেরক্স পাঠিয়ে দাও। তারপর আর কথা হয়নি।” অন্যদিকে সাদ্দামের স্ত্রীর দাবি, “সোমবার রাতে আমি কয়েকবার ফোন করার চেষ্টা করেছিলাম। একবার ফোন ধরেও কেটে দেয়। আর ফোন ধরেনি। আমরা তখন ঘুমিয়ে পড়ি।” মঙ্গলবার ঠিকাদার ফোন করে সাদ্দামের মৃত্যুর খবর জানায়। সাদ্দামের ঝুলন্ত দেহের ছবিও পাঠায়। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সাদ্দামের পা মাটিতে লেগে রয়েছে। আর সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে তার পরিবার এবং প্রতিবেশীরা। আত্মহত্যার তত্ত্বকে নস্যাৎ করে তাদের দাবি, সাদ্দাম খুন করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর পুলিশ ইতিমধ্যেই বডি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই সবটা পরিষ্কার হবে। অন্যদিকে সাদ্দামের পরিবার তার দেহকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের কাছে কাতর আবেদন জানিয়েছে।