রাজ্যে প্লাবিত অঞ্চল পারিদর্শনে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী

অতিবৃষ্টি তো আছেই, তার উপর আবার মরার উপর খাড়ার ঘা বাংলাকে না জানিয়ে ডিভিসির ছাড়া জল। আর এই জোড়া ফলায় প্লাবিত বাংলা। একাধিক নিম্ন অংশ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশেষ করে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, চন্দ্রকোণা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবন পরিস্থিতি হুগলির আরামবাগেও। আর মানুষের পাশে দাঁড়াতে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, আগামী ৫ আগস্ট ঘাটাল যাওয়ার সম্ভাবনা তাঁর। তার আগে হুগলির আরামবাগেও যেতে পারেন। ঘাটালের প্লাবন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ওইদিন চলে যেতে পারেন ঝাড়গ্রামে। পরেরদিন অর্থাৎ ৬ আগস্ট সেখানে ‘ভাষা আন্দোলনে’ শামিল হবেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়গ্রামে তাঁর নেতৃত্বে হবে ভাষা মিছিল। এদিকে, ফি বছর বর্ষাকালের মতো এবারও ডিভিসির তরফে প্রশাসনকে না জানিয়ে বাঁধের উপর থেকে চাপ কমাতে জল ছাড়ার পালা চলছে। তাতে ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, আরামবাগের মতো জায়গার জলযন্ত্রণা আরও বেড়েছে। কোথাও কোথাও শহরাঞ্চলও প্লাবিত। সেই পরিস্থিতিই সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ঘাটাল যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৫ আগস্ট, মঙ্গলবার তার আগে তিনি যেতে পারেন হুগলির আরামবাগে। সেখানেও প্লাবন পরিস্থিতি। এরপর আরামবাগ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল যাওয়ার কথা শোনা গিয়েছে।
‘মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেই চলছে বেআইনি কাজ’—দেবাশীষ ভট্টাচার্য

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযের বাড়ি সামনেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে ট্রাম লাইনে পিচ ফেলার কাজ। শুক্রবার কলকাতা পুরসভার সামনে এই মর্মে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, হাই কোর্টের পরিষ্কার নির্দেশ ছিল যে শহরে কোথাও কোনও জায়গায় ট্রাম লাইনে পিচ ফেলা যাবে না। তার পরেও আদালত অবমাননা করা হচ্ছে খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে থাকা ট্রাম লাইনের উপরে। আবার এই পিচ ফেলার দায় না নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা, না কলকাতা পুলিশ। পুরসভার তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে তারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না। অন্যদিকে পুলিশের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তারাও বলতে পারছে না যে কোন সংস্থা এবং কার নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির সামনে ট্রাম লাইনে পিচ ফেলা হল। অথচ রাস্তার কাজ কলকাতা পুরসভার সড়ক বিভাগ ছাড়া কেউ করতে পারে না। যেকোনও রাস্তার কাজের বরাত তারাই দিয়ে থাকে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি সামনেই আইনের তোয়াক্কা না করেই চলছে এই বেআইনি কাজ— বলে অভিযোগ করলেন ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই যাতে কলকাতার রাস্তায় আর ট্রাম না চলে, তার জন্যই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু ট্রামের মতো কলকাতার ঐতিহ্যবাহী একটা গণ-পরিবহনকে ধ্বংব করে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে। এর ফলে কলকাতা শহরের বয়স্ক মানুষজন সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়বে। তারা বাধ্য হবে অটো-রিক্সাতে উঠতে। আর যাদের টাকা আছে তারা ট্যাক্সি বা ওলা-উবের ধরবে। সেই দিকেই নিয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “একই ঘটনা চিতপুরেও ঘটেছে। সেখানেও ট্রাম লাইনের উপরে পিচ ফেলা হয়েছে। তার জন্য চিৎপুর থানায় অভিযোগ জানালে প্রথম টালবাহানা করার পর এফআইআর না নিয়ে শুধু অভিযোগ জমা নেওয়া হয়েছে।” ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ আসলে ট্রাম ডিপো জমি মাফিয়াদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে। অথচ প্রবীণ নাগরিক থেকে শিশু-মহিলাদের জন্য ট্রামের চেয়ে সস্তা এবং আরামদায়ক যাত্রা আরও কোনও কিছুতে পাওয়া যায় না। তার পরেও ট্রাম তুলে দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন, যেমন– অটো, উবের এবং ওলাদের মত বড় সংস্থাগুলিকে ইনকামের জায়গায় করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ ঐতিহ্যবাহী ট্রামকে তুলে দেওয়ার সমস্ত চক্রান্ত চলছে বলে জানান সংগঠনের সদস্যরা। এদিন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে এসে কলকাতা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ অবস্থান করেন ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন।
টাকি রোডের উপর লরিতে আগুন

উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে খোলাপোতায় টাকি রোডের উপর লরিতে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন, এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় গোটা এলাকায়। বসিরহাটের খোলাপোতা এলাকায় টাকি রোডের পাশে এক গ্যারেজে লরি মেরামতির সময় হঠাৎই আগুন লাগে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্যারেজে লরির ঝালাইয়ের কাজ চলছিল। সেই সময় আচমকাই স্পার্ক থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লরিতে। মুহূর্তের মধ্যেই কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। আতঙ্কে দৌড়োদৌড়ি করে লোকজন। সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। প্রথমে স্থানীয়রা জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। পরে দেওয়া হয় দমকলে। আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে, প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও আগুন লাগার ফলে লরিটি সম্পূর্ণ ভাবে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। হঠাৎ করে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কোলে মার্কেটে টাস্ক ফোর্স অভিযান

একাধিক জেলা জুড়ে লাগাতার বৃষ্টি এবং বন্যার ফলে শাকসবজির ব্যাপক হারে ক্ষতি হয়েছে, এর ফলে মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে। এমনটাই দাবি কলকাতার সবথেকে বড় পাইকারি বাজার কোলে মার্কেটের সবজি বিক্রেতাদের। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শহরজুড়ে খুচরো ও পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রনে টাস্ক ফোর্সের অভিযান লাগাতার চলছে। শুক্রবার এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ, কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশ সহ একাধিক বিভাগকে নিয়ে কোলে মার্কেটে অভিযান চালায়। কমল দে এবং রবীন্দ্রনাথ কোলের নেতৃত্বে কোলে মার্কেটে অভিযান চালিয়ে পাইকারি ও সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। বাজার ঘুরে ঘুরে শাকসবজি, থেকে নিয়ে আলু- পিঁয়াজ, আদা -রসুনের পাশাপাশি বাজারের পাইকারি ও খুচরা মূল্য নিয়ে নজরদারি চালানোর হয়। গোটা বাজার পরিদর্শন করার পর টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, “তুলনামূলক হত সপ্তাহে থেকে এই সপ্তাহে বাজারের মূল্য অনেক টা কম, তবে বাজারের যোগান কম থাকায় বাজারে শাক-সবজির মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে।” একই ভাবে টাস্ক ফোর্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে দাবি যে তাদের লাগাতার নজরদারির ফলে বাজারে মূল্যবৃদ্ধি অনেকটা রোধ এবং নিয়ন্ত্রণ করার সম্ভব হয়েছে। এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক গত সপ্তাহে বাজার মূল্যের সঙ্গে বর্তমানের শাকসবজির দাম: গত সপ্তাহ আলু পাইকারি দাম প্রতি কিলো ছিল ১৫ টাকা বর্তমানে সেটা রয়েছে ১৩ টাকা। পিঁয়াজের দাম গত সপ্তাহে ছিল ২০ টাকা, এখন ১৮ টাকা। একই ভাবে যদি সবজির দামের উপরে নজর রাখলে দেখা যাচ্ছে যে গতসপ্তাহে পটলের দাম ছিল ২২০ টাকা পলরা এখন ২০০ টাকা। বেগুন ছিল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, এখন ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পাইকারী বিক্রি। চিচিঙ্গে ছিল ৩০০ থেকে ৩২০ এখন বর্তমানে মূল্য ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। ভিন্দী ছিল ২২০ থেকে ২৫০ এখন ২০০ থেকে ২২০ প্রতি ৫ কেজি। করোলা ছিল ২৩০ থেকে ২৪০ এখন ২০০ থেকে ২২০। লাউ ছিল ৩০ থেকে ৪০ এখন রয়েছে একই দাম ৩০ থেকে ৪০ প্রতি পিস। একই ভাবে রসুন ছিল ৪৫০ এখন ৪০০। আদা ছিল ৫৫০ থেকে এখন ৫০০। ফলে একটা তুলনামূলক ভাবে গত সপ্তাহের বাজার দর অনুযায়ী এই সপ্তাহে বাজারের মূল্য তুলনামূলক কম হলেও। তার প্রতিফলন খোজরা বাজারে কেন দেখা যাচ্ছে না। সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। তবে ব্যবসায়ী দের এক অংশের দাবি কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা রয়েছেন যারা শাকসবজির দাম বৃদ্ধি করে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠছে।
ম্যাট্রিমনি সাইটে আলাপ হওয়া যুবককে হোটেলে ডেকে প্রতারণা, গ্রেপ্তার এক তরুণী ও তার বাংলাদেশি সঙ্গী

ম্যাট্রিমোনি সাইটে নিজের ছবি আপলোড করাই কাল হলো এক যুবকের। ম্যাট্রিমনি সাইটে নিজের ছবি আপলোড করার পর সেখান থেকেই আলাপ হয় এক তরুণীর সঙ্গে। চলতে থাকে কথাবার্তা। এরপর দুজনেই মুখোমুখি দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। এয়ারপোর্ট আড়াই নম্বর গেট এলাকার একটি হোটেলে দেখা করার পরিকল্পনা ও করে ফেলে দু’জনে। আর ওই হোটেলে গিয়েই হয় বিপত্তি। শেষপর্যন্ত সর্বস্ব খুইয়ে পুলিশের দ্বারস্থ যুবক। তদন্তে নেমে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ওই তরুণী এবং তার সঙ্গী বাংলাদেশি যুবককে। গ্রেপ্তার করেছে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ। গত ২৭ জুলাই এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবক। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। যুবকের দাবি, সম্প্রতি তিনি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। ছবি ম্যাট্রিমনি সাইটে আপলোড করেন। সেই সূত্র ধরে তরুণীর সঙ্গে আলাপ ও ঘনিষ্ঠতা। এয়ারপোর্ট আড়াই নম্বর গেট লাগোয়া হোটেলে যুবকের সঙ্গে তরুণী দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। যুবককে শৌচালয়ে যেতে বলেন। সেই ফাঁকে কফি বানাতে শুরু করে তরুণী। অভিযোগ, ওই কফি খাওয়ার পর থেকে তিনি অসুস্থবোধ করেন। অচৈতন্য হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর আর কিছু মনে নেই।কয়েকঘণ্টা পর ঘুম ভাঙে যুবকের। দেখেন তাঁর সঙ্গে থাকা মোবাইল, টাকা, ব্যাগ কিছুই নেই। তরুণীও উধাও। এরপর হোটেল কর্তৃপক্ষের সাহায্যে এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন যুবক। তদন্তে নেমে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। যুবকের থেকে ফোন নম্বর নিয়ে তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন পুলিশ আধিকারিকরা। নিজেদের পাত্র হিসাবে পরিচয় দেন তাঁরা। এরপর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে তরুণীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে জেরা করে আরেক যুবকের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। দমদম ক্যান্টনমেন্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তদন্ত করে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবক বাংলাদেশি। তার কাছ থেকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট, ভিসা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তরুণীর দাবি, লুটের জিনিসপত্র তরুণী ওই বাংলাদেশি যুবকের হাতে তুলে দিত। তারপর যুবক সেগুলি নিয়ে বাংলাদেশি চলে যেত। এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও কারও যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
ডোমকলে জলমগ্ন রাস্তায় মাছ ছেড়ে প্রতিবাদ! প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণে অভিনব কৌশল

মুর্শিদাবাদের ডোমকলে বেহাল রাস্তায় দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা জল, আর তার মাঝেই মাছ ছেড়ে অভিনব প্রতিবাদে সরব হলেন রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দারা। ঘটনাটি ঘটেছে ডোমকল ব্লকের সারাংপুর অঞ্চলের শ্যামপুর থেকে নাজিরপুর মোড় পর্যন্ত রাস্তায়। পাকা রাস্তায় হাঁটুসমান জল, বড় বড় গর্ত—এ যেন রাস্তায় নয়, তৈরি হয়েছে একপ্রকার জলাশয়! সেই জলেই এদিন স্থানীয়রা প্রতীকীভাবে ছেড়ে দেন মাছ। তাঁদের বক্তব্য, “যেখানে রাস্তায় চিরকাল জল জমে থাকে, সেখানে তো মাছ চাষই ভালো! প্রশাসন যদি নজর না দেয়, তাহলে বাধ্য হয়েই এর থেকে বড় আন্দোলনে যাব আমরা।” স্থানীয়দের দাবি, বহুবার প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি। প্রতিদিন এই রাস্তাটি দিয়ে স্কুলপড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ—সবাই যাতায়াত করেন। কিন্তু বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। এই অভিনব প্রতিবাদের ছবি-ভিডিও ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পথচলতি মানুষ থেকে শুরু করে সাধারণ নেটিজেনরাও এই প্রতিবাদকে সমর্থন জানাচ্ছেন।
স্মার্ট ক্লাস নিয়ে সম্মুখ সমরে সাংসদ বনাম বিধায়ক

এবার নিজের দলের বিধায়ককে সরাসরি চ্যালেঞ্জ সাংসদের। হুগলি জেলায় প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূল সাংসদ ও তৃণমূল বিধায়কের দ্বন্দ্ব। ইস্যু— সাংসদ কোটার টাকায় স্কুলের স্মার্ট ক্লাস। আর তা নিয়ে সরাসরি বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় ও চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। নিজের সাংসদ তহবিলের টাকায় চুঁচুড়ার বাণীমন্দির স্কুলে স্মার্ট ক্লাস করে দিচ্ছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কাজ দেখার জন্য বৃহস্পতিবার স্কুল পরিদর্শনে যান তিনি। আর সাংসদকে কাছে পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই প্রধান শিক্ষিকা জানান, স্মার্ট ক্লাস তৈরি নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের তিরস্কারের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। রীতিমতো চোটপাট করছেন স্থানীয় বিধায়ক। এমনকী গার্লস স্কুলে ক্লাস চলাকালীন বিধায়কের কাছে শুনতে হয়েছে কুকথাও। তৃণমূল বিধায়ক অবিলম্বে কাজ বন্ধের নির্দেশ তো দেনই। সেই সঙ্গে, কে কাজ করতে বলেছে? কার অনুমতি নিয়ে কাজ হচ্ছে? এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি তা জানলেন না কেন? এমন প্রশ্ন তুলে কুকথা শোনাতেও ছাড়েননি তিনি। প্রধান শিক্ষিকার অভিযোগ শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান রচনা। এরপরই নিজের দলের বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাম না করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে হুগলী সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কার কত দম আছে দেখি, আমাকে আটকে দেখাক।” তিনি আরো বলেন, “আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছি, কিছু বলার ভাষা নেই। এমপি ল্যাডে সাংসদ কোথায় কি ধরনের কাজ করবে সেটা সম্পূর্ণ তার নিজস্ব ইচ্ছা। তা নিয়ে কারোর কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না। মনে রাখতে হবে, স্কুলের বাচ্চারা আমাদের আদরের। শিক্ষিকারা আমাদের কাছে পূজনীয় এবং শ্রদ্ধেয়। তাদের সামনে এসে চিৎকার চেঁচামেচি করে, প্রধান শিক্ষিকাকে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ করা গ্রহণযোগ্য নয়। আমি স্কুলগুলোতে আরো স্মার্ট ক্লাস করব, পারলে আটকে দেখিয়ে দিক।” যদিও এই প্রথম নয়— এর আগেও একাধিকবার চুঁচুড়ার এই বিধায়ক অসিত মজুমদারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এমনকী তার নানান কীর্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়, যা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তৃণমূল কংগ্রেস এবং ওই বিধায়ককে। সেই প্রসঙ্গ তুলে সাংসদ বলেন,”দল কিছুটা হলেও উনার সম্পর্কে জানেন। ওঁর আচার-আচরণ গতিবিধি নিয়ে আগেও অভিযোগ এসেছে, প্রচুর ভাইরালও হয়েছে। ওনাকে নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই যাকে জানানোর তাঁকে ঠিক জানাব।” তবে পাল্টা অসিত মজুমদার জানিয়েছেন, “এটা ওঁর মনোভাব, উনি বলেছেন। আমি এ ব্যাপারে কিছু বলব না। সাংসদের কথার ওপরে কোনও কথা বলব না। আমি দলকে যা জানানোর জানাব। আর আমি ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, তাই প্রধান শিক্ষিকার যদি কোনও অভিযোগ থাকে সেটা ওনার সঙ্গে কথা বলে নেব।”
তৃণমূলের প্রস্তাব মেনে নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাওয়ের সিদ্ধান্ত ইন্ডিয়া জোটের সাংসদদের

এসআইআর নিয়ে রীতিমতো সরগরম লোকসভা ও রাজ্যসভার বাদল অধিবেশন। প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে সংসদের ঘরে-বাইরে এই এসআইআর-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা। আর এই স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিশন নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাওয়ের সিদ্ধান্ত নিল ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলগুলো। রাজনৈতিক মহলের মতে কার্যত তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখিয়ে দেওয়া পথেই এই এসআইআর-এর বিরুদ্ধে নিজেদের আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করছে কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া জোটের বড় শরিক দলগুলো। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এসআইআর প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া জোট, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করবে। সূত্রের খবর লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতে ইন্ডিয়া জোটের সংসদীয় দলের নেতাদের বৈঠকে এই নির্বাচন কমিশনের ঘেরাওয়ের প্রস্তাব প্রথম তৃণমূলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। আর তাতেই মান্যতা দেয় রাহুল গান্ধী সহ শরদ পাওয়ার, এমকে স্টালিন সহ ইন্ডিয়া জোটের বাকি শরিকরা। সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই মোতাবেক আগামী বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ৭ আগস্ট নির্বাচন কমিশন দফতর ঘেরাও করবে ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। প্রসঙ্গত, কলকাতায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বাংলায় এসআইআর-এ বৈধ ভোটারদের নাম বাদ গেলে নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করা হবে। সেই মোতাবেক বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাব পেশ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতারা। এই কর্মসূচিতে কী পোস্টার হবে তাও কার্যত ঠিক হয়ে গিয়েছে বলেই খবর। বৃহস্পতিবার তৃণমূল সাংসদদের হাতে ‘ভোট চোরি বন্ধ করো’ লেখা পোস্টারও দেখা গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, একই ধাঁচে লেখা পোস্টারই নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও অভিযানে ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি সংসদের ভিতরে ও বাইরে এসআইআর নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচী যেমন চলছে তা চলবে।
বিধানসভা ভোটের আগে পাহাড় রাজনীতিতে কি নতুন সমীকরণ?

পাহাড় রাজনীতির দুই অতি পরিচিত মুখ বিমল গুরুং ও রোশন গিরি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এই দুই নেতা। পাহাড় ও ডুয়ার্সের ভোট রাজনীতিতে বিমল গুরুং এখনও যথেষ্ট বড় ফ্যাক্টর। তাই ২০২৬ বিধানসভার আগে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে এই বৈঠককে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে বিজেপির সঙ্গে গুরুংয়ের সম্পর্ক নতুন নয়। ২০০৭ সাল থেকে পাহাড়ে বিজেপির উত্থানের পেছনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল গুরুংয়ের। বিশেষ করে দার্জিলিং লোকসভা আসনে বিজেপির একাধিকবার জয়ের পিছনেও যে গুরুং বড় ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করেছিল, তা সর্বজনবিধিত। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ২০১৭ সালে পাহাড়ে অশান্তির সময় গুরুংকে একাধিক মামলায় ফাঁসানো হয়। সে সময় একপ্রকার অন্তর্ধানেই ছিলেন তিনি। দীর্ঘ সময় আত্মগোপন করে থাকার পর ২০২০ সালে কলকাতায় এসে তৃণমূলকে প্রকাশ্যেই সমর্থনের বার্তা দেন তিনি। এমনকি ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট এবং পরবর্তীতে দার্জিলিং পুরনির্বাচনে তাঁর দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়েই নির্বাচন লড়ে। কিন্তু ভোটের ফল আশানুরূপ হয়নি। এরপর ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে আবারও বিজেপিকে সমর্থন জানায় বিমল গুরুংয়ের দল। সে সময় শুভেন্দু অধিকারীর সভায় এসে বিজেপিকে সমর্থনের কথা জানিয়েও ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সর্বময় নেতা। কিন্তু পাহাড়ে লোকসভা ভোটের ফলে তার তেমন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। তবে ফের আরও একটা বিধানসভা নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিমল গুরুং এবং রোশন গিরির এই বৈঠক নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা দানা বাঁধছে। যদিও এই বৈঠক শেষে কোনও পক্ষ থেকেই সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু এটা যে নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাত নয়, তা রাজনৈতিক মহলে স্পষ্ট। তবে কি ২০২৬-এর বিধানসভাকে মাথায় রেখে পাহাড় রাজনীতির নতুন কোনও সমীকরণ তৈরিতেই এদিনের বৈঠক—এই প্রশ্নের উত্তর তো ভবিষ্যতই বলবে। আপাতত গুরুংয়ের নেতৃত্বে পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা যে তাদের হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া তা স্পষ্ট।
মাসের শুরুতেই দাম কমল রান্নার গ্যাসের

মাসের শুরুতেই মিলল সুখবর। দাম কমল রান্নার গ্যাসের। প্রতি মাসেরই শুরুতে বিশ্ব বাজারে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের দামের পর্যালোচনা করে অয়েল মার্কেটিং সংস্থাগুলি এবং সেই অনুযায়ী এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমায় বা বাড়ায়। গত জুলাই মাসের পর এবার অগস্ট মাসেও রান্নার গ্যাসের দাম কমানো হল। অয়েল মার্কেটিং সংস্থার তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, ১৯ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৩৩টাকা ৫০ পয়সা কমানো হচ্ছে। তবে ১৪.২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দামের কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। ১৯ কেজির বাণিজ্যিক সিলিন্ডার সাধারণত হোটেল, রেস্তোরাঁগুলোতেই ব্যবহার হয়। গৃহস্থ বাড়িতে ব্যবহার হয় ১৪.২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডার। তাই গ্যাসের এই দাম কমার প্রভাব পড়বে না সাধারণ মানুষের সংসার খরচে। তাদের গ্যাসের জন্য আগেই দামই গুনতে হবে। এর আগে, ১ জুলাইও বাণিজ্যিক এলপিজির দাম সিলিন্ডার পিছু ৫৮.৫০ টাকা কমানো হয়েছিল। তার আগে জুন মাসে ২৪ টাকা, এপ্রিলে ৪১ টাকা এবং ফেব্রুয়ারিতে ১৯ কেজি সিলিন্ডারের দাম কমেছিল ৭ টাকা। পয়লা আগস্ট আবার দাম কমায় শুক্রবার থেকে কলকাতায় ১৯ কেজির সিলিন্ডারের নতুন দাম হল ১৭৩৬ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৬৯ টাকা।