তৃণমূল বুথ সভাপতি খুনে গ্রেফতার ৩

রেজিনগরে তৃণমূলের বুথ সভাপতি খুনের ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার তিন তৃণমূল কর্মী। এক সপ্তাহ পর আজ বুধবার ভোরবেলায় নদীয়ার নাকাশিপাড়া থানার যুগপুর থেকে তিন জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে রেজিনগর থানার পুলিশ।অভিযুক্তদের নাম আমিত সরকার (২৬) বিজন সরকার (৩৯) ও পাপু সরকার (২২)। ধৃতদের মধ্যে বিজন আর পাপু দুই ভাই। সকলের বাড়ি রেজিনগর থানার আন্দুলবেড়িয়া উত্তর কলোনী এলাকায়। এই তিন জনকে বুধবার ১০ দিন পুলিশ হেফাজতের আবেদন চেয়ে বহরমপুরে জজ আদালতে পাঠায় পুলিশ। বাকি তিনজন এখনও অধরা। গত ২১ জুলাই রাতে রেজিনগর থানার আন্দুলবেড়িয়া উত্তর কলোনীর তৃণমূলের বুথ সভাপতি পতিত পালকে একদল দুষ্কৃতি ধারালো অস্ত্র দিয়ে বেধরক মারধর করে, তারপর মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ দিন পরে মৃত্যু হয়। তার পরিপেক্ষিতে ৬ জনের নামে রেজিনগর থানায় এফআইআর হয়।
এবার দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআরের ইঙ্গিত তৃণমূলের

এবার দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে বলে বুধবার জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এদিন তৃণমূল ভবনে দিল্লিতে দিল্লি পুলিশের হাতে সন্তান সহ আক্রান্ত সাজনু পারভিনকে সাথে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন কুণাল ঘোষ এবং রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। উল্লেখ্য, দিল্লি পুলিশের অত্যাচারের শিকার মালদহের চাঁচলের মহিলা সাজনু পারভিন ও তাঁর শিশু সন্তানের অভিযোগ এমনটাই। এই হেনস্তার অভিযোগ তুলে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করবেন তাঁরা। ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমরা আমাদের দলের লিগ্যাল টিমের সাথে কথা বলছি, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে।” পাশাপাশি, ফিরে আসা এই পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের সব দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার, তাও জানালেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, “ফিরে আসা সবার পেটে ভাত, সবার হাতে কাজ, সবার মাথায় ছাদ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরে আসার বার্তা দিয়েছেন। সেই সুর ধরেই ফিরহাদ হাকিম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, একটা রুটি থাকলে হাফ করে খাব। বাংলা ভাষার উপর অত্যাচার সহ্য করা হবে না।”
জলমগ্ন এলাকার ত্রাণ শিবির পরিদর্শনে বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী ও সাংসদ পার্থ ভৌমিক

বনগাঁ মহাকুমার জলমগ্ন এলাকার ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করল অশোকনগরের বিধায়ক, তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী ও ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে ফোন করে ত্রাণ শিবিরে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেন নারায়ণ গোস্বামী। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহাকুমার জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করবার জন্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী ও পার্থ ভৌমিককে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে পার্থ ভৌমিক আকাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কামদেবপুরের জলমগ্ন এলাকায় যে ৭৩ টি পরিবার গরিবপুর স্কুলে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সমস্যার কথা জানতে চান। এবং তাদের হাতে ত্রাণ সামগ্রীও তুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বনগাঁ ঘাটবাওর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাইকপাড়া এমএসকে স্কুলের ত্রাণ শিবিরে ওঠা মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী ও পার্থ ভৌমিক। ত্রাণ শিবিরে থাকায় তারা কোনো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে কিনা, সঠিকভাবে খাবার দেওয়া হচ্ছে কিনা—সেই বিষয়েও খোঁজখবর নেন এই দুই বিধায়ক। বনগাঁর এসডিও ও বিডিও-কে ত্রাণ শিবিরে থাকা মানুষের যাতে কোনো রকম সমস্যা না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন তাঁরা। বনগাঁ পাইকপাড়া ত্রাণ শিবিরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে প্রতিনিয়ত রুটিন মাফিক তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উত্তর ২৪ পরগনার জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে ওখান থেকেই ফোনে নির্দেশ দেন নারায়ণ গোস্বামী। পরিদর্শন প্রসঙ্গে পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বনগাঁর জলমগ্ন এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমরা কথা বললাম। তাদের সঠিকভাবে খাবার দেওয়া হচ্ছে কিনা, ত্রাণ শিবিরে কোনও সমস্যা আছে কিনা—সে বিষয়ে আমরা কথা বললাম। ত্রাণ শিবিরগুলিতে ভালো ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে।” পরিদর্শন প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী জানিয়েছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা আজ ত্রাণ শিবিরগুলো পরিদর্শনে এসেছিলাম। বনগাঁ মহকুমায় এখনো পর্যন্ত ১০টি ত্রাণ শিবির করা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে ৩০০ সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ত্রাণ শিবিরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ দিয়েছি। ত্রাণ শিবিরে ভালো রান্নাবান্না হচ্ছে। আর কোনও সমস্যা আছে কিনা সে বিষয়ে সমাধান করবার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
জয় শ্রীরাম বলতে চাপ, সন্তানকে মার! কলকাতায় এসে দিল্লির শিশুনিগ্রহ কাণ্ডের হাড়হিম বর্ণনা নির্যাতিতার

দিনদুয়েক আগেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটা ভিডিও পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত মালদার গাজলের বাসিন্দা দিল্লিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যাওয়া এক মা ও তার সন্তানকে নির্যাতনের প্রতিবাদ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পরবর্তীতে রীতিমতো তথ্য-প্রমাণ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোষ্ট করা এই ভিডিওটি ফেক বলে দাবি করে দিল্লি পুলিশ। বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর করা অভিযোগ খারিজ করে দেয় দিল্লি পুলিশ। যা নিয়ে বাংলার রাজনীতিতে টানাপোড়েন শুরু হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া এই ভিডিওর বিরুদ্ধে দিল্লি সাইবার ক্রাইম থানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। তবে এই বিতর্কের মধ্যেই বুধবার তৃণমূল ভবনে কুণাল ঘোষ এবং ফিরাদ হাকিমকে পাশে বসিয়ে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে তার উপরে নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরেন সাজনু পারভিন। আদতে মালদার চাঁচলের বাসিন্দা সাজনু পারভিন, তাঁর স্বামী মোক্তার খান ও সন্তানকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সপরিবারে থাকতেন দিল্লিতে। মহিলার দাবি, নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে চারজন তাঁর বাড়িতে আসেন এবং তাঁদের আধার কার্ড দেখতে চান। অভিযোগ, আধার কার্ড দেখানো সত্ত্বেও তাদের বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হয়। এবং এলাকা না ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, দ্বিতীয়বার ফের ২ জন মহিলাকে নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন। সেই মহিলারাই সাজনু ও তাঁর সন্তানকে এক জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে তার উপর অত্যাচার চালানো হয় বলে দাবি করে সাজনু বলেন, “আমাকে বাংলাদেশি বলা হয়। আমি বারবার বলি, আমি মালদহের বাসিন্দা। এরপর ওরা স্বামীকে ডাকতে বলে। শুরু হয় বেধড়ক মার। প্রথমে জয় শ্রীরাম বললে ছেড়ে দেওয়ার কথা ওরা বলে। তবে আমি তা বলতে রাজী না হওয়ায় চড়-থাপ্পড় মারা হয়। পেটে লাথি মেরে আমার কাছ থেকে ছেলেকেও কেড়ে নেওয়া হয়।” এখানেই শেষ নয়, নির্যাতিতার দাবি, মারধর করা হয় তার সন্তানকেও। তার কান থেকে রক্ত বেরতে শুরু করে। এরপর ২৫ হাজার টাকাও নাকি দাবি করা হয়। তারপর ? সাজনুর দাবি, “কোনওক্রমে স্বামীকে খবর দিই। এরপর শাশুড়ি এসে ওদের টাকা দিতে গেলেও রেহাই মেলেনি।” অভিযোগ, এর পর সবাইকে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। এমনকী দিল্লি পুলিশ ‘পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা মানেই বাংলাদেশি।’ বলেও মন্তব্য করে। কেড়ে নেওয়া হয় ফোন। একাধিক জায়গায় সই করিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবে শেষপর্যন্ত তৃণমূলের সহযোগিতায় ঘরে ফিরতে পেরে স্বস্তিতে সাজনুরা।
এবার কি তবে সরকারি কার্নিভালের পাল্টা বিজেপির কার্নিভাল?

এবার কি মমতার পাল্টা সজল? না, ২৬-এর ভোটে প্রার্থী হওয়ার বিষয় নয়, এবার দুর্গাপুজো ঘিরেও তপ্ত হল বঙ্গ রাজনীতি। দুর্গাপুজোয় সরকারি তরফে প্রতিবছরই কার্নিভাল হয়। শুধুমাত্র কলকাতা নয়, রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পুজোর কার্নিভাল, এটাই এখন দুস্তুর। কিন্তু এবার সরকারি কার্নিভালের পাল্টা শুধুমাত্র উত্তর কলকাতায় দুর্গাপুজোর কার্নিভাল করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। যিনি আবার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির অন্যতম উদ্যোক্তাও। তবে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসেননি এই বিজেপি নেতা। একেবারে স্থানীয় স্তরে এই কার্নিভাল আয়োজনের ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন তিনি। উত্তর কলকাতায় আলাদা কার্নিভালের ইচ্ছাপ্রকাশ করে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেন, “আমরা যারা কার্নিভাল করি না, আমার ইচ্ছে আছে, যে আমরা অঞ্চলের মধ্যে একটা কার্নিভাল করতে পারি কিনা। আমরা পাড়ার লোকেরা একসাথে ঘুরে যদি একটা কিছু করা যায়, তাহলে জিনিসটা অনেক দৃষ্টিনন্দন হবে, সুন্দর হবে। চন্দননগরে যে যেখানে ভাসান দিক, জিটি রোডটা ধরে সবাই সুন্দর করে একসাথে সমস্ত জগদ্ধাত্রী পুজো, তাদের সমস্ত মিছিল নিয়ে, মাকে নিয়ে তাঁরা প্রদক্ষিণ করে। যদি সেটা করা যায়। এটা একেবারে ভাবনার পর্যায়ে। এটা একেবারে পাড়াতুতো ব্যাপার।” উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে, রাজ্য সরকারের তরফে কলকাতায় শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। তবে তার পাল্টা শুধুমাত্র উত্তর কলকাতার জন্য কার্নিভাল করার পিছনে রাজনীতি আছে বলে মনে করছেন তৃণমূল বিধায়ক ও কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র। তিনি বলেন, “নিঃসন্দেহে রাজনীতি। এখন ওঁরা রাজনৈতিকভাবে, বিরোধী দলগুলি তাঁরা সবাই বাংলার এই স্বীকৃতিটাকে স্বীকার করতে চায় না। স্বাভাবিকভাবে তার একটা কাউন্টার করে নিজেদের লাইমলাইটে আসার একটা প্রচেষ্টা। গত ৪ বছরে ওঁর মনে পড়ল না, হঠাৎ ২৬-এর আগে ওঁর মনে পড়ল যে আলাদা করে একটা কার্নিভাল করি। তার মানে বিজেপি প্রচুর টাকা ছড়িয়ে, পুজো কমিটিগুলোকে কেনার চেষ্টা করবে, তাদের মিছিলে হাঁটানোর।”
বুধবার রাজ্যে আসছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

আজ বঙ্গ সফরে আসছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। কল্যাণীর এইমসে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই তাঁর রাজ্যে আসা। বুধবার দিল্লি থেকে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তিনি। আজ বঙ্গ সফর রাষ্ট্রপতির সুরক্ষার কথা ভেবে তাই নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। গোটা এইমস চত্বর পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীতে মুড়ে ফেলা হয়েছে। বুধবার এইমসের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সেখানে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি তিনি শংসাপত্রও তুলে দেবেন ছাত্রদের হাতে। নিয়ম অনুযায়ী এই অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে তিনি আজ কল্যাণীর এইমসে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তাঁর পরিবর্তে এদিন হাজির থাকবেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, কল্যাণীর এইমসে অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর যাওয়ার কথা আছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরেও। রাতে রাজভবনে রাত্রিবাস করবেন রাষ্ট্রপতি। আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। এরপর দুপুরে রওনা দেবেন ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে। তাই তাঁর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এই শহরের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পণ্যবাহী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে কড়া হুঁশিয়ারি সুপ্রিম কোর্টের

বিহারে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর(SIR)-এর বাদ পড়েছে প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম। যা নিয়ে রীতিমত উত্তাল দিল্লির রাজনীতি। সংসদ এবং সংসদের বাইরেও এই নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। এমনকী এসআইআর-এর নাম করে কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসি(NRC) চালু করতে চাইছে বলে অভিযোগ তাদের। নির্বাচন কমিশনের গত ২৪ জুনের এসআইআর সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’ সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগও জানিয়েছিল। তাদের দাবি, কমিশনের এই পদক্ষেপ সংবিধানের ১৪, ১৯, ২১, ৩২৫ এবং ৩২৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী এবং ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন এবং ১৯৬০ সালের ভোটার রেজিস্ট্রেশন রুলসের অধীনে নির্ধারিত পদ্ধতি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আবেদনকারীদের পক্ষে উপস্থিত সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিব্বল এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেন যে, ভোটার-আধার ও রেশন কার্ডের মতো জরুরি বিষয়কে এই সমীক্ষার অঙ্গ হিসাবে ধার্য্য করা হচ্ছে না। যদিও সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়ে বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছিল। কিন্তু শীর্ষ আদালত কোনও ভাবেই তাদের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াতে চায়নি। কিন্তু বিহারে অন্তত ১৫ জন ভোটারের নাম তালিকা থেকে মৃত বলে বাদ দেওয়া হলেও তাঁরা এখনও বেঁচে আছেন, এই অভিযোগ সামনে আসতেই নির্বাচন কমিশনকে কড়া হুঁশিয়ার দিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় কোনও অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে তারা হস্তক্ষেপ করতে দ্বিধা করবে না। এর আগে নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল যে বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনের(SIR) পরে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে এবং তার প্রতিলিপি সমস্ত রাজনৈতিক দলকে দেওয়া হয়েছে। এমনকী তাদের ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছে। কিন্তু এদিন আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ আবারও অভিযোগ জানিয়েছেন, যে ১ অগস্ট নির্বাচন কমিশন যে খসড়া তালিকা প্রকাশ করবে তা থেকে মানুষকে বাদ দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ তাদের ভোটাধিকার হারাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, যে নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা এবং তাদের আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং যদি কোনও অন্যায় ঘটে থাকে তবে আবেদনকারীরা এটি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে অভিযোগকারীদের স্পষ্ট জানানো হয়েছে, “যে ১৫ জনকে ওরা মৃত বলে দাবি করেছে, কিন্তু তারা বেঁচে আছে, তাদের আপনারা সামনে নিয়ে আসুন, আমরা ব্যবস্থা নেব।” সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আবেদনকারীদের এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য জমা দেওয়ার জন্য নোডাল অফিসার নিয়োগ করেছে। নির্বাচন কমিশনের এসআইআর প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা পিটিশন বিবেচনার জন্য আগামী ১২ ও ১৩ অগস্ট সময়সীমা বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আবেদনকারীদের আগামী ৮ অগস্টের মধ্যে লিখিত বক্তব্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন শীর্ষ আদালতে শুনানি শেষে আবেদনকারীদের পক্ষে উপস্থিত সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিব্বল এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, “কমিশন এসআইআর প্রক্রিয়ায় যেভাবে বিহারে প্রায় ৬৫ লক্ষ মানুষকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে, তা গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন। আমরা এই বিষয়টাতে মহামান্য শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি।”
রাশিয়ার উপকূলে আছড়ে পড়ল সুনামি, সতর্কতা জারি আমেরিকা এবং জাপানেও

বুধবার রাশিয়ার পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত কামচাটকা শহর কেঁপে উঠল ভয়াবহ ভূমিকম্পে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৮.৭। আর এর ফলেই সৃষ্টি হয় সুনামির। জলস্তর প্রায় ৪ মিটার পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে, ভূমিকম্পটির উৎস ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৯.৩ কিমি গভীরে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল আভাচা উপসাগরের উপকূল বরাবর পেট্রোপাভলভস্ক-কামচাটস্কির প্রায় ১২৫ কিমি পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে। সোস্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই এই ভয়াবহ ভূমিকম্পের বেশকিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যাতে দেখা গেছে রাশিয়ায় এই ভূমিকম্পের কী ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে। কামচাটকার আঞ্চলিক ডিজাস্টার মন্ত্রী সের্গেই লেবেদেভ দাবি করেছেন, সেখানে বেশ কিছু জায়গায় ৩-৪ মিটার উচ্চতায় জলস্তর বাড়তে দেখা গেছে। এই শহরের জনসংখ্যা প্রায় ১,৬৫,০০০। এই পরিস্থিতিতে উপকূলবর্তী অঞ্চলের লোকজনদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ভূমিকম্পের জেরে প্রশান্ত মহাসাগরে থাকা আমেরিকার বেশ কয়েকটি দ্বীপ, এমনকী জাপানেও সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই আশঙ্কার ফলে জাপান সরকার সুনামির বিষয়ে ইতিমধ্যেই তৎপর হয়ে উঠেছে। জাপানের উপকূল অঞ্চলগুলিতে ৩ মিটার পর্যন্ত জলস্তর বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এনএইচকের রিপোর্ট অনুযায়ী জাপানের বেশ কিছু অঞ্চল থেকে ইতিমধ্যেই নাকি লোকজন সরানোর কাজও শুরু হয়ে গেছে। অন্যদিকে আমেরিকা হাওয়াইতে সুনামি সতর্কতা জারি হয়েছে। এছাড়া গুয়াম এবং মাইক্রোনেশিয়া দ্বীপের জন্যেও সুনামি আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে এই জায়গাগুলো ইতিমধ্যেই খালি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলের শহর যেমন ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন, ওরেগন এবং আলাস্কাতেও জারি রয়েছে সতর্কতা। এই শহরগুলি ওপর কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে বলেই খবর।