এবার বিহারের বাসিন্দা হলেন সারমেয়

বিহারে এবার সরকারি ভাবে স্থায়ী বাসিন্দা হল এক সারমেয়। অবাক হলেন তো? না এটা রসিকতা নয়, এই মারাত্মক অভিযোগ তুললেন খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই স্থায়ী বসবাসকারীর শংসাপত্র যিনি পেলেন, তাঁর নাম ‘ডগ বাবু’। আর তাঁর পিতা ও মাতার যথাক্রমে ‘কুত্তা বাবু’ এবং মা ‘কুতিয়া দেবী’। আর এই ‘ডগ বাবু’ পাটনার কৌলিচকের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ওই সার্টিফিকেটে ছবি দেওয়া একটি কুকুরের। সম্প্রতি সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই শংসাপত্র। এই ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনকে তোপ তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।সোমবার সংসদের বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লি যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের নাম বাদ দিয়ে কুকুরের নামে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে। এই রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট এসআইআরের(SIR) ক্ষেত্রে কমিশন গ্রহণ করছে। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়ে কুকুরের নামে ফেক ভোটার আইডি কার্ড করেছে যাতে ভোটলুট করে বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া যায়। এই ঘটনা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।” নির্বাচন কমিশন ‘বিজেপির তল্পিবাহক’-এর মতো কাজ করছে বলেই কটাক্ষ করেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। ‘ডগ বাবু’র রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট নিয়ে বিহারেও চলছে জোর কাটাছেঁড়া।
নেতাজিকে মনে করিয়ে ভাষা-সন্ত্রাস ইস্যুতে পরোক্ষে মোদিকে তোপ মমতার

শুধু মুখে নয়, এবার সরাসরি রবি ঠাকুরের মাটি থেকেই ভাষা রক্ষার ‘লড়াই’ শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিজেপিকে। ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তার প্রতিবাদে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাই ঘোষণা করেছিলেন যে বোলপুর থেকেই এই লড়াইয়ের অস্ত্রে শান দেবেন তিনি। সেই মতো সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ বোলপুর টুরিস্ট লজ থেকে শুরু হল মিছিল। সামনের সারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী রায়, অসিত মাল, ফিরহাদ হাকিমরা। পিছনে হাজার হাজার বাংলাভাষা রক্ষার সৈনিকরা। কারও হাতে রবি ঠাকুরের ছবি, বাংলা বর্ণমালা আর সামনে বাজছে “আমি বাংলায় গান গাই।” এগিয়ে চলেছে মিছিল। প্রায় দীর্ঘ ৪ কিলোমিটার মিছিল শেষে জামবনী বাসস্ট্যান্ডে সভা করে মোদীর নাম করে তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “নেতাজি-শহিদ স্বরাজদীপকে ভুলে গেলেন? ইতিহাস ভুলবেন না। বাংলার গুরুত্ব ভুলবেন না। রেশন, আধার, প্যান কার্ড থাকা সত্ত্বেও অত্যাচার করা হচ্ছে। পুশব্যাক করা হচ্ছে। মনে রাখবেন, এটা বাংলা। এরা দেশ স্বাধীন করতে পারে, বাল্যবিবাহ রোধ করতে পারে। সতীদাহ প্রথা করতে পারে।” মমতা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, “আমি কোনও ভাষার বিরোধী নই। আমরা একতা চাই। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হওয়ার মূল অস্ত্র একতা।” হুঙ্কার ছেড়ে মমতা বললেন, “জীবন দিয়ে দেব, কিন্তু ভাষা কাড়তে দেব না।” চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মমতা বলেন, “বাংলার কারো নাম বাদ দিয়ে দেখুন, ছৌ নাচ দেখবেন।” এরপরই ভিনরাজ্যে কর্মরত বাঙালিদের ঘরে ফেরার পরামর্শ দেন মমতা।
‘আমাকে না জানিয়েই করা হয়েছে’— বিএলওদের প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর

স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন বা এসআইআর(SIR) নিয়ে যখন গোটা বাংলায় কার্যত রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে। তোলপাড় গোটা রাজ্য। ঠিক সেই সময় তাঁকে কিছু না জানিয়ে বিএলও(BLO)-দের প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই যে বিএলওদের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে সেকথা নাকি জানতেনই না বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি এই সংক্রান্ত কোনো অনুমতি নাকি মুখ্য সচিবের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি বলে দাবি করলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। অর্থাৎ রাজ্যকে কার্যত ধোঁয়াশায় রেখেই এই বিএলও(BLO)-দের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। আর কেন সব জানা সত্ত্বেও রাজ্যকে কোনও তথ্য দেওয়া হল না? তা নিয়ে জেলাশাসকদের তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। বিএলও(BLO)-দের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “আপনারা বিএলও(BLO)-র যেসব লিস্ট করেছেন। আমার অনুরোধ থাকবে যাতে কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেন না যায় সেটা দেখবেন।” পাশাপাশি এই বিষয়ে তিনি বিএলও(BLO)-দের বলেন, “নির্বাচন কমিশন যে তালিকা তৈরি করার করবে। যখন ভোটের দিনক্ষণ প্রকাশ হবে, তারপর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। তার আগে বা পরে নয়। মনে রাখবেন আপনারা রাজ্য সরকারি কর্মী। কোনও মানুষকে অযথা হেনস্তা করবেন না। দেখবেন যেন সাধারণ মানুষের হেনস্তা না হয়। যারা দীর্ঘদিন এই রাজ্যের ভোটার। চারদিন গেলেন, সে নেই। হয়তো বেড়াতে গিয়েছে। তা বলে তাঁর নাম বাদ দিয়ে দেবেন? আপনাকে দেখতে হবে তাঁর অস্তিত্ব আছে কিনা। চারদিকে যাঁরা বাংলা ভাষায় বলছে তাঁরা হেনস্তার শিকার হচ্ছে। এই মানুষগুলির পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে।” ইতিমধ্যেই, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করে নির্বাচন কমিশন। যাকে বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিশন’। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০০৩ সালে বিহারে শেষবার এসআইআর হয়েছিল। যাতে শুধুমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরাই ভোটদানের অধিকার পান সেটা নিশ্চিত করতে এই সংশোধনী। বিহারের পরে এক এক করে অন্যান্য রাজ্যগুলিতে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হবে। নজরুল মঞ্চে নদিয়া, দুই ২৪ পরগণা এবং মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে শতাধিক ব্লকের বিএলও(BLO)দের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী দিনে পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এটাকে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনীর প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসাবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
বিভিন্ন রাজ্যে থাকা বাংলার ২২ লক্ষ পরিযায়ীকে ঘরে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ মমতার

এবার ভিনরাজ্যে বাঙালি ‘হেনস্তা’ রুখতে বড় পদক্ষেপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ইতিমধ্যে বাংলার বাইরে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে একের পর এক বাঙালি শ্রমিকদের ওপর, আরো ভালো করে বললে বাঙালিদের উপর লাগাতার নির্যাতন নিয়ে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন তিনি। রাজপথে নেমে মিছিল করে এই বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী ২১শে জুলাইয়ের সভা থেকেও বারে বারে বাঙালি অস্মিতাকে তুলে ধরেছেন তিনি। এমনকী প্রয়োজনে ফের আরও একবার ভাষা আন্দোলনের ডাকও দেন তিনি। সোমবারই রবীন্দ্রনাথের বোলপুর থেকে বাংলাভাষা রক্ষা ও বাঙালিদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মিছিলে হেঁটেছেন তিনি। তবে তার আগে ঘরের ছেলেদের ‘ঘরে ফেরানোর’ ব্যবস্থা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, ”বাইরে আমাদের ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করে। তাঁদের সবাইকে ফিরিয়ে আনুন এবার।” মঞ্চে থাকা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক আর বীরভূমের ছেলে রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, “দরকার নেই দালালদের সাহায্য নিয়ে বাইরে গিয়ে কাজ করার। ওদের উপর অত্যাচার হলে দালালরা থাকে না, পালিয়ে যায়। ওঁরা ফিরে এলে এখানে যদি থাকার জায়গা থাকে, তাহলে তো ভালো। আর তা না থাকলে, আমরা ক্যাম্প বানিয়ে দেব। রেশন কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, কর্মশ্রী প্রকল্পে ওঁদের কাজের ব্যবস্থা করে দেব। ওঁদের জব কার্ড দিয়ে দেওয়া হবে।” তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তাঁর উদ্দেশেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ”সামিরুল, ওঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করো।” কোভিডের সময় থেকেই বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বহু পরিযায়ী শ্রমিককে নিজেদের খরচে রাজ্যে ফিরিয়ে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যদিও পরে অবশ্য তাঁদের অনেকেই ফিরে যান নিজেদের কর্মস্থলে। তবে এই মুহূর্তে সামনে এসেছে অন্য সংকট। এখন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে শ্রমিকরা বাইরের রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই তাঁদের বাংলাদেশি বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে, নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। চলছে অত্যাচারও। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের উদ্ধারে সাহায্য করছে রাজ্য প্রশাসন। তারই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, সব পরিযায়ী শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হোক। রাজ্য সরকার জব কার্ড দিয়ে তাঁদের কাজের ব্যবস্থা করে দেবে। অর্থাৎ বাঙালি ‘হেনস্তা’ রুখে বাংলার শ্রমিকদের নিরাপত্তায় তিনিই যে একমাত্র ভরসা, তা ফের বোঝালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘কেন্দ্র বঞ্চনা করলেও উন্নয়ন থামবে না’, মুখ্যমন্ত্রী

বাংলা ‘দখল’ করতে না পেরে লাগাতার রাজ্যের সাথে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র— এই অভিযোগ এর আগেও একাধিকবার শোনা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। এর মধ্যে আবার নতুন সংযোজন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালিদের নির্যাতনের ঘটনা। আর ঠিক এই আবহে ফের আরও একবার বাংলার প্রতি বঞ্চনা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে বঞ্চনা নিয়ে সরব হন তিনি। তবে এই বঞ্চনার মধ্যেও উন্নয়নমূলক কাজ কীভাবে করতে হবে সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তা হাতেকলমে শিখিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বোলপুর থেকে তিনি বলেন, “কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে। এই অবস্থাতেও এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করতে হবে। রাজ্যের টাকাতেই সব কাজ হবে। এলাকার কাজের জন্য জেলা পরিষদ থেকে ৫ শতাংশ, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ৫ শতাংশ, স্থানীয় এমএলএ(MLA)-রা ১০ লক্ষ টাকা দেবেন। এই সব টাকা নিয়ে জমা পড়বে ডিএমদের কাছে। বাকি টাকা দেবে রাজ্য সরকার।”
‘টেররিস্টরা টুরিস্টদের মারে না’— পাহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক সাবিত্রী মিত্র

চলতি বছরের ২২শে এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন ২৬ জন পর্যটক। এই ঘটনা নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মালদা মানিকচকের তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন—”টেররিস্টরা কখনও টুরিস্টদের মারে না, বরং স্বাগত জানায়। তাহলে মারল কারা?” বিজেপিকে নিশানা করে সাবিত্রী মিত্রের দাবি, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের এক গভীর ষড়যন্ত্র। ক্ষমতায় টিঁকে থাকার জন্য মোদী সরকার পুলওয়ামা থেকে পাহেলগাঁও, এভাবে একের পর এক ঘটনাকে সামনে রেখে দেশপ্রেমের জিগির তুলে ভোট-ব্যাংক ভরিয়েছে। এগুলো পুরোটাই কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে সাধারণ মানুষের নজর ঘোরানোর কৌশল বলেই অভিযোগ করেন সাবিত্রী মিত্র। পাশাপাশি তৃণমূলের ভাষা-আন্দোলনের মঞ্চ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে বিজেপি সরকার যে কতটা নিষ্ঠুর তার উদাহরণ টানতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “করোনার সময়ও কেন্দ্রীয় সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে ছিল না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফেরানোর উদ্যোগ নিলে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে মাঝরাস্তায় গাড়ি থামিয়ে পুলিশ তাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে। আর এখন পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা বলে তাদের উপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক করা। এর বিরুদ্ধে আমাদের নেত্রী সরব হয়েছেন। আমাদেরও এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।” পাশাপাশি এদিনের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করেই তীব্র আক্রমণ করেন সাবিত্রী মিত্র। তাঁর দাবি, একসময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায় যারা নেতা হয়েছে, আজ তারাই ‘হিন্দু বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছে। এদের না আছে হিন্দুদের কোনও ধর্মশিক্ষা। এরা জানেও না কোথা থেকে সনাতন ধর্মের উদ্ভব। হিন্দুদের একাংশকে স্রেফ বোকা বানিয়ে রামের ছবি দেখিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সাবিত্রী মিত্র। তাঁর মতে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের মতো বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকাটাই বাংলার সংস্কৃতি। বিজেপি সেই সংস্কৃতিকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেই অভিযোগ সাবিত্রীর। অন্যদিকে সাবিত্রী মিত্রের বক্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁর বক্তব্য, “সন্ত্রাসী, বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের প্রশ্রয় দেওয়াই তৃণমূল কংগ্রেসের থিওরি। এরাই তো তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পদ। এদের ভোটেই তৃণমূল কংগ্রেস আজ ক্ষমতায়। তাই কেন্দ্রীয় সরকার যখন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় তখন সবার আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের গায়ে লাগে।” এমনকী তাঁর স্পষ্ট দাবি, সাবিত্রী মিত্রের কাছ থেকে বাংলার মানুষ হিন্দু শিক্ষার ক্লাস নেবে না। যাদের নিজেদের দল একটি বিশেষ ধর্মীয় দলকে প্রশ্রয় দেয়, হিন্দুদের উপর অত্যাচারে নীরব থাকে, তারা কী হিন্দুত্ব শেখাবেন বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু।
জমিতে চাষ করাকে কেন্দ্র করে কোচবিহারে খুন তৃণমূল কর্মী

জমিতে চাষ করাকে কেন্দ্র করে বিবাদ। তার জেরে খুন হলেন সুবোধ মালাকার নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের পানিশালা এলাকায়। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এলাকারই বাসিন্দা পরিতোষ দাস, ওরফে পরিদাস। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পরিদাস নামে ওই ব্যক্তি তাদের জমিতে কাজ করত। রবিবারও কাজ করতেই এসেছিলেন। কিন্তু তার কিছু টাকা অগ্রিম দরকার বলে দাবি করেন। তাই নিয়েই বাড়ির কর্তা সুবোধ মালাকারের সাথে অভিযুক্ত পরিদাসের বচসা বাধে। সেই সময় ৬০ বছরের সুবোধ মালাকারকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বলে মৃতের পরিবারের দাবি। তারপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে মাঠে ফেলে রেখে যায় ওই অভিযুক্ত। গুরুতর জখম অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে এমজেএন(MJN) মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত পরিতোষ দাস বেপাত্তা। তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে মৃতের পরিবারের তরফ থেকে। অভিযুক্ত পরিদাসের সন্ধানে তল্লাসি শুরু করেছে পুলিশ। এই পিটিয়ে খুনের ঘটনা নিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টও করেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এই খুনের ঘটনায় বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি। রবিবার রাতেই হাসপাতালে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। তিনি জানান, এলাকায় দুষ্কৃতী বলেই পরিচিত অভিযুক্ত পরিদাস বিজেপির সমর্থক। রাজনৈতিক ভাবেই পরিকল্পনা মাফিক তৃণমূল কর্মী সুবোধ মালাকারকে খুন করা হয়েছে বলেই তাঁর দাবি। তিনি এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন। যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে তৃণমূলের অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভাবে নস্যাৎ করা হয়েছে। তাদের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।