কোচবিহারে শুভেন্দু অধিকারীর বিক্ষোভ সমাবেশের দিনই, পাল্টা সভা করবে তৃণমূল

২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ সমাবেশের পাল্টা উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপির যুব মোর্চা। সেখানে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই মঞ্চ থেকেই আগামী ৪ঠা আগস্ট ৬৫ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে কোচবিহার অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু। কোচবিহারে দলীয় নেতা নিখিল দে, বরেন বর্মণ ও সুখেন বর্মণ খুনের ঘটনায় ওইদিন কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারের দফতর ঘেরার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার শুভেন্দুর ওই সভার দিনই তৃণমূলের তরফে পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিলেন কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। তিনি জানিয়েছেন এখন থেকে জেলায় বিজেপির যতগুলো সভা হবে তৃণমূলও তার পাল্টা হিসাবে ওই একই দিনে সভা করবে। এছাড়াও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো আগামী ২৬শে জুলাই ভিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর নিপীড়নের প্রতিবাদে গোটা কোচবিহার জেলা জুড়ে বাংলা ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এই সমস্ত কর্মসূচিতে কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব সহ দলের কর্মী-সমর্থকরাও উপস্থিত থাকবে। এছাড়াও বক্সীরহাট আসাম-বাংলা রাজ্য সীমান্তে, আসাম সরকারের বিরোধিতা করে একটি বিক্ষোভ সভারও ডাক দিয়েছেন অভিজিৎ বাবু। সেই অনুষ্ঠানে দিনহাটার চৌধুরীহাট এলাকার উত্তম কুমার ব্রজবাসীকে সাথে রাখার কথাও স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। যে উত্তম ব্রজবাসীকে আসাম সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। তাই নিয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এমনকী তাকে নিয়ে নিজের সোস্যাল সাইটে আসাম সরকারকে রীতিমত তুলোধনা করেন তিনি। এবার সেই উত্তম ব্রজবাসীকে নিয়ে যে আসরে নামতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস, তা এদিন কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের কথাতেই স্পষ্ট।
ভিন রাজ্যে বাঙালি নিগ্রহের প্রতিবাদে একই দিনে পথে নামল বাম-কংগ্রেস

বিজেপি শাসিত ভিন রাজ্যে বাংলা ও বাঙালিদের হেনস্থার প্রতিবাদের যখন বিজেপির বিরুদ্ধে সরব রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তখন এই ইস্যুতে প্রদেশ কংগ্রেস এবং সিপিআইএম নেতৃত্ব কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে। এই ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে কার্যত আন্দোলনের ব্যাটন নিজের হাতে নিতে মরিয়া। সেখানে এই রাজ্যে বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্বকে সেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায়নি। তবে শেষপর্যন্ত ভিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর আক্রমণের প্রতিবাদে একই দিনে পথে নামল বাম-কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে উৎকল ভবন ঘেরাও অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। ওড়িশায় বাংলাভাষীদের হেনস্তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলও করে তারা। রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল করে এদিন উৎকল ভবনের সামনে বিক্ষোভ অবস্থান করে কংগ্রেস। পরে ৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল ওড়িশা উৎকল ভবনের ভিতর ডেপুটেশন জমা দেয়। অন্যদিকে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাংলার সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের শুধুমাত্র বাংলা বলার অপরাধে গ্রেফতার করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বারাসত জেলাশাসক দপ্তরে ডেপুটেশন জমা দিলেন সিআইটিইউ(CITU) কর্মী-সমর্থকরা। যদিও এদিন জেলাশাসক দফতরে প্রবেশের মুখে ব্যাপক পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয় সিআইটিইউ কর্মী-সমর্থকরা। দীর্ঘক্ষণ ধরে পুলিশি ব্যারিকেড ধরে চলে সিআইটিইউ কর্মী-সমর্থকদের ধস্তাধস্তি। এমনকী পুলিশের সঙ্গে রীতিমত খণ্ডযুদ্ধও হয়। অবশেষে তাদের ৬ জনের একটি প্রতিনিধি দল পৌঁছায় জেলাশাসক দফতরে। সেখানে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে ডেপুটেশনপত্র জমা দেন। এদিন কর্মসূচি শেষে সিআইটিইউ নেতা বরুণ ভট্টাচার্য পুলিশের বিরুদ্ধে কার্যত ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, “যথাযথ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও যেভাবে ভিন রাজ্যের আমাদের শ্রমিকরা নিগৃহীত হচ্ছে, তার প্রতিবাদে আমরা আজ শান্তিপূর্ণ ভাবেই জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে এসেছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের সঙ্গে যেভাবে ব্যবহার করল, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ যেভাবে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় তাতে ওদের মেরুদণ্ড বলে কিছু নেই। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রামকে ওরা ভয় পায়। তাই এভাবে আচরণ করে আজ সেটাই বুঝিয়ে দিল তারা।”
বাংলা সিনেমা-সিরিয়ালে হিন্দি গানের ব্যবহার কমাতে নির্দেশ মমতার

এবার থেকে বাংলা সিনেমা-সিরিয়ালে হিন্দি গানের ব্যবহার বন্ধ করতে অনুরোধ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইদানিং বাংলা ধারাবাহিকে হিন্দি গানের ব্যবহার বাড়ছে। এমনকী বৃহস্পতিবার ‘মহানায়ক’ সম্মানের অনুষ্ঠানে তা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে যখন বাঙালিদের উপর লাগাতার আক্রমণ চলছে, বাদ যাচ্ছে না মাতুয়া-রাজবংশীরাও। এমন পরিস্থিতিতে নিজের মাতৃভাষাকে আঁকড়ে রাখার মন্ত্র দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অন্য ভাষাকে অবশ্যই সম্মান করুন। কিন্তু বাংলাকে প্রাণে ধরে রাখুন।” মহানায়ক সম্মানের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এল বাংলা ভাষা এবং বাংলা সিনেমার প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা। শহীদ স্মরণের মঞ্চ থেকেই ডাক দিয়েছিলেন ‘ভাষা আন্দোলনের’। আর বৃহস্পতিবার ধনধান্য স্টেডিয়ামে ‘মহানায়ক’ সম্মানের অনুষ্ঠানেও বাঙালি অস্মিতায় শান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সিনেমা সিরিয়ালে বাংলা গানের ব্যবহার কমে যাওয়ার বিষয়টিকে তুলে ধরলেন। শিল্পী-কলাকুশলীদের হাতে মহানায়কের নামাঙ্কিত পুরস্কার তুলে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “বাংলা ভাষায় যাঁরা কথা বলছেন, তাঁদের উপর অত্যাচার চলছে বিভিন্ন রাজ্যে। সারা পৃথিবীতে পঞ্চম স্থানে রয়েছে আমাদের বাংলা ভাষা। এই ভাষাতেই প্রায় ৩০ কোটি মানুষ কথা বলেন। আর আজকে যাঁরা বাংলা ভাষায় কথা বলছেন, তাঁদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে, এটা মেনে নেব না। বাংলা আমাদের মাতৃভূমি, কর্মভূমি, পিতৃভূমি, স্বপ্নভূমি, নবজাগরণের ভূমি। তাই আমাদের জেগে উঠতে হবে। বাংলা সিনেমাকে অবহেলা করবেন না। আর আমি নির্মাতাদেরও বলব, বাংলা সিরিয়ালেও যেন হিন্দি ভাষায় গানের ব্যবহার কমানো হয়।” মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন, “বাংলা গানের চল সিনেমা-সিরিয়ালে অনেক কম। বাংলা গানের একটা মাধুর্য রয়েছে। পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, শ্যামল মিত্র, সলিল চৌধুরী, লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে-সহ আরও অনেকে বাংলা ভাষায় কত ভালো ভালো গান গেয়েছেন।” বাংলা ভাষার গানের উপরই নির্মাতাদের জোর দিতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ধারাবাহিকের প্লটে সামাজিক বার্তা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। পরিচালক-প্রযোজকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “খারাপ কিছু শেখাবেন না। সিরিয়ালে সারাক্ষণ বিষ দেওয়া, ঝগড়া, গুন্ডামি এসব দেখানো হচ্ছে। বাচ্চারা ভুল শিখছে। অনেকে আত্মহননের পথও বেছে নিচ্ছে। সিরিয়াল টানতে গেলে রোজ গণ্ডগোল দেখানোর দরকার নেই। অনেক ভালো জিনিস রয়েছে, সেগুলি দেখান।”
ভাষা-সন্ত্রাস বন্ধ হবে, কি হবে না? প্রশ্ন মমতার

ফের ভিন রাজ্যে, বিশেষ করে সেই বিজেপি শাসিত রাজ্যে। আর এবার হরিয়ানায়। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ বলে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা ও অত্যাচারের অভিযোগ উঠল। তবে এবার এই বাঙালি নির্যাতনের প্রমাণ এল কাগজে-কলমে। হরিয়ানা থেকে শ্রমিকের পরিচয় জানতে চেয়ে এবার রাজ্য পুলিশের কাছে চিঠি আসার খবর পেয়েই ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নিজের সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি প্রশ্ন করেন, “ভাষা-সন্ত্রাস বন্ধ হবে, কি হবে না?” সেইসঙ্গে তার স্পষ্ট হুশিয়ারি, “মনে রাখবেন এই অত্যাচার বাংলা সহ্য করবে না।” তাঁর আরো অভিযোগ, বৈধ নথি দেখানো সত্ত্বেও গুরগাঁওয়ে কাজ করতে যাওয়া কোচবিহারের শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটকে রাখা হয়েছে, পাঠানো হয়েছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। এখানেই শেষ নয়, এই শ্রমিকের উপর অত্যাচার যে করা হয়েছে, সেই ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। কোচবিহারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় সেই ভিডিও শেয়ার করেছেন। আর সেটা দেখেই এদিন গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “এ ধরনের ঘটনা বিভিন্ন রাজ্যে বেড়েই চলেছে। রাজস্থানেও অবৈধ সন্দেহে বাংলার বাসিন্দাদের বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে। যদিও সকলের কাছেই যথাযথ নথি রয়েছে। আমাদের আধিকারিকরা সেসব নথি পাঠিয়েছেন। দরিদ্র শ্রমিকরাই এমন অত্যাচারের স্বীকার।’ মুখ্যমন্ত্রীর এদিন আরও বলেন, “ডবল ইঞ্জিন সরকার অর্থাৎ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেই এমন ঘটনা বেশি ঘটছে, তাতে আমি নিজেই আতঙ্কিত। আপনারা কী প্রমাণ করতে চাইছেন? এসব ভয়ংকর সন্ত্রাস। আমরা কিন্তু সহ্য করব না। এই ভাষা-সন্ত্রাস বন্ধ করুন। ভাষা-সন্ত্রাস বন্ধ হবে, কি হবে না?”
শান্তনু সেনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দলীয় কর্মীদের

এবার খোদ কলকাতায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ এবং বর্তমানে সাসপেন্ড হওয়া নেতা ডা: শান্তনু সেনের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের। ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ডা: কাকলি সেনের বিরুদ্ধে শান্তনু সেনের উপস্থিতিতেই এক বৃদ্ধাকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ, আর এই নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সিঁথির মোড়ে শান্তনু সেনের বাড়ির কাছেই এক বাড়িতে ঝামেলা হয়, সেই ঝামেলার সময় সেখানে যান স্থানীয় কাউন্সিলর শান্তনু সেনের স্ত্রী ডা: কাকলি সেন। এখানেই তার বিরুদ্ধে এক বৃদ্ধাকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ এবং পরবর্তীতে তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ শান্তনু সেন সেখানে উপস্থিত হন। এবং তার সামনেই স্থানীয় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে মারধর করা হয়। এরপরই শান্তনু সেনের বাড়িতে চড়াও হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। চলতে থাকে বিক্ষোভ। পাল্টা সিঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান কাকলি সেন। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, শান্তনু এবং কাকলির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। পরে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা আনোয়ার খান। তার বক্তব্য, “আমাদের দলের এক সাসপেন্ড হওয়া নেতা দলীয় কর্মী এবং তার কাউন্সিলর স্ত্রী দাঁড়িয়ে থেকে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদেরকে মার খাইয়েছে। আমরা স্থানীয় থানায় এসেছিলাম, কিন্তু থানা আমাদের সঙ্গে কোনও রকম সহযোগিতা করছে না। আমাদের দাবি, এই ঘটনায় শান্তনু সেন ও তাঁর স্ত্রী কাকলি সেনের বিরুদ্ধে এফআইআর নিতে হবে, নয়তো আমরা বড় আন্দোলনে নামব।” অপরদিকে ডা: শান্তনু সেন জানিয়েছে, “আমি আমার যে বক্তব্য তা লিখিত আকারে আমার স্থানীয় থানার ওসিকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে নতুন কিছু বলার নেই।”
বাংলায় বাড়ির কুকুর-ছাগলদেরও আধার কার্ড হয় : দিলীপ ঘোষ

এসআইআরের ফলে বিহারে বাদ পড়েছেন রাজ্যের ৫৭ লক্ষ ভোটার। নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বলেছে আধার নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ নয়। এ নিয়ে এবার মুখ খুললেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ।বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষ আধার নিয়ে বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কাজ সুস্থ নির্বাচন করানো। এসব আধার কার্ড এখন পয়সা দিলেই পাওয়া যায়। বাড়ির কুকুরেরও আধার কার্ড করা সম্ভব। এসব পরিচয়পত্র হিসেবে ধরা হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গে রাস্তায় বস্তা বস্তা ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে।” রাজ্যে রাজ্যে বিশেষ করে বিজেপি পরিচালিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন তা নিয়েও মুখ খোলেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, “মুর্শিদাবাদের নাম করে যারা যাচ্ছে তারা বেশিরভাগ বাংলাদেশি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশি আর বাঙালি বা বাংলাভাষী গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা ডিমান্ড করব বিহারে যেভাবে ভোটার লিস্ট সংশোধন হচ্ছে, বাংলাতেও নির্বাচনের আগে সেটাই করা উচিত। না হলে পশ্চিমবঙ্গে ফেয়ার ইলেকশন হবে না।” বর্তমান ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর নতুন রাজনৈতিক দল খুলে ২০২৬-এর বিধানসভায় ৫০ আসনে প্রার্থী দেবে বলে ঘোষণা করেছেন, এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওনাকে কেউ কোনোদিন ধরে রাখতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গে যত দল সব করা হয়ে গিয়েছে। তাই নতুন দল করার দরকার। এটা শুধু উনার ইচ্ছা নয়, তৃণমূলও চাইত। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি যা হচ্ছে, ২৬-এর নির্বাচনে যদি কোনও মুসলিম উপমুখ্যমন্ত্রী হয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। নতুন কোনও দলের যে কথা উঠছে ১০০টা মুসলিম সিট জেতার মতো পরিস্থিতি আছে। নতুন দল হবে মুসলিমদের। তারা দাবি করবে উপমুখ্যমন্ত্রী চাই তাদের। পরের বার বলবে যে মুখ্যমন্ত্রী করবে মুসলিমকে, তাকে আমরা সাপোর্ট করব। মুখ্যমন্ত্রী সব জানেন।”
কে হবেন নতুন উপরাষ্ট্রপতি, জল্পনা তুঙ্গে

ভারতের উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা চলছে। যদিও সরকার বা ধনখড়ের তরফে এই বিষয় নিয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ মুখ খোলেনি। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। তবে অতীতেও জগদীপ ধনখড় এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য হয়েছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারত সফরে আসার আগে ধনখড়ের সঙ্গে সরকারের সংঘাত সামনে এসেছিল।সেসময় ধনখড় বলেছিলেন, ‘আমিও উপরাষ্ট্রপতি। আমি তাঁর সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করব।’ সূত্রের খবর অনুযায়ী, এরপর নাকি এক বর্ষীয়ান ক্যাবিনেট মন্ত্রী ধনখড়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁকে বোঝান, ভ্যান্স উপরাষ্ট্রপতি হলেও তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বার্তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে এসেছেন। তবে জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সরকারের সংঘাতের আরও নানান কারণ সামনে সামনে আসছে। বিভিন্ন সূত্র মারফত দাবি করা হচ্ছে, ধনখড় চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি মন্ত্রীদের অফিসে তাঁরও ছবি টাঙানো হোক। এমনকী উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে তাঁর জন্য মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি অন্তর্ভুক্তি করার দাবিও নাকি জানানো হয়েছিল। যদিও আদৌ তাঁর দফতর থেকে সরকারের কাছে এমন কোনও আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছিল কিনা জানা যায়নি। তবে সম্প্রতি ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জগদীপ ধনখড় তাঁর নিজের জন্য রাষ্ট্রপতির মতো প্রোটোকল চাইতেন। তিনি নাকি বিদেশ সফরে রাষ্ট্রপতির সমান প্রোটোকল প্রত্যাশা করেছিলেন। আর সে কারণেই ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির শেষকৃত্যে যোগ দিতে তেহরান সফরে গিয়ে নিজের হোটেলের ঘর নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন ধনখড়। এমনকী তিনি বলেছিলেন যে উপরাষ্ট্রপতির জন্য আরও বড় বিমান হওয়া উচিত। মোটের উপর উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে জগদীপ ধনখড়ের মনে হয়েছিল তাঁকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। আর সেকারণেই হয়তো উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে তাঁর এই আকস্মিক পদত্যাগ। তবে জগদীপ ধনখড় অবশ্য তাঁ ইস্তফার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন শারীরিক অসুস্থতা। যদিও জগদীপ ধনখড়ের উপরাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ ছিল ২০২৭-এর আগস্ট পর্যন্ত। ধনখড়ের আকস্মিক পদত্যাগের পর নতুন উপরাষ্ট্রপতির জন্য নির্বাচনী পক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভারতের নতুন উপরাষ্ট্রপতি কে হবেন, তা নিয়েও চলছে জোর আলোচনা। সম্প্রতি জেডিইউ নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামনাথ ঠাকুর এবং বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার মধ্যে একটি বৈঠক নিয়ে শুরু হয়েছিল গুঞ্জন। ধনখড়ের ছেড়ে যাওয়া শীর্ষ পদের জন্য বিজেপি জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুদের বিবেচনা করতে পারে বলেও অনেক সূত্র দাবি করছিল। তবে সেই সমস্ত জল্পনাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি তরফ থেকে জানানো হয়েছে, জেপি নাড্ডার সঙ্গে শরিক দলগুলোর এই বৈঠক নেহাতই রুটিন মাফিক। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই। তবে জগদীপ ধনখড়কে উপরাষ্ট্রপতি পদের বসিয়ে বিজেপিকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে, তাই নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিজেপি চাইবে দলের আদর্শের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এমন কোনও ব্যক্তিকে এই পদে বসাতে। সেক্ষেত্রে বিজেপির প্রবীণ কোনও নেতাকেই মনোনীত করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।