বেলেঘাটা খালে মেট্রো-পিলার নির্মাণের ফলে বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা, মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পুরসভার বৈঠক

শহরে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন সময় রাজ্য সরকারের নানা বিষয় নিয়ে বিতর্ক বাঁধে। দুই তরফের চাপানউতোরে সেই বিতর্ক কখনও কখনও সংঘাতেরও চেহারা নেয়। যদিও দুপক্ষের এই কলহ নতুন নয়। এবার বেলাঘাটা কানেক্টর মেট্রো সম্প্রসারণ নিয়ে কলকাতা পুরসভার নিকাশি কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলে সরব হলেন বেলেঘাটার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য জীবন সাহা। মেট্রো সম্প্রসারণের ফলে বেলাঘাটা খালের মাঝে মেট্রো পিলার নির্মাণকে কেন্দ্রে করে জল নিকাশি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলেই তাঁর অভিযোগ। ফলে একটু বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ছে পাশ্ববর্তী ওয়ার্ডগুলি। যার মধ্যে অন্যতম ওয়ার্ড কলকাতা পুরসভার মেয়র পরিষদ সদস্য ও স্থানীয় ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জীবন সাহার এলাকা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হচ্ছে বলেই তাঁর দাবি। তাই সমস্যার সমাধানের জন্য বুধবার দুপুরে মেয়র পারিষদ নিকাশি বিভাগের প্রধান তারক সিংহের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হয় ধাপা লকগেট পাম্পিং স্টেশনে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর ও মেয়র পারিষদ সদস্য জীবন সাহা, ডিজি শান্তনু ঘোষ, আরভিএনএল প্রতিনিধি সুভাষ বসু সহ একাধিক পুর-আধিকারিকরা। দীর্ঘক্ষণ বৈঠক শেষে মেয়র পারিষদ নিকাশি বিভাগের প্রধান তারক সিংহ জানান যে, এদিনের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। তিনি আরও জানান যে, “বেলাঘাটা খালে মেট্রো পিলারের জন্য কলকাতা পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। যার ফলে কলকাতা পুরসভার ৫৭ এবং ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। তাই আজকের বৈঠকে যান্ত্রিক সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় তারও একটা সুস্পষ্ট রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। তবে রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের প্রতিনিধি সুভাষ বসু সমস্ত রকমের সহযোগিতা আশ্বাস দিয়েছেন। আশাকরি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।” পাশাপাশি তিনি এও জানান যে, “বেলাঘাটা খালে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে জল এসে পড়ে। যার ফলে বেলাঘাটার খালের জল বেরোনোর যে ফ্লো আগে ছিল, তা অনেকটাই কমে গেছে। তবে আরভিএনএল(RVNL) আশ্বাস দিয়েছে যে তারা সেই সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।” তবে মেয়র পারিষদ নিকাশি বিভাগের প্রধান তারক সিংহ আশ্বস্ত করলেও, বৈঠকে তার ওয়ার্ডে মেট্রোর কাজের জন্য জলমগ্ন হয়ে যাওয়া নিয়ে একরাশ বিরক্তি এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র পারিষদ সদস্য তথা স্থানীয় কাউন্সিলর জীবন সাহা। বৈঠকের পর তিনি জানান যে, তার ওয়ার্ড এবং তার পাশ্ববর্তী ওয়ার্ডে বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। তাই আজকে বৈঠকের সিদ্ধান্ত যদি কার্যকরী হয় তাহলেই সমস্যার সমাধান হবে। কারণ এই অঞ্চলে নিকাশি ব্যবস্থা একেবারে ধীর গতিতে এগোচ্ছে। অন্য দিকে আরভিএনএল(RVNL)-এর পক্ষ থেকে এদিনের বৈঠকে উপস্থিত আধিকারিক সুভাষ বসু জানান যে, তাদের পক্ষ থেকে সমস্যার সমাধানের জন্য যা যা করণীয় সেটা তারা খুব শীঘ্রই করে দেবেন বলে আশ্বাস দিলেন তিনি। এমনীতেই শহরে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন সময় নানা বিষয়ে পুরসভার বিতর্ক বাঁধে । সেই বিতর্কেরই নতুন সংযোজন হল মেট্রোর কাজের জন্য বেলাঘাটা খালের নিকাশি ব্যবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। যার ফলে পাশ্ববর্তী অঞ্চলে জল জমা ও নিকাশি ব্যবস্থার সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে আরভিএনএল(RVNL)-এর আশ্বাসের ফলে সমস্যার কত দ্রুত সমাধান হয় এখন সেটাই দেখার।
ফরাক্কা এক্সপ্রেস থেকে ২৬৮টি কচ্ছপ উদ্ধার

ট্রেনে করে কচ্ছপ পাচার রুখতে বড়সড় সাফল্য পেল মালদা জিআরপি। ফরাক্কা এক্সপ্রেসে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হল ২৬৮টি কচ্ছপ। যদিও এই ঘটনায় জিআরপি কাউকে আটক বা গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে বুধবার সাতসকালে এত বিপুল সংখ্যক কচ্ছপ উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় মালদা টাউন স্টেশনে। ঘটনা প্রসঙ্গে মালদা টাউন স্টেশনের জিআরপির আইসি প্রশান্ত রায় জানান, তারা গোপন সূত্রে খবর পান দিল্লি থেকে আগত ফরাক্কা এক্সপ্রেসে করে কচ্ছপ পাচার করা হচ্ছে। সেই খবরের ভিত্তিতে ট্রেনটি বুধবার সকাল ৯টা বেজে ৫০ মিনিটে মালদা টাউন স্টেশনে ঢোকামাত্রই তারা ট্রেনে তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। ওই সময় ট্রেনের এক জেনারেল কামরা থেকে কচ্ছপ বোঝাই পাঁচ-পাঁচটি বস্তা উদ্ধার করেন। সেই বস্তাগুলি থেকে উদ্ধার হয় ২৬৮টি কচ্ছপ। প্রাথমিক তদন্তে তাঁর অনুমান, কচ্ছপগুলি উত্তরপ্রদেশ থেকে বালুরঘাটে পাচারের উদ্দেশ্যে আনা হচ্ছিল।মালদা টাউন স্টেশনে ফরাক্কা এক্সপ্রেস থেকে ২৬৮টি কচ্ছপ উদ্ধারের পরপরই জিআরপির পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় মালদা বনদপ্তরে। সেই খবর পেয়ে স্টেশনে ছুটে আসেন মালদা ডিভিশনের ফরেস্ট বিট অফিসার প্রদীপ গোস্বামী। ওই সময় জিআরপির পক্ষ থেকে উদ্ধার ২৬৮টি কচ্ছপ বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যার মধ্যে ৮৯টি কচ্ছপ মৃত বলে জানায় বনদপ্তর। বাকি কচ্ছপগুলিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কটুক্তি, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের

সামাজ মাধ্যমে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য নিয়ে কটূক্তি করায় কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ও অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করল তৃণমূল কংগ্রেসের এক কর্মী। যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই অঞ্চল সভাপতি। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের রনঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকার। রনঘাট অঞ্চল যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সম্রাট মণ্ডলের গত রবিবার রাতে সোস্যাল সাইটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেই ভিডিওতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কটুক্তি করে একটি কমেন্ট করেন বাগদার আঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ গৌতম মণ্ডল। এই বিষয়টি নজরে আসতেই রনঘাট অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী ডহরপোতা গ্রামের বাসিন্দা শুভেন্দু বিশ্বাস মঙ্গলবার রাতে বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের অঞ্চল সভাপতি গৌতম মন্ডল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে যে কুরুচিকর মন্তব্য করেছে তাতে আমাদের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। আমি ইতিমধ্যেই বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি । আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অঞ্চল সভাপতিকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে প্রশাসনিক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি গৌতম মণ্ডল জানিয়েছেন, “আমি ১৪ বছরের অঞ্চল সভাপতি। এই ধরনের পোস্ট করব এটা অভাবনীয় এবং অকল্পনীয়। আমার মোবাইল বিভিন্ন লোক ব্যবহার করে। আমার মোবাইল ব্যবহার করে যদি কেউ বা কারা এই ধরনের মন্তব্য করে থাকে তাহলে আমি দুঃখিত, ক্ষমাপ্রার্থী। পরিকল্পিতভাবে আমাকে অপরাধী সাজানোর জন্য আমার মোবাইল থেকে এসব পোস্ট করা হয়েছে।”
সরকারি কর্মচারীদের জন্য দারুণ সুখবর! চালু হতে চলেছে অষ্টম পে কমিশন

বর্তমানে প্রায় ১ কোটিরও বেশি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগী রয়েছে। তাদের জন্য গত বছরের জানুয়ারিতে অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের কথা ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। কিন্তু তা কবে থেকে কার্যকর হবে তা নিয়ে এতদিন নানা আলোচনা হচ্ছিল। অষ্টম পে কমিশন নিয়ে অনেকদিন ধরে নানা জল্পনা-কল্পনা হাওয়ায় ভাসছিল। অবশেষে এল নতুন আপডেট— যা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের জন্য নিঃসন্দেহেই খুশির খবর। জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। যা সরকারি কর্মচারীদের বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধাগুলির পর্যালোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপই বলা যায়। কমিশন গঠিত হওয়ার পর সব দিক খতিয়ে দেখে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সরকারের কাছে তাদের সুপারিশ সম্বলিত রিপোর্ট পেশ করবে। এই রিপোর্টে বেতন বৃদ্ধি, ভাতা সংশোধন, পেনশন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত প্রস্তাব থাকবে। সাধারণত প্রতি ১০ বছর অন্তর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হয়। সেক্ষেত্রে সপ্তম বেতন কমিশন যেহেতু কার্যকর হয়েছিল ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি, তাই মনে করা হচ্ছে অষ্টম বেতন কমিশনও ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে পারে। তবে, এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি বা বেতন কমিশন গঠন সম্পর্কিত বিশদ কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশগুলি কার্যকর হলে স্বাভাবিক ভাবেই সরকারের উপর এর বড় আর্থিক প্রভাবও পড়বে। তাই ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষের বাজেটে যে এর প্রতিফলন দেখা যাবে, তা একপ্রকার নিশ্চিত।
ভরা বর্ষায় নাট্যোৎসব! তাও আবার কলকাতা নয়, মফস্বল শহরে

সাধারণত আমরা বাঙালিরা শীতকালের মিঠে হিমেল হাওয়ায় এতদিন শহর এবং মফস্বলের বিভিন্ন জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাট্যোৎসব দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু ভরা বর্ষায় নাট্যোৎসব! কী অবাক হয়ে গেলেন তো? তাও আবার শহর কলকাতায় নয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের মতো একটি মফস্বল শহরে। জয়নগর মজিলপুর সুভাষ বসু নাট্যচর্চা কেন্দ্র ‘এষণা’র ৫৮ তম বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জয়নগর শিবনাথ শাস্ত্রী সদনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নাট্য উৎসব ২০২৫। এই উৎসবের শুভ সূচনা করেন জয়নগর মজিলপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান। গুণিজন সম্বর্ধনা ও স্থানীয়দের নাচ-গান-আবৃত্তি সহযোগে দশ দিনের এই উৎসব ছিল এক কথায় বর্ণময়। বর্ষার প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করেও প্রায় প্রতিদিনই দর্শকাসন ছিল পরিপূর্ণ। এই নাট্যোৎসবে দুই ২৪ পরগনা ছাড়াও কলকাতা-সহ একাধিক জেলার বিভিন্ন নাট্যদল অংশগ্রহণ করেছিল। এই বর্ষার মধ্যে এত দর্শকের সমাগমে খুশি তারাও। সমাপ্তি অনুষ্ঠানের দিন উপস্থিত ছিলেন জয়নগরের বিধায়ক। তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আয়োজন সংস্থাকে, দশ দিনের এই বর্ণময় আয়োজনের জন্য। এমনকী পাশে থাকার আশ্বাসও দেন তিনি। অন্যদিকে আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকেও এই নাট্যোৎসবকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়। সব মিলিয়ে মফস্বল শহরে এহেন আয়োজন সত্যিই দৃষ্টিনন্দন।
সময় যখন আসবে ‘আওয়ামী লীগ আইলো’ বললে ‘লাল-স্বাধীনতাওয়ালারা’ পালাবে

সীতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক: জুলাই ৩৬ কোনও বিপ্লব ছিল না, এটি ছিল একটি ষড়যন্ত্র। ড. ইউনূস সরকারের কোনও আইনগত বৈধতা নেই, এটি অবৈধ সরকার। গোপালগঞ্জ ঘটনার পর ড. ইউনূসের পদত্যাগ করা উচিত, তার হাত রক্তে রঞ্জিত। ৮ আগস্টের পর সকল হত্যাকাণ্ডের জন্যে বাংলাদেশে ড. ইউনূসের বিচার হবে তা প্রায় নিশ্চিত। মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে ড. ইউনূস রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছেন। গত এক বছরে ড. ইউনূস সরকারের কোনও অর্জন নেই, তবে ‘তুমি কে, আমি কে, জঙ্গি, জঙ্গি’–ইউনূস জঙ্গিদের নেতা এবং তিনি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ কায়েম করেছেন, এটি তাঁর অর্জন। মব ভায়োলেন্স ইউনূস সরকারের একমাত্র পন্থা, ড. ইউনূস সেটিকে আর্মি ভায়োলেন্স-এ পরিণত করেছেন। দেশের সেনাবাহিনী-নৌবাহিনী এখন গোপালগঞ্জে নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। বুট চাপা দিয়ে মানুষ হত্যা, লাশকে টেনে-হিঁচড়ে ট্রাকে তোলা, ‘গুলি চালা-চালাইছি স্যার’– এসবই সেনাবাহিনী ও ড. ইউনূস সরকারের সাফল্য। আওয়ামী লীগ সরকারের দোষের অন্ত নাই, তারা ১৭ বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার লুট করেছে। বর্তমান সরকার ১০ মাসে ২০ বিলিয়ন ডলার খেয়ে ফেলেছে, এটি তাদের সাফল্য। আওয়ামী লীগ সরকার স্বৈরাচার হলে ইউনূস সরকার স্বৈরাচারের বাপ। আওয়ামী লীগ ৭৭ বছরের একটি পুরোনো দল, এর ভিত্তি দেশের মাটির ভেতরে প্রোথিত, এঁরা মাটি ফুঁড়ে বের হয়। ১৯৭৫ ও ২০০১-২০০৫-এ আমরা তা দেখেছি। আওয়ামী লীগের গত ১৭ বছরের শাসনকালের নেতারা হয়তো হারিয়ে যাবেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ থাকবে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে ইউনূস সরকার যা করছে তা আমাদেরকে পাকিস্থানী আমলের কথা মনে করিয়ে দেয়? ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগকে ব্যান্ড করেছিল, আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন করে ফিরেছে। এবার নিষিদ্ধের পর হয়তো আর একবার দেশ স্বাধীন করে দেবে। একটা সময় আসবে যখন ‘আওয়ামী লীগ আইলো’ বললে ‘লাল-স্বাধীনতাওয়ালারা’ পালানোর জায়গা পাবে না। সদ্য জামাত একটি বড় সমাবেশ করেছে বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। বাংলাদেশে টাকা দিয়ে বড় সমাবেশ করা কোনও ব্যাপার না। প্রফেসর ইউনূস তো বিদেশী মাধ্যমে বলেই দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে টাকা দিয়ে ভোট বেচাকেনা হয়? নোবেল বিজয়ীর কথা সত্য হলে দেশে টাকা ও বিরিয়ানি দিয়ে লোকও আনা যায়? জামাতের মাদ্রাসার ছাত্ররা আছে, জঙ্গিরা আছে, টাকা আছে, বিরিয়ানি আছে, লোক তো হবেই। তবে সুষ্ঠু ভোট হলে ৩-৪%-ই থাকবে। এজন্যেই জামাত নির্বাচন চায় না, কারণ তারা এ অবৈধ সরকারের অংশ। তবে তারা ‘পিআর’ নামক নুতন এক ‘কৌশল’ আমদানি করতে চাইছে, যাতে ৩-৪% ভোট পেলেও ৯/১২জন এমপি পেতে পারেন? জনগণ অবশ্য এদের চালাকি বুঝে গেছে, তাই ওতে কাজ হবে না। নির্বাচনে জয় না পেলে নির্বাচন কেন, তাই জামাত-এনসিপি নির্বাচন বানচালের নুতন ষড়যন্ত্র করছে, গোপালগঞ্জ আক্রমণ যার অংশ। বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়া খানের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘তিনি আমার কথা শুনলেন না, তিনি শুনলেন ভুট্টো সাহেবের কথা’– বিখ্যাত ডায়লগ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরকারের বেতনভুক কর্মচারী, তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব ছিল শেখ হাসিনা সরকারকে রক্ষা করা, তাঁরা উল্টোটা করেছেন, তারা শেখ হাসিনার কথা শোনেননি, তারা শুনেছেন ভলকার টার্ক ও ডোনাল্ড লু-র কথা। কারণ জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে চাকরি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে চাকরি রক্ষার জন্যে এঁরা সীমান্ত ছেড়েও চলে আসতে পারে। সেনাবাহিনীতে চাকরির মূল লক্ষ্য কি জাতিসংঘ বাহিনীতে চাকরি? সামনে নির্বাচিত সরকার এলে এটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার। সেনাবাহিনীর বেতন বাড়িয়ে এটি বন্ধ হওয়া উচিত। এবার গোপালগঞ্জ হত্যাযজ্ঞের পর সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি অনেকটা ক্ষুণ্ন হয়েছে, অসংখ্য অভিযোগ গেছে। বলা হচ্ছে, যারা নিজদেশে নিরস্ত্র জনগণকে হত্যা করতে পারে, তাঁরা কিভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনিতে যাবে।