পেরিয়েছে ৩২ বছর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন বাঁচিয়ে খুইয়েছেন চাকরি, কিন্তু আজও তা ফেরত পাননি

আর ঠিক দুইদিন পর তৃণমূলের ঐতিহাসিক শহীদ সমাবেশ একুশে জুলাই। আর এই দিনটি আসলেই প্রতিবছর নতুন করে আশায় বুক বাঁধেন সিরাজুল হক মণ্ডল। ১৯৯৩-এর ২১শে জুলাই কলকাতা পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী। না। গোবরডাঙ্গার বাসিন্দা সিরাজুল সেদিন সেই মিছিলে পা-ও মেলাননি। পুলিশের গুলিতে আহত হননি। তাহলে কেন? কেন প্রতিবছর এই দিনটিতে আশায় বুক বাঁধেন সিরাজুল হক মণ্ডল? আসলে সেদিন কলকাতার রাজপথে ঘটে যাওয়া রক্তাক্ত দিনে তার হাতেই বদলে গিয়েছিল একজন মানুষের ভাগ্য। তিনি আর কেউ নন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী তথা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেদিনের সেই ঘটনার জন্য এখনও আফশোস করেন তিনি। তবে সেদিনের স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বল করছে সিরাজুলের স্মৃতিতে। এখনও যেন চোখ বুঁজলে দেখতে পান ৩২ বছর আগের সেই ঘটনা। তৎকালীন কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মহাকরণের দিকে মিছিল এগোচ্ছিল। কলকাতা পুলিশের তরুণ কনস্টেবল সিরাজুল তখন হাতে মাস্কেট বন্দুক নিয়ে ডিউটিতে। সেই সময় হঠাৎই পুলিশের কাছে সেই মিছিলে লাঠিচার্জের নির্দেশ আসে। নির্দেশ দেন তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার দীনেশ বাজপেয়ী। তবে ঊর্ধ্বতন অফিসারের সেই নির্দেশ পালন না করে পাল্টা যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাণ বাঁচাতে নিজের সার্ভিস রিভলভার বের করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর দিকে তা তাক করে সিরাজুল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁচাতে অফিসারকে বলেন “স্যার! এই অত্যাচার থামান, না হলে আমি পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হব”। তবে রক্তাক্ত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন সিরাজুলের কারণে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন তিনি। বাম আমলে নিজের কর্তব্য অবহেলার কারণে হারাতে হয় পুলিশের চাকরি। বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। এরপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। ২০১১ সালে সেই বামেদের সরিয়ে ক্ষমতায় আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশা ছিল এবার হয়তো নিজের চাকরিটা ফেরত পাবেন তিনি। বারংবার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরও এখনও মেলেনি চাকরি, আজও যেন তাই জীবন্ত শহীদ হয়েই দিন কাটাচ্ছেন সিরাজুল। আশায় কখনও কালীঘাটে, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে, কখনও নবান্নে ছুটে গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা হয়েছে বেশ কয়েকবার। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ফেরত পাননি চাকরি। তবে কেন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশও কার্যকর হল না? এখনও সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজে যাচ্ছেন কলকাতা পুলিশের এই কর্মী। গাইঘাটার ভাঙাচোরা বাড়িতে বসে সিরাজুলের বক্তব্য, “সেদিন নিজের কর্তব্যের থেকেও মানবিকতাকে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। তার ফল এখন ভোগ করছি। ২০১৮ সালে ফিরহাদ হাকিম ডেকে চাকরি ফেরত দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। ২০১৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটে ডেকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলেন। পুলিশ দফতরও তো উনার হাতে। উনি আমার চাকরি ফেরত দেওয়া হবে বলে নির্দেশও দেন। তারপরও কিছুই হয়নি।” আর এখানেই তাঁর প্রশ্ন, “কেমন নির্দেশ দিলেন যে মুখ্যমন্ত্রী বলার পরও আমার চাকরিটা ফেরত পেলাম না?” না ৩২ বছর পর আজও তার সেই চাকরি ফিরে পাওয়ার কোনও নির্দেশই এসে পৌঁছয়নি গাইঘাটা থানার ইছাপুর ১নং পঞ্চায়েতের ভদ্রডাঙার টিনের বাড়িতে। বৃদ্ধা মা ও প্রতিবন্ধী বোনকে নিয়ে দিনমজুরির কাজ করে কোনও রকমে সংসার চলে। তবে আশা এখনও ছাড়েননি তিনি। প্রতিবার ২১ শে জুলাই আসলে আশায় বুক বাঁধেন— ‘যদি ডাক আসে।’ সিরাজুলের আক্ষেপ, “নবান্নে ডেকে আমার সঙ্গে ছবি তুলে উপহার দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই উপহার এখনও পড়ে আছে। উনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সে প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। তাহলে কেন আমাকে ডেকে এভাবে অপমান করলেন মুখ্যমন্ত্রী? চাকরি যদি ফেরত নাই দিতে পারেন তাহলে কেন আমাকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিলেন?” এই প্রশ্নের এখন উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, থুড়ি যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন বাঁচানো সিরাজুল হক মণ্ডল।
নির্বাচন-পরবর্তী হিংসায় বিজেপি কর্মী হত্যার অভিযোগে তিন পুলিশকর্মী সহ তৃণমূল কর্মীকে জেলে পাঠাল আদালত

২০২১ সালে ভোট পরবর্তী হিংসায় কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে করা ব্যবস্থা নিল আদালত। শুক্রবার সিবিআই-এর বিশেষ আদালত ৩ পুলিশ কর্মী এবং একজন তৃণমূল কর্মী সহ মোট ৪ জনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ৪ অভিযুক্ত – নারকেলডাঙ্গা থানার প্রাক্তন অফিসার-ইন-চার্জ শুভজিৎ সেন, তৎকালীন সাব-ইন্সপেক্টর রত্না সরকার, হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথ এবং তৃণমূল কর্মী সুজাতা দে – কে ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে শুভজিৎ সেন ইতিমধ্যেই অবসর গ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মে মাসে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী যে হিংসা হয়, প্রথম থেকেই সেই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। বিজেপি’ র সক্রিয় সদস্য অভিজিৎ সরকারকে নির্বাচনের ফলাফলের দিনই খুন করা হয়। অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই মামলার সাথে যুক্ত থাকা ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে সিবিআই চার্জশিট দাখিল করে। কয়েকদিন পরই এই গ্রেফতারের নির্দেশ দিলো বিশেষ সিবিআই আদালত। প্রথমে ৩ জন পুলিশ কর্মীর নাম প্রথমে চার্জশিটে না থাকলেও । তবে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হয়ে তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন। সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারপতি রোহন সিনহার পর্যবেক্ষণ ” রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে সমাজের কি হবে? ” পাশাপাশি এদিন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তা শুভজিৎ সেনের আইনজীবীকে বিচারপতি গ্রোহন সিনহা জানতে চান,” আপনার মক্কেল ঘটনার উনিশ দিন পর কিভাবে আইসি থেকে এসিপি হলেন? ” অর্থাৎ পুলিশের বিরুদ্ধে এই ঘটনার যে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ বারবারই মৃতের পরিবার তুলছিল তাতে কার্যত শিলমোহর দেন বিচারপতি সিনহা। তবে এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন খুন হওয়া অভিজিৎ সরকারের ভাই বিশ্বজিৎ সরকার। তিনি বলেন, ” অভিযোগে নাম থাকা সত্ত্বেও, দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে কখনও হেফাজতে নেওয়া হয়নি বা কলকাতা পুলিশ তদন্ত করেনি, বরং তাকে পদোন্নতি দিয়েছে,” এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এই রায় থেকে সেইসব পুলিশ কর্মীদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ তারা এখন সংবিধান পরিবর্তে তৃণমূলের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।” ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজনৈতিক খুনের তদন্ত শুরু হয়, গোটা ঘটনার পেছনে তৃণমূলকে দায়ী করে বিজেপি। যদিও প্রথম দিন থেকে এই অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস অস্বীকার করে এসেছে। এই ঘটনায় মানিকতলার বিধায়ক পরেশ পাল, মেয়র পরিষদ স্বপন সমাদ্দার ও স্থানীয় কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষ কেউ হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে হাইকোর্টে আগাম জামিনের মামলা চলায় এই তিনজনের কেউই এদিন আদালতে হাজিরা দেননি।
আজ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি নির্যাতনের প্রতিবাদ রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তথা তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী ওই দিন কলেজ স্ট্রিট থেকে ডোরিনা ক্রসিংয় পর্যন্ত মিছিলে পা-ও মেলান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিছিলের শেষে প্রতিবাদ সভাও করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভা থেকে বিজেপি বিরুদ্ধে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার পাশাপাশি উঠে আসে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রসঙ্গও। এমনকী তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই মঞ্চে সিমিআইএমকে খোঁচা দিলেও কংগ্রেস নিয়ে তৃণমূল নেত্রী কোনও কথাই বলেননি। যার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল, তবে কি কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব ঘোঁচাতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন পর তৃণমূল নেত্রীর মুখে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রসঙ্গ উঠতেই আবারও নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সামনে লোকসভার বাদল অধিবেশন। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে আবারও এককাট্টা হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। সেসব কথা মাথায় রেখে আজ, অর্থাৎ শনিবার সন্ধে ৭টায় জোটের বৈঠক হওয়ার কথা। লোকসভা ভোটের পর এই প্রথম ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠকে অংশ নিচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূলের তরফে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দেবেন এই বৈঠকে। প্রথমে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের দিল্লির বাসভবনে এই বৈঠক হওয়ার কথা হলেও, পরে তৃণমূলের ২১ জুলাই সমাবেশ সহ অন্যান্য শরিক দলের নেতাদের কিছু অসুবিধার কারণে ঠিক হয়— ‘ইন্ডিয়া’ জোটের এই বৈঠক ভার্চুয়ালি হবে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, ডিএমকে প্রধান তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা উদ্ধব ঠাকরেরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, শনিবারের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠকে তাঁরা যোগ দেবেন। স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রের বিরোধীদের নিয়ে এই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠক রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলেই বিশ্লেষকদের মত। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি মামলা এবং অপারেশন সিঁদুরের পর এই প্রথম হতে চলা বাদল অধিবেশনে মোদী সরকারকে চাপে রাখতে কৌশল সাজানোর বিষয়েও কথা হতে পারে এই বৈঠকে। যাতে করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধিতার প্রশ্নে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের দলগুলি এককাট্টা হয়ে সরব হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আজ বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কী অবস্থান নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাও লক্ষ্যণীয়। কেননা জাতীয় প্রেক্ষাপটে নতুন কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয় কিনা এই বৈঠকে, সেটাই দেখার। আর সমীকরণ তৈরি হলেও তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকা কেমন হবে, তাও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সব মিলিয়ে সামনে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক ভাবে এই বৈঠক যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার বিএসএফ কনস্টেবল

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জমি এবং গাড়ি কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক মহিলার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ । অভিযুক্তের নাম মোহাম্মদ নিষাদ আলী পেশায় তিনি বিএসএফ কনস্টেবল। অভিযুক্ত কনস্টেবল দীর্ঘদিন ধরেই নিউটাউনের সাপুজি এলাকায় এইভাবে প্রতারণা করছিলেন বলে অভিযোগ। টেকনোসিটি থানায় একাধিক মহিলা অভিযোগ দায়ের করলে, পুলিশ তদন্তে নেমে অবশেষে অভিযুক্ত কনস্টেবলকে নিউটাউন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। আজ তাকে বারাসাত মহকুমা আদালতে তোলা হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারক কনস্টেবল বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন মহিলাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আবার কাউকে জমি বা গাড়ি কিনে দেওয়ার নাম করে বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে টেকনোসিটি থানার পুলিশ।
আইআইএম জোকা ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে বাড়ছে রহস্য

গত ১১ জুলাই রাতে আইআইএম(IIM) হোস্টেলে কাউন্সেলিংয়ের নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন এক তরুণী। এরপর ওই তরুণী হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ জানানোয় গ্রেফতার করা হয় ওই কলেজেরই দ্বিতীয় বর্ষের এক পড়ুয়াকে। যদিও ঘটনার পরের দিন নির্যাতিতার বাবা দাবি করেন ওই দিন ধর্ষণের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। ওই কলেজ পড়ুয়া ছাত্রটি তাঁর মেয়ের পূর্ব পরিচিত। তাঁর মেয়ে একটি ছোট দুর্ঘটনার কারণে পায়ে ব্যথা পায়, ফলে ওই ছাত্রটিই তাকে তার হোস্টেলে নিয়ে যায়। এমনকী ওইদিন নির্যাতিতার বাবা পাল্টা অভিযোগ করেন, হরিদেবপুর থানাই বরং তাঁর মেয়েকে দিয়ে মিথ্যে ধর্ষণের মামলা লিখিয়ে নিয়েছে। এই ঘটনায় ধর্ষণের অভিযোগ উঠলেও নির্যাতিতা তরুণী মেডিকেল টেস্ট করাতে রাজি হয়নি। এবার পর পর দুদিন আদালতে গোপন জবানবন্দি দিতে গরহাজির থাকায় জোকাকাণ্ড নিয়ে রহস্য ক্রমশই আরও বাড়ছে। আইআইএম জোকা ধর্ষণকাণ্ডে গত সোমবার এবং মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে নির্যাতিতা তরুণীর গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা এড়িয়ে যান। এরপর গত শুক্রবার মেয়েটিকে গোপন জবানবন্দির জন্য আবারও ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু এ দিনও তিনি গরহাজির ছিলেন। এই তিন তিনদিন তরুণীর অনুপস্থিতি নিয়ে এই কেসে ধোঁয়াশা ক্রমশই বাড়ছে। অন্যদিকে শনিবার অভিযুক্ত পড়ুয়ার পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই আজ তাঁকে ফের আদালতে পেশ করা হবে। সেক্ষেত্রে নির্যাতিতা তরুণী যদি এভাবে অনুপস্থিত থাকেন তাহলে এই কেসের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। যদিও এই ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই বিরোধীরা প্রায় একযোগে শাসক দলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে আসছে। তাদের অভিযোগ, সম্পূর্ণ ভয় দেখিয়ে প্রকৃত সত্য আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার অচলায়তন নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেন বিরোধীরা। তাদের আরও অভিযোগ, শাসক দলের মদতেই নাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে।