‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ প্রতারণায় দেশের প্রথম সাজা রানাঘাটে, ৯ জনের যাবজ্জীবন

সাইবার-অপরাধের বিরুদ্ধে সারা দেশে নজির গড়ল রানাঘাট পুলিশ জেলা। কীভাবে? শুরু থেকে শুরু করা যাক। ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’, অতঃপর সেই অ্যারেস্ট-এর হাত থেকে বাঁচতে বিপুল পরিমাণ অর্থব্যয়, এবং তারপর পুলিশে অভিযোগ। গত বছরের ৬ নভেম্বর। রানাঘাট পুলিশ জেলার অন্তর্গত কল্যাণী সাইবার থানায় জমা পড়ে অভিযোগ। প্রতারিত ব্যক্তি জানান, মুম্বই পুলিশের এক আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে তাঁকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে এক জালিয়াত, এবং রেহাই পাওয়ার আশায় সেই ‘পুলিশ অফিসারের’ নির্দেশমতো ১ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করে দেন তিনি। এই পর্যন্ত ঘটনাবলী চেনা পথেই এগোচ্ছে, তাই তো? আপনারা প্রায় সকলেই জানেন, ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে কিছু হয় না। কিন্তু বহুল প্রচার সত্ত্বেও এই প্রতারণার ফাঁদে পড়েই চলেছেন অনেকেই। আরও অনেক মামলার মতোই এই মামলাটিও অনির্দিষ্টকাল চলতে পারত, শেষমেশ হয়তো জালিয়াতির টাকা উদ্ধারও হতো, কিন্তু শাস্তি হত না অপরাধীদের। কারণ সাইবার জগতে অপরাধীদের ‘ট্র্যাক’ করা খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজার চেয়েও দুরূহ। কিন্তু এখানেই বদলে গেল ছবি। তদন্তকারী অফিসার সাব-ইন্সপেক্টর দেবারুণ দাস ও তাঁর টিম নামলেন ছক ভাঙার খেলায়। তদন্তে প্রকাশ পেল, যে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে ফোন এসেছিল প্রতারিতের কাছে, তার অবস্থান দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কাম্বোডিয়ায়। অথচ সিম কার্ড জারি করেছে একটি ভারতীয় মোবাইল পরিষেবা সংস্থা, এবং কাম্বোডিয়ায় বসেও পরিষ্কার বাংলা ও হিন্দিতে কথা বলছে ফোনের মালিক। শুধু তাই নয়, যেসব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করেন প্রতারিত, সেগুলির মালিকও সবাই ভারতীয়। সেই শুরু। প্রযুক্তির সাহায্যে এরপর সামনে আসে আরও অসংখ্য তথ্য, এবং এক মাসের বেশি সময় ধরে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে হানা দিয়ে অবশেষে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, গুজরাট এবং রাজস্থান থেকে দেবারুণ ও তাঁর টিম গ্রেফতার করেন মোট ন’জন অভিযুক্তকে। জানতে পারেন, এই ন’জনের নামে জাতীয় স্তরে জমা পড়েছে ১০০-র বেশি অভিযোগ, এবং এরা জালিয়াতি করে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকেই এদের ‘রোজগার’ প্রায় ৬ কোটি! তদন্ত চলাকালীন সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ প্রামাণ্য তথ্য গুছিয়ে চার্জশিট দাখিল করার পাহাড়প্রমাণ কাজটিও নিখুঁতভাবে সম্পন্ন হয়। ফলে— ভারতে এই প্রথম ডিজিটাল অ্যারেস্ট সংক্রান্ত কোনও মামলা পৌঁছোয় আদালতে বিচারপর্ব পর্যন্ত। এবং এখানেই শেষ নয়, বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর শ্রী বিভাস চ্যাটার্জির তত্ত্বাবধানে মাত্র সাড়ে চার মাসে সম্পন্ন হয় বিচারপর্ব। মামলার রায় বেরিয়েছে আজ। শাহিদ আলি শেখ, শাহরুখ রফিক শেখ, যতীন অনুপ লাডওয়াল, রোহিত সিং, রূপেশ যাদব, সাহিল সিং, পাঠান সুমাইয়া বানু, এবং অশোক ফালদু-কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রাস্তায় নেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুংকার দিলেও অনুপ্রবেশ যে বন্ধ হবেই, সাফ জানালেন মোদী

একদিকে যখন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে কাজ করতে যাওয়া বাঙালিদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল কংগ্রেস। ঠিক সেই সময় বাংলায় দাঁড়িয়ে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে কঠোর বার্তা দিলেন আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার এই ইস্যুতে ধর্মতলায় সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেন প্রতিবাদ মিছিলও । আর দুর্গাপুরে দাঁড়িয়ে অনুপ্রবেশ নিয়ে যে কোনো আপোষ নয় তা স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার দুর্গাপুরে দলীয় সভা মঞ্চ থেকে তৃণমূলকে টার্গেট করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ” তৃণমূল নিজের স্বার্থে বাংলাকে অসম্মানিত করছে। রাজ্যের সম্মানকে মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে। এই করে আসলে অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে ফন্দি আটছে। অনুপ্রবেশকারীদের দেশে কোন স্থান নেই কোন জায়গা নেই যে ভারতের নাগরিক নয় বেআইনি প্রবেশ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সংবিধান মেনে বর্তমানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনে রাখবেন এটা মোদীর গ্যারান্টি।” তিনি আরও বলেন,” টিএমসি নিজের স্বার্থের জন্য অনুপ্রবেশকারীদের নকল কাগজ বানিয়ে দিচ্ছে। দেশের সুরক্ষার জন্য এটি খুবই বিপজ্জনক। দেশের সাংবিধানিক সংস্থাগুলিকেও আক্রমণ করছে টিএমসি। যে ভারতের নাগরিক নয়, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ভারতের সংবিধান অনুযায়ী। যে কোনও ধরণের চক্রান্ত বিজেপি সফল হতে দেবে না। বাংলার ডবল ইঞ্জিন সরকার প্রয়োজন। ” উল্টে তৃণমুলের আমলে এই বাংলায় বাঙালিরা আক্রান্ত বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি এই রাজ্যে মহিলারাও যে সুরক্ষিত নয় বলে দাবী করেন নরেন্দ্র মোদী। বাংলার হাসপাতাল ডাক্তার তরুণীর উপর অত্যাচার হয়েছে। অভয়া কাণ্ড মনে করালেন মোদি। বললেন, “কীভাবে তৃণমূল অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে?” কসবা কাণ্ডও উঠে এলো মোদির বক্তব্যে। বললেন, “এক কলেজে এক তরুণীর উপর ভয়ংকর অত্যাচার হয়েছে। অভিযুক্তের তৃণমূলের যোগ মিলেছে। এগুলোই তৃণমূলের নির্মমতার সাক্ষী।” বাংলাকে এই নির্মমতা মুক্ত করার ডাক দিলেন মোদি।
তাহলে কি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছেন দিলীপ? লাগাম দেওয়া হল তার মুখে

তাহলে কী লাগাম পরানো হচ্ছে দিলীপের পায়ে? একদিকে যখন রাজ্যের প্রায় সমস্ত নেতাই হাজির দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায়। ঠিক তখনই দিল্লি উড়ে গেলেও দেখা পেলেন না জয় প্রকাশ নাড্ডার। যদিও পরে বিকেলে ফের সর্ব ভারতীয় সভাপতির বাংলোয় যান তিনি। সূত্রের খবর, সেখানেই কার্যত দিলীপের মুখে প্রায় একপ্রকার লাগাম পরানোর বন্দোবস্ত করে ফেলল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের সঙ্গে বহুদিন ধরেই কিছুটা হলেও দূরত্ব বাড়ছিল প্রাক্তন সভাপতির। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে সস্ত্রীক যাওয়ার পর থেকেই সেই দূরত্ব আরো বৃদ্ধি পায়। বিজেপির অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায় রাজ্য বিজেপিতে কার্যত শুভেন্দু-সুকান্ত বিরোধী বলেই পরিচিত দিলীপ। নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য রাজ্য বিজেপির সভাপতি হবার পর সেই দূরত্ব কিছুটা হলেও ঘুঁচবে বলে মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল। তবে দুর্গাপুরের সভায় তার অনুপস্থিতি যেন অনেক বার্তাই দিয়ে গেল। দলের তরফে তাকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে দাবি করলেও তৎক্ষণাৎ তা খারিজ করে দেন দিলীপ। তবে এটাও জানিয়ে দেন মঞ্চে জায়গা না হলে নিচে দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে বসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনবেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। দিলীপ ঘোষ সূত্রের খবর, শীর্ষ নেতৃত্ব নাকি তাকে ডেকে পাঠিয়েছে। শুক্রবার সকাল ১২টা ৩০ মিনিটে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার বাংলোই গিয়ে দেখা পাননি। পরে বিকেলে ফের আরো একবার সঙ্গে দেখা করতে গেলে প্রায় এক ঘণ্টা তাদের মধ্যে বৈঠক হয় বলেই সূত্রের খবর। সেই বৈঠকেই দিলীপের মুখে লাগাম টানার কথা বলেন জেপি নাড্ডা। সূত্রের খবর ঘণ্টা খানেকের সেই বৈঠকে দিলীপ ঘোষকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তিনি যেভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে দলের একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বেফাঁস মন্তব্য করছেন তা কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিশেষ করে একুশে জুলাইয়ে তৃণমূলের মঞ্চে তিনি যে যাচ্ছেন না তাও এখনো স্পষ্ট করে সংবাদ মাধ্যমকে জানাননি তিনি, যার ফলে বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটি যথেষ্টই ক্ষুব্ধ তার উপর। বৈঠকের পর দিলীপ ঘোষের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, “ঘন্টাখানেক কথা হল অনেক গল্প হয়েছে।” তবে এই ঘটনার কষ্ট রয়ে গেল— তিনি একদা বিজেপির দাবাং নেতা থাকলেও, শুভেন্দু-সুকান্তর সময়ে গুরুত্বহীন হয়ে থাকা দিলিপ শমীক ভট্টাচার্যের আমলেও যে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ থাকবেন তেমনটাও তো মনে হয় না। অন্তত আজকের ছবিটা তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
তামান্না এবং অভয়ার জন্য পাল্টা সভা কংগ্রেসের

বিজেপির পর এবার কংগ্রেস। ২১শে জুলাই পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিল মুর্শিদাবাদ জেলা যুব কংগ্রেস। শুক্রবার বহরমপুরে জানালেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ২১শে জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের ‘গ্র্যান্ড ইভেন্ট’। অর্থাৎ শহীদ দিবস পালন। যার পাল্টা হিসাবে ইতিমধ্যেই সেই দিনই উওরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি ও যুব মোর্চা। উপস্থিত থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যার অনুমতি ইতিমধ্যে আদালত থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর এবার একই ভাবে একইদিনে আরও একটি পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তবে এই কর্মসূচি প্রদেশ কংগ্রেসের নামে নয়, করা হবে মুর্শিদাবাদ জেলা যুব কংগ্রেসের নামে। এদিন বহরমপুরে দলীয় কার্যালয়ে বসে অধীর চৌধুরী বলেন, “আমরা একুশে জুলাই সভা করছি পলাশীর প্রান্তরে— ছোট্ট তামান্না এবং আমাদের বোন অভয়া’র বিচারের দাবিতে। কালীগঞ্জে নির্বাচনের পর তৃণমূলের বোমাবাজিতে যে ছোট্ট তামান্নাকে আমরা হারিয়েছি, পাশাপাশি আমাদের বোন অভয়া, এই দুজনকে শহীদের আখ্যা দিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা যুব কংগ্রেস এই কর্মসূচি নিয়েছে। ” তবে বিজেপির উত্তরবঙ্গের সভার মতো পলাশীর এই সভার অনুমতি নিতে হয়েছে বলেও দাবি অধীরের। এর পাশাপাশি ২১শে জুলাই নিয়ে কলকাতার পুলিস কমিশনারকে মুচলেখা দিতে বলেছেন কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকী সাধারণ মানুষের যেন সমস্যা না হয় সেই বিষয় নিয়ে পুলিশ কমিশনারকে নির্দিষ্টভাবে জানিয়ে দিতে হবে। এর ফলে আগামী বছর ২১শে জুলাই নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠে আসছে এই প্রসঙ্গ টেনে অধীর বলেন, “একুশে জুলাই যে পুলিশদের গুলিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী প্রাণ হারান সেই পুলিশদেরকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরস্কার দিয়েছেন। কেন একুশে জুলাই ঘটেছিল, কারা কারা দোষী, তার তদন্ত করার কথা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই তদন্ত নিয়ে রাজ্য সরকার চুপ। আসলে একুশে জুলাই প্রমোদ ভ্রমণ হয়, পিকনিক হয়। তার জন্য কেন কলকাতার মানুষজন সমস্যায় পড়বে? হাইকোর্ট যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে একদম সঠিক সিদ্ধান্ত।।”
নিজের চেম্বারে জাঁকজমক করে জন্মদিন পালন বিডিওর, শুরু বিতর্ক

চলতি মাসের ৪ তারিখ পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান -১ ব্লকের বিডিও রজনীশ কুমার যাদবের তাঁর নিজের দফতরে আই বুড়ো ভাতের এলাহি আয়োজনের ভিডিও নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে যায় সোস্যাল মিডিয়ায়। আর এবার সামনে এল আর এক বিডিও-র ছবি। তিনি নদিয়ার কল্যাণী মহকুমার হরিণঘাটার বিডিও মহাশ্বেতা বিশ্বাস। চলতি মাসের ১৪ তারিখ তার নিজের দপ্তরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে পালন করা হল জন্মদিন। সরকারি অফিস নিমেষে বদলে গেল অনেকটা ছোটখাট ব্যাংকোয়েট হলে। অন্ধকার ঘরে অপেক্ষমান বিডিও অফিসের কর্মীরা। গোটা ঘর সাজানো বেলুন দিয়ে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক দুপুর ১২ টা। নিজের চেম্বারে এলেন ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা বিডিও ম্যাডাম। সাথে সাথে জ্বলে উঠল ঘরের আলো। টেবিলে রাখা ইয়া বড় কেক। বিডিও ম্যাডাম ঘরে আসার সাথে সাথে চালানো হল গান–”হ্যাপী ব্যর্থ ডে টু ইউ”। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে কাজকর্ম শিকেয় তুলে চলল বার্থ-ডে সেলিব্রেশন। হ্যাপী বার্থ-ডে লেখা ক্লাউন পরলেন। মাথায় পরলেন বার্থ-ডে ক্যাপ। পুরোদস্তুর অফিস টাইমে গোটা অফিস তখন ব্যস্ত বিডিও ম্যাডামের জন্মদিন পালনে। আর বাইরে নানান সমস্যা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ। কিন্তু তাতে কী? বিডিও ম্যাডামের জন্মদিন। আর তাই নিয়ম চুলোয় যাক। উড়ল স্পারকেলও। আর সবটাই হল বিডিও অফিসের মধ্যেই। চলতি মাসের ৪ তারিখ নিজের অফিসেই পালিত হওয়া পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান-১ এর বিডিও রাজনীশ কুমার যাদবের আইবুড়ো ভাতের ছবি ভাইরাল হয়। প্রশ্ন ওঠে আদৌ কি কোনও সরকারি দফতরে এভাবে ব্যক্তিগত কোনও অনুষ্ঠান পালন করা যায়? আর তারপরই সেই একই ছবি নদিয়ার হরিণঘাটায়। তবে কোনও সরকারি অফিসে এই ধরনের কোনও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান পালন করা অনুচিত বলেন জানালেন কল্যাণীর মহকুমা শাসক ড: অভিজিৎ সামন্ত। তিনি বলেন, “এগুলো করা যায় না। না করাই উচিত। কিন্তু অনেক সময় সাহেবদের না জানিয়ে এগুলো অফিসের অন্য কর্মীরা করে ফেলেন। এখন তো দেখছি বিভিন্ন জায়গায় এগুলো রেওয়াজ হয়ে গেছে। এখন যদি দেখা যায় বড় করে, জাঁকজমক করে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলে করা হচ্ছে। তাহলে সেটা অনুচিত।” আর যে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের তাঁর নিজের চেম্বারে জাঁকজমক করে জন্মদিন পালন করা হল, সেই মহাশ্বেতা বিশ্বাসের মতে, “এটা কোনও অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমি কোনও ভুল দেখছি না। খুব সাধারণ একটা বিষয়। তবে হ্যাঁ, যেহেতু আমাকে সবাই সম্মান করে তাই হয়তো সেদিন একটু আমার ঘরে বেশী ডেকোরেশন হয়ে গিয়েছিল।”
হেরোইন প্যাকেটিং করার সময় গ্রেপ্তার ৩

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মুর্শিদাবাদের লালগোলা সীমান্তে মাদক পাচার চক্র, হেরোইন সহ গ্রেফতার তিন। ৮০০ গ্রাম হেরোইন সহ তিন জনকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেছে লালগোলা থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম ইসমাইল হক, আবুল কালাম আজাদ এবং আয়নাল শেখ। তাদের তিনজনেরই বাড়ি লালগোলা থানার অন্তর্গত বিলবোরকোপরা গ্রাম পঞ্চায়েতের রামনগর গ্রামে। গতকাল রাতে গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে রামনগর গ্রামের একটি বাড়িতে হেরোইন প্যাকেটিংয়ের কাজ চলছে। সেই খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে যায়। এবং সেখানে পৌঁছাতেই হিরোইন প্যাকেটিংয়ের কাজ করতে দেখে তাদেরকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের কাছ থেকে প্রায় ৮৩৭ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক কয়েক লক্ষ টাকা। দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়ে শুক্রবার তাদের আদালতে তোলা হবে। এর সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত তারও তদন্ত শুরু করেছে লালগোলা থানার পুলিশ।
দিল্লি গেলেন দিলীপ। থাকবেন না দুর্গাপুরে

দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় তিনি থাকবেন কি থাকবেন না, এটাই এতদিন ছিল লাখ টাকার প্রশ্ন। শেষ পর্যন্ত জল্পনায় ইতি টানলেন দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার সকাল ৭ টায় কলকাতা বিমানবন্দর থেকে দিল্লি যাওয়ার সময় স্পষ্ট করে দিলেন সব। না থেকেই গেল সেই প্রশ্ন— “যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো?” এক কথায় যেতে যেতেও তিনি গেলেন না। সাথে সাথে এটাও পরিষ্কার করে দিলেন—প্রাক্তন সভাপতির সাথে দূরত্ব অনেকটাই বেড়েছে দলের। বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “কর্মীরা ডেকেছিলেন তাই আমি যাবো বলেছিলাম। কিন্তু দল চায় না আমি সভায় থাকি।” নেতা নয় কর্মী হিসাবে তিনি যে ওখানে যাবেন সেটা আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বিজেপি রাজ্য দফতর থেকে দাবী করা হয়েছিল যে দিলীপ ঘোষকে দলের তরফে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছে। যদিও তা আদৌ পাঠানো হয়নি বলে দাবি করেন দিলীপ। তবে তাঁর দিল্লি যাত্রা প্রমাণ করল দুর্গাপুরে থাকবেন না তিনি। দিলীপের বক্তব্য, “আমাকে কর্মীরা ডেকেছিলেন তাই হ্যাঁ বলেছিলাম। পার্টি ডাকেনি। হয়তো পার্টি চায় না আমি যাই। আমি গেলে হয়তো অস্বস্তি বাড়বে। তাই পার্টির কাজে দিল্লি যাচ্ছি।”
আজ ইস্পাত নগরীতে প্রধানমন্ত্রী, তার আগে এক্স-পোস্টে তৃণমূলকে নিশানা

গত ১৬ জুলাই বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের নিগৃহীত করার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন ডোরিনা ক্রসিংয়ের সভা থেকে বিজেপি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তৃণমূল নেত্রী হুংকার দিয়েছিলেন, “সাহস থাকে তো আমাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠান। আমাকে গ্রেফতার করুন।” এমনকী ওই সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি সুর চড়িয়ে ‘ইন্ডিয়া'(INDIA) জোটের হয়েও সুপারিশ করতে দেখা গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তারই পাল্টা হিসাবে আজ পশ্চিমবঙ্গে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার দুপুরে দুর্গাপুরে জনসভা করবেন তিনি। তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই বঙ্গ বিজেপির নেতা ও সমর্থকদের মধ্যে সাজো সাজো রব। সকাল থেকেই ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সব মিলিয়ে সরগরম ইস্পাতনগরী। এই সভা থেকে যে ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটের রণকৌশল সাজাবেন নরেন্দ্র মোদী । আর তাই তাঁর আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য যে হবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা বলাই বাহুল্য। এমনকী বঙ্গে পা রাখার আগেই নিজের এক্স-হ্যান্ডেলে যেন সেই বার্তাই দিলেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার দুপুরেই দুর্গাপুরে প্রকাশ্য জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নরেন্দ্র মোদীর এই জনসভা ঘিরে রীতিমতো চনমনে গেরুয়া শিবির। দুর্গাপুরের সভার আগেই নিজের সোস্যাল সাইটে তৃণমূলকে কার্যত তুলোধনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। শাসকদলকে তুলোধনা করার পাশাপাশি তাঁর সভায় যোগদানেরও আহ্বান জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের অপশাসনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষ অনেক আশা নিয়ে বিজেপি-র দিকে তাকিয়ে আছেন এবং তাঁরা নিশ্চিত যে একমাত্র বিজেপি-ই পারবে উন্নয়ন করতে। ১৮ জুলাই, দুর্গাপুরে একটি জনসভায় ভাষণ দেব। যোগদান করুন!” এর থেকেই আন্দাজ করা যায়, শুক্রবার কার্যত তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে কতটা সুর চড়াবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
ট্রাম্পকে নিয়ে পাকিস্তানি মিডিয়ার ভুয়ো খবর, স্পষ্ট জবাব হোয়াইট হাউসের

গত কয়েক দিন আগে পাকিস্তানের দুটি নিউজ মিডিয়া চ্যানেল দাবি করেছিল, আগামী সেপ্টেম্বরে নাকি পাকিস্তানে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারা আরও দাবি করেছিল, যে ইসলামাবাদে নামার পরই তিনি নাকি ভারতে আসবেন। এরপরেই নড়েচড়ে বসে হোয়াইট হাউস। এই ভুয়ো খবরের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাবও দেয় তারা। হোয়াইট হাউসের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তানে যাচ্ছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই খবরের পরই বিশ্বের কাছে আরও একবার মুখ পুড়ল পাকিস্তানের। পাকিস্তান নিউজ মিডিয়ার ‘দ্য ডন’ জানিয়েছে, যে তাদের দেশের দুটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল যে সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে যাবেন ট্রাম্প, যদিও তারা পরে সেই রিপোর্ট সরিয়ে নেয়। অন্যদিকে, ট্রাম্পের সফর সম্পর্কে বলতে গিয়ে মার্কিন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বৃহস্পতিবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি ২৫ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই স্কটল্যান্ড সফর করবেন। সেই সফরে তাঁর সঙ্গে ইউকের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই সফরের পর তিনি ফের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউকে যাবেন। প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে শেষবার কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট গিয়েছিলেন পাকিস্তানে। সেবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ সফর করেছিলেন পাকিস্তানে। অতএব, বুশের সফরের পর প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন— এই মর্মে গত কয়েকদিন ধরে পাকিস্তানের দুই নিউজ চ্যানেল খবর করতে থাকেন। সেই খবরের তথ্যনথি তুলে ধরে রয়টার্সের তরফে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্রের তরফে জানানো হয়, ট্রাম্পের সফর সম্পর্কে তিনি কিছু সেভাবে জানেন না। ফলে তখনই এই পাক-চ্যানেল দুটির খবরের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। হোয়াইট হাউসের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয়বার ইউকে(UK) সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তিনি ও মেলানিয়া থাকবেন উইন্ডসর ক্যাসেলে। তাঁরা ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় চার্লস ও তাঁর স্ত্রী ক্যােলিয়া পার্কারের আথিথেয়তায় থাকবেন। ইউকের এই শিডিউল সদ্য গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প।