অভিনব কায়দায় অনলাইন জালিয়াতির ছক, লক্ষাধিক টাকার গহনা লুঠ

নকল ফোন পে ব্যবহার করে ট্রানজাকশনের স্ক্রিনশট দেখিয়ে প্রায় চার লক্ষ টাকার সোনার গয়না ডেলিভারি নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার এক প্রতারক। অভিযুক্ত রুধীন্দ্রনাথ মান্না নামে মাঝবয়সি ব্যক্তিকে বুধবার রাতে তার বাগুইহাটির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করল হাবড়া থানার পুলিশ। গোটা বারাসত জুড়ে অনলাইন জালিয়াতির ফাঁদ পেয়েছিল এই ব্যক্তি। মূলত তাঁর প্রধান টার্গেটই ছিল সোনার দোকান থেকে মোটা টাকার গয়না লুঠ। সেইমতো চলতি মাসের ১১ তারিখ হাবরার একটি সোনার দোকান থেকে অনলাইনে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার সোনার একটি হার বুকিং করে ওই ব্যক্তি। দোকানের তরফে পাঠানো কিউআর(QR) কোডে তিনি যে সাকসেসফুল পেমেন্ট করেছে তার প্রমাণ হিসাবে এমন একটি স্ক্রিনশটও ওই দোকানের হোয়াটঅ্যাপ নম্বরে পাঠায়। সেইমতো দোকানদার পেমেন্ট পেয়েছি ধরে নিয়ে অভিযুক্তর ঠিকানায় তার বুকিং করা সোনার নেকলেস ডেলিভারি দিয়ে দেন। কিন্তু কয়েকদিনের মাথায় ফের ওই একই ব্যক্তি ৮ লক্ষ টাকার সোনার গয়না একই দোকানে অর্ডার দেন। এমনকী ওই একই পদ্ধতিতে অনলাইনে সেই টাকা পাঠিয়েছে বলে দাবি করে প্রতারক। যেহেতু অনেক বড় অঙ্কের ট্রানজাকশন, তাই দোকান মালিক অ্যাকাউন্ট চেক করে। কিন্তু তখনই তিনি জানতে পারেন এখনকার ৮ লক্ষ টাকার পাশাপাশি আগের ডেলিভারি দেওয়া সোনার নেকলেসের টাকাও তিনি পাননি। তখনই তিনি বুঝতে পারেন জালিয়াতির শিকার হয়েছেন তিনি। এরপরেই হাবরা থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে দোকান কর্তৃপক্ষ। তদন্তে নেমে পুলিশ বুধবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতেই পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ। তারা বুঝতে পারেন, শুধুমাত্র ওই একটা দোকান নয়, একাধিক দোকানে একই কায়দায় জালিয়াতির ফাঁদ পেতেছিল সে। বৃহস্পতিবার তাকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করে বারাসত আদালতে তোলা হয়। ধৃতের কাছ থেকে হাবরার সোনার দোকান থেকে প্রতারণা হওয়া গয়নার পাশাপাশি আরও একটি সোনার গহনা উদ্ধার হয়েছে। যেটি অশোকনগরে একটি সোনার দোকান থেকে একইভাবে প্রতারণা করে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাবরা থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন বারাসত জেলার অ্যাডিশনাল এসপি স্পর্শ নীলাঙ্গী। তিনি বলেন— “এই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে একটি নকল ফোন পে অ্যাপস ব্যবহার করে এই প্রতারণা চালাচ্ছিল। যে অ্যাপসের মাধ্যমে হুবহু নকল পেমেন্ট স্ক্রিনশট বানানো সম্ভব।” পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের সাহায্যে সাধারণ দোকানিদের সতর্ক করে এসপি বলেন, “আপনার অনলাইন পেমেন্ট নেওয়ার সময় সব সময়ই সতর্ক থাকবেন। যাতে করে এই ধরনের জালিয়াতির শিকার না হতে হয়।” এমনকী এই ঘটনার সঙ্গে আরও বড় কোনও মাথা যুক্ত আছে কিনা তা খুঁজে বের করারও আশ্বাস দেন অ্যাডিশনাল এসপি।
ইন্ডিয়া জোট নিয়ে মমতা নাটক করছে : অধীর

রাজপথে নেমে ফের ইন্ডিয়া জোট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করলেও সেটিকে কার্যত ‘নাটক’ বলে উড়িয়ে দিলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী। বুধবার ডোরিনা ক্রসিংয়ের সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে ব্যাট ধরতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই জোটের আর এক শরিক সিপিআইএমকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেও কংগ্রেস নিয়ে কার্যত নীরব ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের রাশ যে এখনও তারই হাতে বুধবারের প্রতিবাদ সভা থেকে তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিতে চাইলেন মমতা। পাশাপাশি কংগ্রেসের সাথে সম্পর্ক তিনি যে খুব একটা খারাপ করতে চাইছেন না, তাও বুঝিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। যদিও গোটা বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ অধীর। পাল্টা ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে বার্তা দিয়ে কংগ্রেস নিয়ে চুপ থাকাকে আসলে মমতার ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেন অধীর। বলেন, “মমতার এই নাটক সারা ভারতবর্ষ জানে, দিল্লির নেতারাও জানে। এই ইন্ডিয়া জোটে কখনও সে থাকে, আবার কখনও থাকে না। নিজের প্রয়োজনে ইন্ডিয়া জোট, ইন্ডিয়া জোট বলে চিৎকার করে। আবার প্রয়োজন মিটে গেলে এই জোটের বিরোধিতা করে। আসলে এই জোটকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে।” এমনকী বুধবার সিপিআইএম-কে আক্রমণ করলেও কংগ্রেস নিয়ে কোনও মন্তব্য না করার বিষয়টিকে ‘কংগ্রেস-তৃণমূল নৈকট্য’ বলে মানতে নারাজ প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তার বক্তব্য, “উনি এর আগে একাধিকবার রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করেছেন, সোনিয়া গান্ধীকে আক্রমণ করেছেন। এমনকি এক সময় কংগ্রেস করতেন বলে ওনার লজ্জা করে এই মন্তব্যও করেছেন। পুরোটাই নাটক।” এর পাশাপাশি এই রাজ্যের বাঙালিদের আখেরে ক্ষতি করে এখন ভোটের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বাঙালি বাঙালি’ করছেন বলেও অভিযোগ অধীর চৌধুরীর। তিনি বলেন,” বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের উপর নির্যাতন হচ্ছে এই ইস্যু নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক খেলা শুরু করেছেন। যে যে রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নির্যাতিত হয়ে চলে আসতে হয়েছে কেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সেখানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছেন না। যারা চাকরি হারিয়েছে সেই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের এই রাজ্যে কেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন না?” এখানেই শেষ নয়, অধীর আরও বলেন, “যে সারদার টাকায় উনি দল চালাতেন, যে সারদার টাকায় উনি নির্বাচনে লড়েছেন সেই সারদা চিটফান্ড যাদের টাকা লুট করেছে তারা কি বাঙালি নন? কই তাদের নিয়ে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাস্তায় মিছিল করতে দেখিনি? উল্টে যারা সারদার তদন্ত রুখে দিল, যারা সারদায় জড়িত তাদের বাঁচাতে মিছিল করেছেন। এই যে ৩২ হাজার চাকরিপ্রার্থী রাস্তায় দিনের পর দিন বসে আছে। যে ২৬ হাজারের চাকরি চলে গেল তারা বাঙালি নয়? আসলে সামনে ভোট তাই আর কোনও ইস্যু না পেয়ে এখন এই ইস্যুকে সামনে ধরে মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন।”
গোপালগঞ্জের মানুষ কী মানুষ নয়?

সিতাংশু গুহ: কনফুসিয়াস বলেছিলেন, ‘প্রতিশোধ নিতে চাইলে দু’টি কবর খুঁড়ে রেখো’। ড. ইউনূস কবর খুঁড়ছেন শেখ হাসিনার জন্যে, তাঁর নিজেরটাও খুঁড়ে রাখা উচিত। সকালবেলা (১৬ জুলাই, ২০২৫) গোপালগঞ্জের হত্যাযজ্ঞ দেখে তাৎক্ষণিক লিখেছিলাম, সেনাবাহিনী ৫ আগস্ট ২০২৪— উন্মত্ত ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়নি, কিন্তু গোপালগঞ্জে নিরীহ জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি করেছে। এনসিপি, বিশেষত: সারজিস আলম ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ ডাক দিল ১৬ মার্চ। ১৫ মার্চ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পৌঁনে দুই মিনিটের একটু বেশি সময়ের একটি ভিডিও প্রকাশ করে জানিয়ে দিলেন তাঁরা ‘জুলাই আন্দোলনের’ পক্ষে? নইলে ‘আমি কে, তুমি কে, রাজাকার, রাজাকার’- —এমন শ্লোগান গ্লোরিফাই করার কোনও কারণ থাকতে পারেনা। গোপালগঞ্জ কর্মসূচি দেয়া হয়েছিল উত্তেজনা ছড়ানোর জন্যে। এজন্যে এনসিপি যমুনা ঘেরাও করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছে। গোপালগঞ্জ অভিযান নির্বাচন বানচালের জন্যে। এখনকার সকল কর্মসূচি নির্বাচন ঠেকানোর জন্যে। গোপালগঞ্জের মানুষ এমনিতে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার অন্ধ সমর্থক, এই দুর্গ ভাঙাও মব সন্ত্রাসীদের অন্য একটি লক্ষ্য। কারফিউ দিয়ে সেনাবাহিনী সেইসব লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়তা করে যাচ্ছে। গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী হিন্দু ও আওয়ামী লীগারদের বাড়ি বাড়ি আক্রমণ করেছে, নির্বিচারে অত্যাচার করেছে। ১৯৭১-এ পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও রাজাকাররা টার্গেট করে হিন্দু ও আওয়ামী লীগ মেরেছিল, এবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও রাজাকার এনসিপি একই কায়দায় মাঠে নেমেছে। ড. ইউনূসের আমলে সব দিক থেকেই বাংলাদেশে ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। ফলাফলও তো একই হওয়া কথা, তাই না? এর একটু নমুনা দেখা গেল নাহিদ-সারজিসের সেনা ট্যাঙ্কে পলায়ন। এ থেকে ফাইনাল পলায়নের দৃশ্য কিছুটা আন্দাজ করা যায়? অবশ্য যদি সেই সুযোগ থাকে। পুলিশ পাহারা না থাকলে এঁরা জনরোষে ভস্ম হয়ে যাবে। গোপালগঞ্জ ঘটনার জন্যে আসিফ মাহমুদ, সজীব ভুঁইয়া, সারজিস, হাসনাত, নাহিদ গণ দায়ী। এদের সহায়তা করার জন্যে ড. ইউনূস ও জামাত দায়ী। এটি ড. ইউনূসের আর একটি ‘মেটিক্যুলাস’ প্ল্যান। গোপালগঞ্জে ঠিক কতজন মারা গেছে বলা কঠিন, সেটা ৪ থেকে ২৫, বা আরো বেশি হতে পারে, এবং প্রায় সবাই নিহত হয়েছে গুলিতে। আহতের সংখ্যা অগণিত। পুলিশ-মিলিটারির নৃশংস ব্যবহারে মনে হল যে, ‘গোপালগঞ্জের মানুষ, মানুষ না’? নিহত রমজানকে ক’জন পুলিশ-মিলিটারি ধরে নিয়ে গেল, এরপর তিনি গুলিতে নিহত হলেন কিভাবে? নিহত দীপ্ত সাহার মুখের ওপর সামরিক বাহিনীর বুটের ছবিটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। একটি মৃতদেহ তাচ্ছিল্যভাবে ট্রাকে ওঠানোর দৃশ্যটি নির্মম। পুলিশ-মিলিটারি একটু বেশি উৎসাহ নিয়ে গোপালগঞ্জে হিন্দু পেটাতে পেরেছে। মিলিটারি রমজানের গলায় পা-চেপে ধরা ছবিটি অমানবিক। মিলিটারির অমানবিক আচরণে প্রশ্ন উঠবে, এই সেনারা কি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে স্থান পাওয়ার যোগ্য? এ প্রশ্নও উঠছে, এই সেনাবাহিনীর কি আদৌ দরকার আছে? সেনাবাহিনীর চরিত্র পাকিস্তানী বাহিনীর মতোই? ভবিষ্যতে ১৬ জুলাই ‘গোপালগঞ্জ গণহত্যা দিবস’ হিসাবে পালিত হবে, ইতিমধ্যে এ দাবি উঠেছে। হয়তো গোপালগঞ্জ থেকেই এবার প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু হল। গোপালগঞ্জ ঘটনার পুরো তথ্য এখনও স্পষ্ট নয়, যত দিন যাবে, এ ঘটনা যে সরকরের সাজানো তা ততই স্পষ্ট হবে। জামাত-এনসিপি, সরকার এবং ব্যক্তি ইউনূস এ দায় থেকে রেহাই পাবেন না। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে এ নিয়ে হত্যা মামলা হবে, তিনি হবেন হুকুমের আসামী, অন্য টোকাইরা হবে প্রত্যক্ষ আসামী। আবার কনফুসিয়াসের কথা দিয়েই শেষ করি, শেখ হাসিনার ওপর চারশো হত্যা মামলা হয়েছে, আপনাদের ওপরও হবে। ( লেখক লন্ডনস্থিত বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী)
বৈধ কাগজপত্র না থাকার অভিযোগ, মল্লারপুরে রাতভর আটকে রাখা হল উত্তরপ্রদেশের পুর্ণার্থী বোঝাই বাস

তারাপীঠ মন্দির থেকে ফেরার পথে আটক করা হল পুর্ণার্থী বোঝাই বাস। বীরভূমের মল্লারপুর থানার এলাকার কিষান মান্ডির কাছে। বাসটিকে আটক করে মল্লারপুর থানার পুলিশ। ঘটনাটি বুধবার সকালের। দিনভর আটকে রাখা হয় শিশু-মহিলা সহ প্রায় ৬০ জনকে। পরে বুধবার মাঝরাতে ছেড়ে দেওয়া হয় বাসটিকে। অভিযোগ, আটকে রাখা হলেও যাত্রীদের ন্যূনতম খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হয়নি। এর প্রতিবাদে ১৪ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। জানা গিয়েছে উওরপ্রদেশের গোরক্ষপুর থেকে একটি বেসরকারি বাস রিজার্ভ করে তারাপীঠ মন্দির দর্শন করে সেখান থেকে বাসটির গঙ্গাসাগর হয়ে দেওঘর ফেরার কথা। সেই সময় বীরভূমের মল্লারপুরের কাছে রাজ্য পরিবহণ দফতর বাসটিকে আটক করে পারমিট দেখতে চান। অভিযোগ বাসের চালক পারমিট দেখালে তা জাল পারমিট বলে দাবি পরিবহন দফতরের। বাসটিকে ১,৯৪,৪৪৫ টাকা ফাইন করা হয়। এবং তা অনলাইনে পেমেন্ট করতে বলা হলে সাথে সাথে তা দিতে অস্বীকার করেন চালক। সেই টাকা না দেওয়ার কারণে বাসটিকে দিনভর আটকে রেখে দেয় পরিবহন দফতরের আধিকারিকরা। খবর জানাজানি হতেই আসরে নামে এলাকার বিজেপি কর্মীরা। তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করলেও বাসটিকে ছাড়তে রাজী হয়নি । এরপরই ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করেন বাসের যাত্রীরা। পরে মল্লারপুর থানার পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়ে অবরোধ তোলে। পরে গোরক্ষপুরে ফিরে গিয়ে জরিমানার টাকা দিয়ে দেওয়া হবে, এই মুচলেকা লিখিয়ে বাস টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
দিল্লির চাপে পিছু হটল ইউনূস সরকার, স্থগিত হল সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি ভাঙার কাজ

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন ইউনূস সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল যাতে করে ময়মনসিংহে অবস্থিত কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িটি না ভাঙা হয়। অবশেষে এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসল বাংলাদেশ সরকার। এর আগে জানা গিয়েছিল, বাংলাদেশে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভেঙে ফেলে সেখানে নতুন শিশু অ্যাকাডেমি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মহম্মদ ইউনুসের সরকার। এই আবহে গত মঙ্গলবার ভারত সরকার জানিয়েছে যে তারা বাংলাদেশের ময়মনসিংহে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক সম্পত্তি মেরামত ও পুনর্নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। ময়মনসিংহের হরিকিশোর রায় চৌধুরী রোডে অবস্থিত উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটি এমনিতেই বহুকাল ধরে অযত্নে অবহেলায় ভগ্নদশায় কোনওমতে দাঁড়িয়ে ছিল। এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছিল, ‘বাংলা সাংস্কৃতিক নবজাগরণের প্রতীক ভবনটির ঐতিহাসিক মর্যাদা বিবেচনা করে, ধ্বংসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা ভালো এবং এটিকে সাহিত্যের মিউজিয়াম এবং ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা যায় কিনা তার জন্য এর মেরামত ও পুনর্নির্মাণের বিকল্পগুলি খতিয়ে দেখা হোক। ভারত সরকার এই উদ্দেশ্যে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক।’ দিল্লির এই কড়া বার্তার পরই সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতি-বিজড়িত এই বাড়ি ভাঙার কাজ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। শোনা যাচ্ছে, বাড়িটি কীভাবে পুনর্নির্মাণ করা যায় তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি নতুন কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সরকার। প্রসঙ্গত, এই বিষয়ে প্রথম সরব হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজের সোস্যাল সাইটে বাংলাদেশ সরকার এবং ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই বাড়িটি মাহাত্ম্য তুলে ধরেন। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে এবং দিল্লির চাপে পিছু হটল ইউনূস সরকার।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আলাস্কা, জারি সুনামির সতর্কতা

গত বুধবার ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.৩। এরপরই সেখানে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি-র পক্ষ থেকে এই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। এর আগে ১৯৬৪ সালে আলাস্কায় এমন বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছিল। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৯। ভূমিকম্প এবং সুনামির জেরে সেই সময় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। এরপর গতকাল আবারও এত বড় রকমের একটি ভূমিম্প হল সেখানে। ভূমিকম্পের ফলে সুনামি আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে হোমার অঞ্চল, কোল্ড বে, কোডিয়াক স্যান্ড পয়েন্ট এবং কিং কোভ, উনালাস্কা, ইউনিমাক দ্বীপ, স্কচ ক্যাপ অঞ্চল, চিগনিক বে অঞ্চল। এই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের অবিলম্বে অন্যত্র সরানোর কাজ চলছে । এর মধ্যে কোল্ড বে-র জনসংখ্যা নাকি মাত্র ৫২, স্যান্ড পয়েন্টের জনসংখ্যা ৬১০, কোডিয়াক বরোর জনসংখ্যা ৫২২০। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল স্যান্ড পয়েন্ট শহর থেকে ৮৭ কিলোমিটার দক্ষিণে, মাটির ২০ কিলোমিটার গভীরে। আলাস্কার পালমারে অবস্থিত জাতীয় সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘এই ভূমিকম্পের জেরে সুনামি আছড়ে পড়তে পারে। এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে আলস্কার কিছু অঞ্চলে।’
নিক্কোপার্কে যুবকের আকস্মিক মৃত্যু, তদন্তে পুলিশ

১৬ জুলাই, ২০২৫: কলকাতার অন্যতম বিনোদন পার্কের মধ্যে অন্যতম নিক্কোপার্ক। কিন্তু বুধবার দুপুরে সেখানে এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে হঠাৎই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। নিক্কোপার্কের ওয়াটার পার্কে স্নান করার সময় আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই যুবক। তিনি ওখানে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই যুবকের নাম রাহুল দাস। বছর ১৮-র ওই উত্তর কলকাতার উল্টোডাঙা এলাকার বাসিন্দা। বুধবার রাহুল ও তার ৬জন বন্ধু মিলে নিক্কোপার্কে এসেছিল। সেখানেই দুপুর ১টা নাগাদ তার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ওয়াটার পার্কে স্নান করতে নেমেছিল। তারপর আচমকাই রাহুল জ্ঞান হারায়। তারপর তার বন্ধুরা মিলে ধরাধরি করে যখন তাকে নায়গ্রা ফলস থেকে নামাচ্ছিল তখন নিক্কোপার্কের গার্ডরা ছুটে যান। পার্ক চত্বরেই আপতকালীন ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে তাকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। যদিও রাহুলের মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয় এবং স্থানীয় থানার পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত শুরু করেছে। নিক্কো পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেশ রায় সিঙ্ঘানিয়া দাবি করেছেন, পার্কের কোনও গাফিলতির কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তিনি জানান, রাহুল হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যান এবং পার্ক কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এখনও পর্যন্ত রাহুলের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। নিক্কো পার্কের HR ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমিত দত্ত সংবাদমাধ্যমকে জানান, “চারজন ছেলে ও তিনজন মেয়ে এসেছিল। তারা কলেজ পড়ুয়া বলেই মনে হয়েছে। নায়গ্রার ফার্স্ট ফ্লোরে ওরা শাওয়ার নিচ্ছিল। তখনই একজন ছেলের মাথা ঘোরে এবং সে বসে পড়ে। বন্ধুরা তাকে ধরে নামাচ্ছিল। আমাদের কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যায়। আমরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিই, কিন্তু তখন তার পালস খুবই কম ছিল, জ্ঞানও ছিল না। আমরা নিজেরাই অ্যাম্বুলেন্সে করে কাছের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাই। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।” ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। মৃত যুবকের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা, তা জানতে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে আকস্মিক এমন ঘটনার জেরে গোটা নিক্কোপার্ক জুড়ে সাময়িক ভাবে চাঞ্চল্য ছড়ায়।