ছেলের দেহ সৎকার না করে, বিচারের দাবিতে হাইকোর্টের দারস্থ বাবা

মালদা, ১৩ জুলাই: মৃত্যুর ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও দেহ সৎকার না করে, বিচারের দাবিতে আগলে রেখেছেন বাবা। গ্রামের ক্লাব ঘরে দেহ পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসীরাই। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে গ্রাম জুড়ে চলছে বিক্ষোভ। মানিকচকের ভূতনি বেসরকারি স্কুলের হোস্টেলের মধ্যে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষক সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় অত্যাচারের অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের বাবা। কিন্তু পুলিশ এখনো পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করেনি। এই পরিস্থিতিতে নিজের ছেলের দেহ সৎকার করছেন না বাবা। বরফ দিয়ে ঘরে রেখেছেন। ন্যায় বিচারের দাবি পরিবার সহ গ্রামবাসীদের। ঘটনার ১২ দিন পার হলেও মৃত ছাত্রর দেহ বরফ দিয়ে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তে ছাত্রের যে রিপোর্ট সামনে এসেছে সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় ছাত্রের পরিবার এবং গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি মালদার ভূতনি থানার হিরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেদারটোলা গ্রামের। আবার ময়নাতদন্ত করার দাবি তুলছেন তারা। অভিযুক্ত ওই বেসরকারি আবাসিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং ক্লাস শিক্ষককে যতক্ষণ না পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ততক্ষণ দেহ থাকবে বরফে সংরক্ষিত অবস্থায়। গ্রামের বাসিন্দারা দিনরাত এক করে দেহ পাহারা দিচ্ছেন। এমনকী মৃত ছাত্রের ন্যায় বিচারের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টেরও দারস্থ হয়েছে মৃত ছাত্রটির পরিবার। মৃত ছাত্রের বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল জানান, হাইকোর্টের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিমধ্যে মামলাও করা হয়েছে। চলতি মাসের ২ তারিখ রাতে মানিকচকের রোজমেরী মিশনারী স্কুলের হোস্টেল থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় শ্রীকান্ত মণ্ডল নামে অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রের। এই মৃত্যু ঘিরে রহস্য ক্রমশই দানা বাঁধে। বিদ্যালয় অবশ্য প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে যে, ছাত্রটি আত্মহত্যা করেছে। গত ২রা জুলাই বুধবার রাতে দেহ উদ্ধার হয়। তার পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দেহ ময়নাতদন্ত হয়। শুক্রবার পুলিশের কাছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজির হোসেনের বিরুদ্ধে মৃত ছাত্রের বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অত্যাচারেই মৃত্যু হয়েছে বলেই দাবি মৃত ছাত্রের পরিবারের। মৃত ছাত্রের বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল জানান, “আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষের নামে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।” মৃতদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও সেটা মানতে নারাজ মৃত ছাত্রের বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল। প্রায় ১২ দিন হয়ে গেল মৃত ছাত্রের সৎকারকার্য সম্পূর্ণ হয়নি। পরিবার ও গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় স্থানীয় ক্লাবের ফ্রিজের মধ্যে বরফ দিয়ে রাখা হয়েছে ছাত্রের মৃতদেহ। গ্রামবাসী ও ছাত্রের মা-বাবার দাবি, অবিলম্বে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হোক।অভিযুক্তদের ধরে ফাঁসির সাজার দাবি জানান তারা। এমনকী ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়।
‘সাগরদিঘিকে ভাঙড় বানানোর চেষ্টা’ ক্ষোভ নুরে মেহেবুব আলমের

মুর্শিদাবাদ, ১৩ জুলাই: আবারও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। এবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির তৃণমূল বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন সাগরদিঘি ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নুরে মেহেবুব আলম। সাগরদিঘির দিয়ার বালাগাছি এলাকায় ২১ শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার মঞ্চ থেকে রবিবার বিধায়কের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তিনি স্পষ্ট ভাবেই জানান— “যারা আসল তৃণমূল, যারা বুথ সভাপতি, যারা তৃণমূলের জন্য পরিশ্রম করছে, তাদেরকে বিধায়ক বিভিন্নভাবে প্রত্যাখান করার চেষ্টা করছে। সাগরদিঘিতে দ্বিতীয় ভাঙড় করার চেষ্টা করছে বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। বিধায়কের বিরুদ্ধে তার আরও অভিযোগ, “নিজের ব্যবসা বাঁচানোর জন্য বাইরন বিশ্বাস তৃণমূলে এসেছেন। তিনি এদিন কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে ঘোষণা করেন, সাগরদিঘিতে এক আপনি সংগঠন করবেন কিংবা আমি সংগঠন করব। শান্তিপ্রিয় সাগরদিঘিতে যাতে মানুষে মানুষে বিভেদ হয় তার চেষ্টা করছে বিধায়ক। আমাদের কোনো ভাইয়ের কোল খালি হলে তার জন্য দায়ী থাকবেন আপনি।” যদিও এই বিষয় নিয়ে সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের এখনো কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তৃণমূলই তৃণমূলকে শেষ করবে, বিস্ফোরক অধীর

১৩ জুলাই, ২০২৫: রাজ্যে গত তিনদিনে পর পর তিন তৃণমূল নেতা খুন। গত বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে নৃশংস ভাবে খুন হন শওকত মোল্লা ঘনিষ্ঠ দাপুটে তৃণমূল নেতা রেজ্জাক খাঁ। স্বাভাবিক ভাবেই এই খুনের পিছনে ISF-এর হাত আছে বলে অভিযোগ করেছিলেন শওকত মোল্লা। কিন্তু ঘটনার তিন কাটতে না পুলিশি তদন্ত যত এগিয়েছে ততই এই খুনে তৃণমূলের যোগই সামনে এসেছে। রেজ্জাক খুনের মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে মোফাজ্জেল মোল্লাকে। যিনি এলাকায় দাপুটে তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত। বৃহস্পতিবার রাতে মালদার ইংরেজবাজার থানার লক্ষ্মীপুর এলাকায় বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে সেখানেই খুন হন তৃণমূল নেতা আবুল কালাম আজাদ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার করা হয় মাইনুল শেখ নামে এক তৃণমূল নেতা। জানা যায় তারা দুজনেই একসাথে জমির ব্যবসা করতেন। জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই এই খুন বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। তবে এই দুজনের নামেই বেনামি নানা ব্যবসা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। যদিও জেলা তৃণমূলের তরফে পুরো বিষয়টিকে অস্বীকার করে মহিলা ঘটিত কারণে খুনের তত্ত্বকেই সামনে হাজির করা হয়। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বীরভূমের সাঁইথিয়ায় শনিবার মাঝরাতে বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করা হয় লাভপুর বিধানসভা এলাকার শ্রীনিধিপুর তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে। যদিও তার পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়, রাজনৈতিক কারণেই তাকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু এর পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, না বিরোধী রাজনৈতিক দলের চক্রান্ত— সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি তার পরিবার। তবে পর পর এই তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনার বিষয়ে রবিবার মুর্শিদাবাদের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি স্পষ্টতই জানান— “তৃণমূল মানেই গুণ্ডা-মাফিয়াদের রাজত্ব। এরাই দলের সম্পদ। এরাই এখন নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগির অংশীদারি নিয়ে একে অন্যকে খুন করছে। এটা আসলে ভাগ-বাটোয়ারার লড়াই। এভাবেই তৃণমূলের হাতে তৃণমূল খুন হতে হতে একদিন দলটাই শেষ হয়ে যাবে। বিরোধীদের এ রাজ্যে ক্ষমতা আছে যে, তারা তৃণমূল নেতাদের খুন করবে। এটা পরিষ্কার ওদের নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এরাই তো ভোটে ভয় দেখিয়ে, বুথ দখল করে জিতিয়েছে তৃণমূলকে। এখন ঝেড়ে ফেলতে চাইলেও পারবে না।
কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর আইনজীবীর লাইসেন্স বাতিল

মালদা, ১২ জুলাই: তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা, এক সময়ের মন্ত্রী তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর আইনজীবীর লাইসেন্স বাতিল করা হল। শুক্রবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে একথা জানিয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিল অ্যাসোসিয়েশন। আদালত অবমাননার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলের সভাপতিকে শোকজ ইস্যু করেছিল হাইকোর্ট। তার প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালে। সেসময় কৃষ্ণেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে বার কাউন্সিলে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মালদার অন্যতম নামি আইনজীবী সঞ্জয় কুমার শর্মা। তাঁর অভিযোগ ছিল, নিয়ম অনুযায়ী একজন আইনজীবী অন্য কোনও পেশায় যুক্ত থাকতে পারেন না ৷ কিন্তু কৃষ্ণেন্দুবাবু একজন ব্যবসায়ী ও প্রোমোটার৷ তাই আইন মেনে তাঁর আইনজীবীর লাইসেন্স বাতিল করা হোক ৷ হাইকোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৮ই অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৷ ওইদিন দুপুর ২টোর সময় পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলের সভাপতি কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সব্যবাচী ভট্টাচার্য ৷
জল-যন্ত্রণায় দুর্বিষহ বসিরহাট ২ নম্বর ব্লকের সাধারণ গ্রামবাসীরা
কসবা কাণ্ডের ছায়া এবার কলকাতার আরও এক কলেজে

সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজের ছাত্রীকে ক্যাম্পাসের ভিতর গণধর্ষণের ঘটনার এক মাস কাটতে না কাটতে, একই চিত্র দেখা গেল কলকাতার আরও একটি কলেজে। কসবা কাণ্ডের পর এবার IIM জোকার বয়েজ হস্টেলে ছাত্রী ধর্ষণের ভয়াবহ অভিযোগ উঠল। কলকাতার নামকরা এই ইনস্টিটিউশনের দ্বিতীয় বর্ষের এক ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়ার বিরুদ্ধেই অভিযোগ। তাকে গ্রেফতার করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। ধৃত ছাত্রের নাম পরমানন্দ জৈন। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, যে ছাত্রীর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে তিনি ওই কলেজর ছাত্রী নন। তরুণী অভিযুক্তের পরিচিত। কিছুদিন আগেই তাদের আলাপ হয়। কাউন্সেলিং সেশনের জন্য ওই ছাত্রীকে অভিযুক্ত আইআইএমে(IIM) ডেকে পাঠায়। কিন্তু কাউন্সেলিংয়ের জায়গায় না গিয়ে বয়েজ হস্টেলে নিজের রুমে নিয়ে যায় জরুরি নথি নেওয়ার অজুহাতে। সেখানে পিৎজা ও কোল্ড ড্রিংক খেতে দেয়। সেগুলি খাওয়ার পরই অচৈতন্য হয়ে পড়েন তরুণী। এরপরই তাকে ধর্ষণ করা হয়। তরুণী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের অনুমান, ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে মাদক জাতীয় কিছু খাইয়েছিল ওই যুবক। নির্যাতিতার বয়ান অনুসারে, তিনি পুরো সময় আচ্ছন্ন পরিস্থিতিতে ছিলেন। যখন সম্বিৎ ফেরে, দেখেন বয়েজ হস্টেলে পড়ে রয়েছেন তিনি। এরপর নির্যাতিতা প্রথমে ঠাকুরপুকুর থানায় যান, সেখান থেকে তাকে হরিদেবপুর থানায় যেতে বলা হয়। শুক্রবার হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এরপর পুলিশ ক্যাম্পাসে গিয়ে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। এমনকী বয়েজ হস্টেলে ঢোকার পর সেখানে ভিজিটর্স বুকেও সই করতে দেওয়া হয়নি বলে তরুণীর অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। IIM জোকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছে তারা। তারপরই গ্রেফতার করা হয় ম্যানেজমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়াকে। শিক্ষাক্ষেত্রে এভাবে একের পর এক ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে— স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ ছাত্রীরা কতটা সুরক্ষিত? নারী সুরক্ষার প্রশ্নে, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলছেন বিরোধীরা। অন্যদিকে সাম্প্রতিক অতীতে কসবা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের মতো একাধিক ছাত্রনেতার নাম সামনে আসায়, বেশ বিড়ম্বিত শাসক দলের ছাত্র সংগঠনও।
কান্দি ল’কলেজে থ্রেট কালচার! আহত দুই ছাত্রী

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক, মুর্শিদাবাদ: শিক্ষাঙ্গনে একের পর এক ঘটনা সামনে আসতে শুরু করেছে। কসবার পর তার মধ্যেই ফের উঠে এলো আরও একটি আইন কলেজের থ্রেট কালচারের ঘটনা। এবার মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি। কান্দি রাজা বীরেন্দ্র চন্দ্র কলেজ অফ ‘ল’ তে থ্রেট কালচারের অভিযোগ।কলেজের দখলকে নেবে এই নিয়ে ঘটে গেল মারামারি। আর তাতে আহত হল দুই কলেজ ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে কলেজ চত্বরেই। আহত হয়েছেন সোমা শীল ও তৃনা মজুমদার নামে আইনের দুই ছাত্রী। কান্দি রাজা বীরেন্দ্র চন্দ্র ‘ল’ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তৃনা মজুমদার, সে শুক্রবার দুপুরে কলেজে এসেছিল পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করতে। অভিযোগ, সেই সময়ের তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন ছাত্র- ছাত্রী মিলে তৃণাকে মারধর করে। তৃণার অভিযোগ, সোমা শীল সহ তার একজন বন্ধু মিলে এই মারধর করেছেন। তার আরও অভিযোগ, কান্দি রাজা বীরেন্দ্র চন্দ্র কলেজ অফ ল তে ব়্যাগিং করা হয়। বেশ কিছু দিন ধরেই এই ঘটনা ঘটছে। তার প্রতিবাদ করাতেই কলেজের মধ্যেই মারধর করা হয়েছে। যদিও সোমা শীলের পাল্টা অভিযোগ, ” টিফিন করতে যাওয়ার সময় আমাকে গালিগালাজ করা হয়। এবং সেটা প্রতিবাদ করলেই বিনা কারণে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” অন্যদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে যান কলেজের ভারপ্রাক্ত অধ্যক্ষ সুচিস্মাতা নাগ। তিনি জানান, “আমি ঘটনার কথা শুনেছি। এই ধরনের ঘটনা কলেজ ঘটে থাকলে সেটা অবাঞ্ছানীয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আমরা চাইব পুলিশ সঠিক তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করবে।”.
উসকানি দিয়ে রাজ্যে হিংসা ছড়াচ্ছে বিজেপি : ফিরহাদ

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক :- দক্ষিণে ভাঙড় আর উত্তরে মালদহে এক রাতের খুন হন দুই তৃণমূল নেতা। রাজ্জাক খান ও আবুল কালাম আজাদ। ভাঙ্গরের চালতাবেরিয়া অঞ্চল সভাপতি রাজ্জাক খান খুন হন চক মরিচায়। অপরদিকে আরেক তৃণমূল নেতা মালদার আবুল কালাম আজাদ খুন হন ইংরেজবাজার থানার লক্ষীপুর এলাকায় একটি জন্মদিনের পার্টিতে এসে। মালদার ঘটনায় আপাতত স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও তার দলবল জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ অন্যদিকে ভাঙ্গরের ঘটনায় আইএসএফ এবং তৃণমূলের মধ্যে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। তবে দুই ঘটনার জন্য নাম না করে বিজেপিকেই দায়ী করলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার বহরমপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “তৃণমূল খুনে বিশ্বাস করে না। আমাদের আত্মত্যাগে মধ্য দিয়ে বাংলার মানুষ আমাদের ক্ষমতায় এনেছে। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বদলা নয়, বদল চাই। নতুন বাংলা গড়তে চাই। কিন্তু যে দলটা ধর্মীয় উসকানি দিয়ে গুজরাটের মতো হিংসা করছে। ভয়াবহ হিংসার সংস্কৃতি আনার চেষ্টা করছে। বাংলা হিংসা বিশ্বাস করে না। আমাদের বাংলা চৈতন্যর বাংলা। আমরা বলি মেরেছো কলসির কানা, তা বলে কি প্রেম দেব না?” তবে এই দুটি খুনের ক্ষেত্রে কোথাও বিজেপি যোগ না থাকলেও উল্টে তৃনমূল এর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন বিরোধী দলনেতা। শুক্রবার হাওড়ায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ” এটাই তৃণমূলের শেষ পরিণতি। আর এই কোন ঘটনার সঙ্গে বিজেপি জড়িত থাকার কোন বিষয় নয় নিজেরা নিজেদের মারছে নিজেরাই মরছে আর দোষ দিচ্ছে বিজেপির ঘাড়ে।”
এবার বুথে বুথে ধর্ম রক্ষার ডাক শুভেন্দুর

প্যারালাল ডেস্ক :- বাংলার সনাতনীদের ঐক্যবদ্ধ করে এবার বুথে বুথে ধর্ম রক্ষার ডাক দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার হাওড়ায় বিজেপির গ্রামীণ জেলা কমিটির দফতরে বসে রীতিমত হুঙ্কার দেন তিনি। রাজ্যে সাম্প্রতিক একের পর পর ঘটনায় সনাতনীরা আক্রান্ত বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি রীতিমত পরিসংখ্যান তুলে ধরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ” এখন ধর্ম রক্ষা করতে হবে। তাই শুধু বিজেপি নয় এবার বুথে বুথে ধর্মরক্ষা কমিটি তৈরী করতে হবে। শুধু বিজেপির বুথ কমিটি করলে হবে না। মনে রাখবেন হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমি আবেদন করতে পারি। যারা প্রকৃত সনাতনী তাদের এগিয়ে রাখতে হবে।’ মোথাবাড়ি, মহেশতলা, সামসেরগঞ্জ থেকে শুরু করে হাওড়ার বাউরিয়া, উলুবেড়িয়া সহ একাধিক জায়গায় হিন্দুরা আক্রান্ত এই অভিযোগ বারে বারে তুলছে বিজেপি সহ একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। রাজ্যে পরিকল্পিত ভাবে সনাতনীদের উপর আক্রমন হচ্ছে বলে একাধিক তথ্য তুলে ধরে এই ধরনের পিছনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত আছে বলে শুক্রবার হাওড়া’র সংবাদিক সম্মেলন থেকে ফের দাবী তুললেন তিনি। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ” খালা ” বলেও ব্যক্তিগত আক্রমন থেকে পিছপা হলেন না বিরোধী দলনেতা। মমতার হাতে বাংলায় হিন্দু ধর্ম সুরক্ষিত নয় বলে দাবি তুলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,” এই রাজ্যে হিন্দুদের ক্ষতিগ্রস্থ করতে বিপন্ন করতে হিন্দু শুন্য করতে যে প্রয়াস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যেভাবে মুসলীম লীগ-২ সরকার নিয়েছে তা বরদাস্ত করবো না। আমরা আমরা মোথাবাড়িতে পাশে দাঁড়িয়েছি, সামশের গন্ধে পাশে দাঁড়িয়েছি মহেশতলার রবীন্দ্রনগরের পাশে দাঁড়িয়েছি এবার বাউরিয়া তে ও পাশে দাঁড়াবো। এই বাংলায় যতদিন মমতা খালার সরকার থাকবে ততদিন এই রাজ্যে হিন্দুরা সুরক্ষিত থাকবে না।”
নয়া সমীকরণ : দিল্লির ডাকে দিলীপ ঘোষ

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক: বঙ্গ বিজেপি রাজ্য সভাপতি বদল হতেই বিজেপিতে নয়া সমীকরণের চোরাস্রোত এখন বাংলার রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচ্য বিযয় । বলার অপোক্ষা রাখে না শমীক ভট্টাচার্যের হাতে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের ব্যাটন যাওয়ার পর সুকান্ত-শুভেন্দু কাছে ব্রাত্য দিলীপ এখন প্রাসঙ্গিক । মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজেপির রাজ্য সভাপতির সঙ্গে একান্তে বৈঠক ,রাত পোহাতেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ডাকে বুধবার সকালেই সস্ত্রীক দিল্লি উড়ে গেলেন দিলীপ ঘোষ । কেন দিল্লি যাত্রা ?স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে দিল্লি যাত্রার কারণ নিয়ে রেখে গেলেন ধোঁয়াশা ৷ তবে গত কয়েকদিন ধরে দিলীপের শরীরিভাষা , চনমনে মানসিকতা , সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর যেভাবে স্টেপআউট করছিলেন তাতে একটা বিষয় পরিস্কার ২০১৯ -এর বঙ্গ বিজেপির কান্ডারী আবার রাজ্য রাজনীতির ময়দানে স্বমহিমায় ফিরছেন । এতদিন কি তিনি অভিমানী ছিলেন? প্রশ্নের সোজাসাপটা উত্তর, ‘‘দলের সঙ্গে আমার দেওয়া নেওয়া সম্পর্ক নয়। রাজনীতি কারুর কাছে প্রফেশন। কারুর কাছে অকুপেশন। আমার কাছে মিশন। আমি কিছু দিতে এসেছি। পার্টি দায়িত্ব দিয়েছিল। আমি পালন করেছি মাত্র। ২৬-এর নির্বাচন আমাদের কাছে একটা মাইল স্টোন। আমাদের সেটা পার করতে হবে। পার্টি এখন সিনিয়র লোককে সভাপতি করেছে। তিনি নতুন পুরোনো মিলিয়ে কাজ করতে চাইছেন। এগোতে চাইছেন। আমি সঙ্গে আছি।’’ একুশের মঞ্চে তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এদিন দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘সেই বন্ধুরা খুব কষ্টে আছে যারা আমাকে তৃণমূল কংগ্রেসে পাঠিয়ে দিয়েছিল। যারা নতুন অন্য পার্টির নাম দিয়ে আমাকে তার নেতা বানিয়ে দিয়েছিল। তাদের কাল থেকে কিভাবে চলে দেখি। কাল রাত থেকে তারা মিটিং করেছে এইবার কি ফান্ডা বের করা যায়। গল্প তৈরি করে করে তারা মাথা খারাপ করে ফেলছেন৷ গল্প তৈরি করে করে তারা ক্লান্ত৷’’ ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের। এরপর ২৮এর লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে অন্য দেওয়া টিকিট দেওয়া যে ভালোভাবে নেন নি তা দিলীপ নানাভাবে দলকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন । দলের অন্দরে অভিযোগ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দিলীপ বিরোধীরা দলের মধ্যে দিলীপকে ক্রমশ কোনঠাসা করে দেয় । বিশেষ করে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে গেলে দিলীপের উদ্দেশ্যে নানা কটূক্তি ছুঁড়ে দিতে ছাড়েনি তাঁর দলের তাবড় নেতারাও। তাঁকে ঘিরে কর্মীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর হোক বা অমিত শাহের কলকাতায় কর্মসূচি। কোনও কিছুতেই দেখা যায়নি বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। এমনকি শমীক ভট্টাচার্য যেদিন নতুন রাজ্য সভাপতি হলেন সেদিনও আমন্ত্রণ পাননি দিলীপ ঘোষ। বোঝাই যাচ্ছিল দলের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির দূরত্ব বাড়ছে। তবে দায়িত্ব নিয়ে শমীক -দিলীপ যোগসূত্র দলে ব্রাত্য হয়ে যাওয়া কর্মীরা নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । মঙ্গলবার সল্টলেকের দলীয় কার্যালয়ে রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ এরপরেই দিল্লি থেকে দিলীপ ঘোষকে তলব । তবে কি বঙ্গ বিজেপিতে দিলীপের ‘গ্রেট কামব্যাক’ সময়ের অপেক্ষা?