বিধানসভার আগে মালদায় আবারও অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূলের অন্দরে

১৪ জুলাই, ২০২৫: খোদ মন্ত্রীর গড়ে এবার তৃণমূলের ভরা সভায় মঞ্চে গরহাজির জেলা পরিষদ সদস্যের অনুপস্থিতি নিয়ে তৈরি হল জল্পনা। গত রবিবার বিকেলে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর কিরণবালা বালিকা বিদ্যালয় ময়দানে ২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি উপলক্ষে তৃণমূলের কিষাণ খেত মজদুর ইউনিয়নের জেলা সম্মেলন ছিল। সেখানে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি পূর্ণেন্দু বসু, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের চেয়ারপার্সন জয়া দত্ত, জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি, রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নূর সহ জেলার তৃণমূলের শাখা সংগঠনের প্রায় সব নেতারা উপস্থিত থাকলেও, এদিন সভায় ছিলেন না এলাকার দাপুটে জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান। তবে শুধু বুলবুলই নয়, এদিন মঞ্চে দেখা যায়নি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (এ) ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমান এবং হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (বি) ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্যা মর্জিনা খাতুনকে। অনুপস্থিত ছিলেন যুবর ব্লক সভাপতি পূজন দাস, শ্রমিক সংগঠনের ব্লক সভাপতি সাহেব দাস। এই সম্মেলনের মূল আহ্বায়ক ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা স্থানীয় বিধায়ক এবং রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমূল হোসেন। বেশ কিছু দিন ধরেই দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে আসছিল। শাসক দলের অন্দরে বিধানসভার টিকিট নিয়ে কার্যত দূরত্ব বাড়ছে জুজুধান দুই পক্ষের। যদিও প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ দুই পক্ষই। রাজনৈতিক মহলের মতে পঞ্চায়েত এবং লোকসভার খারাপ ফলাফলের কারণে মন্ত্রীর উপর আস্থা হারাচ্ছিল দলের একাংশ। যার কারণে বিধানসভার টিকিট নিয়ে বাড়ছিল দুই পক্ষের অনুগামীদের মধ্যে সংঘাত। আর এদিন বুলবুলের অনুপস্থিতি সেই সংঘাতের জল্পনাকেই যেন আরো উস্কে দিল। যদিও এই অনুপস্থিতি নিয়ে মন্ত্রী তাজমূলের দাবি, তিনি সকলকে ফোন করে আসতে বলেছেন। কিন্তু কেউ ব্যক্তিগত কাজের জন্য না আসতে পারলে সে দায় তার নয়। অন্যদিকে বুলবুলের দাবি, তিনি বাইরে ছিলেন বলে আসেননি। কিন্তু দলকে যা জানানোর তিনি জানিয়েছেন। সমগ্র ঘটনা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপিও। তাদের দাবি, এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। যে দলে একপক্ষ আরেক পক্ষকে খুন করছে, সেই দলে এটাই স্বাভাবিক। তবে বিধানসভার প্রাক্কালে দলের অন্দরের এই কলহ যে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।
বজ্র পাতে পুড়ে গেলো দীঘার জগন্নাথের ধ্বজা

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক: বজ্রপাতে পুড়ে গেলো দীঘার জগন্নাথ কালচারাল সেন্টার এর মন্দিরের ধজ্বা। পূর্ব মেদিনীপুরেও সকাল থেকে প্রবল বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত চলছে। যার থেকে বাদ যায়নি সমূদ্র সুন্দরী দিঘাও। সকাল থেকেই দীঘাতে’ও প্রবল বৃষ্টিপাত। আর জেরে হওয়া বজ্রপাতে পুড়ে যায় দীঘার মন্দিরের ধজ্বা। যা নিয়ে সকালে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা। এমনকী ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার ফলে এই ঘটনা ঘটেছে বলে লেখেন তিনি। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর আরও অভিযোগ। ” রাজনীতির জন্য ধর্ম নিয়ে ছেলেখেলা তিনি ভালো ভাবে নেন নি। বিধর্মীদের যথেচ্ছ প্রবেশ, আমিষ খাবার খেয়ে শাস্ত্রবিধি না মেনে পুজো অর্চনা, রথের রশি জুতো দিয়ে মাড়ানো সব ভুরি ভুরি অনাচার। কোনো একজনের অহংবোধকে তুষ্ট করতেই মহাপ্রভু কে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু কথায় আছে ” চখা আঁখি সবু দেখুচি…।” গোটা বিষয় বিরোধী দলনেতার বক্তব্যকে কিছুটা মান্যতা দিয়েছে পুরীর সেবাইত রাজেশ দ্বৈতপতি। তাঁর মতে, “পুজোর বিঘ্ন থেকে এই ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ঠিক হয়ে যাবে। বিরোধী দলনেতা যে অভিযোগ করেছে পুজো ঠিক ঠাক না হওয়ার সেটাও হতে পারে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
“হিন্দুরা অস্ত্র তৈরী রাখুন।”: শুভেন্দু

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক:- এবার হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার নিদান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। সোমবার খেজুরির জনকা থেকে বিদ্যাপীঠ পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ র্যালির ডাক দেয় বিজেপি। সেই প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দেন শুভেন্দু। সেখানেই হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার কথা বলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এদিন তিনি বলেন, ” ভাইপো গ্যাং ও মমতা খালার বিশেষ সম্প্রদায়ের শান্তির ছেলেদের বাঁচাতে হিন্দু হত্যা করে এখন গল্প গল্প তৈরি করছে পুলিশ। এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে গঙ্গার উপরে আমাদের যেতে হবে। হিন্দুদের বলবো কাঁচা বাঁশের লাঠিতে তেল মাখিয়ে তৈরি থাকুন আরো বেশি এই ধরনের লাঠি বানান। হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করুন।” উল্লেখ্য গত শুক্রবার এই খেজুরিরই জনকাতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় সুজিত দাস ও সুধীরচন্দ্র পাইকের। যা নিয়ে দুই পরিবারেরই বক্তব্য ছিল বিষয়টি পরিকল্পিত খুন। একই দাবি নিয়ে সোমবার বনধ ডাক দেয় বিজেপি। এদিন পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন বিরোধী দলনেতা। বলেন, ” ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য সব ধরনের আইনি সহযোগিতা আমি দেব। কি করে বিচার পাওয়া যায় আপনাদের বিরোধী দলনেতা সেটা খুব ভালো করে জানে।” পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে বিধান সভায় তৃনমূলকে সাফ করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে শুভেন্দু বলেন,” নন্দীগ্রাম-খেজুরির লোককে যতো জেল খাটাবেন তত ঐক্যবদ্ধ হবে। মনে রাখবেন ২০২১ সালে পূর্ব মেদিনীপুর নরেন্দ্র মোদীকে ৪৪ শতাংশ ভোট দিয়েছিল। ২০২৪ সালে ভোট দিয়েছিল আর ২০২৬ এ ৫১ শতাংশ ভোট আজ 16 টা বিধানসভাই আমরা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেব।” এমনকি তৃণমূলের সংখ্যালঘুদের হাতে আগামী দিনে তৃণমূলেরই হিন্দুরা খুন হবে পারেন বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
পুলিশের সঙ্গে বচসা-ধস্তাধস্তি, বিজেপির খেজুরি বন্ধে বিক্ষিপ্ত ঝামেলা

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক: দুই ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে বিজেপির ডাকা বন্ধে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি এমনকী কার্যত দাদাগিরি করতে দেখা গেল বনধ সমর্থকদের। ‘ খেজুরি’তে ‘ গায়ের জোরে জনজীবন ব্যাহত করার চেষ্টা করে তারা। বিজেপি কর্মীদের বাধা দিতে আসে পুলিশ। পুলিশের সাথে বচসায় জড়িয়ে পড়ে বিজেপি সমর্থকরা। হয় ধস্তাধস্তিও । খেজুরি বিদ্যাপীঠের কাছে ফলের পেটি রেখে হেঁড়িয়া-খেজুরি রাজ্য সড়ক অবরোধ শুরু হয়। সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। অবরোধ তুলতে গেলে কর্মী-সমর্থকদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাঁধে। অভিযোগ বাঁশগোড়াতে গাড়ি ভাঙচুর করা হয় । এখনও পর্যন্ত পুলিশ ৯ জন ব সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে মহরমের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে সুজিত দাস (২৩) এবং চন্দ্র পাইক ( ৬৫) এর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় খেজুরি থানার পুলিশ। প্রাথমিক অনুমান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দেরও একই দাবি। তাঁরা জানান, অনুষ্ঠানস্থলের কাছে একটি হ্যালোজেন লাইট খুলে পড়ে দুই ব্যক্তির উপর। তার জেরে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি ছিল এটি পরিকল্পনা করে খুনের ঘটনা। বিজেপির দাবি, মৃতদেহ গুলিতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি জালাউদ্দিন খান বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী বরাবর লাশের রাজনীতি করতে ভালোবাসেন। শকুনের মতো চেয়ে থাকেন কখন লাশ পড়বে আর তিনি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু করবেন। এবারেও তার অন্যথা হয়নি। রাতে অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে দুই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। নিছক একটা দুর্ঘটনাকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে রাজনীতি করতে শুরু করেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু অনুষ্ঠান মঞ্চের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে সত্য ঘটনা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এরপরেও বিজেপির লজ্জা করে না?” কাঁথির এসডিপিও দিবাকর দাস বলেন, “অভিযোগের তদন্ত চলছে। অনুষ্ঠানের কোনও অনুমোদন ছিল না। কার গাফিলতিতে মৃত্যু ঘটেছে দেখা হচ্ছে। “
ভিনরাজ্যে লাগাতার বাঙালি হেনস্তা, প্রতিবাদে ১৬ জুলাই পথে নামবেন মমতা

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক : ভিন রাজ্যের বাংলা ও বাঙালিদের লাগাতার অসন্মান। এর প্রতিবাদে চলতি মাসের ১৬ পথে নামছে তৃণমূলে। কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হবে এই পদযাত্রা। একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে গুলোতে বাংলা ভাষায় কথা বললেই ওপারে পুশব্যাক সহ হেনস্থার অভিযোগ। আর এরই প্রতিবাদে পথে নামবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা ১ টায় কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হয়েছে মিছিলটি শেষ হবে ডোরিনা ক্রসিংয়ে। রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ওড়িশা, থেকে শুরু করে দিল্লির জয়হিন্দ কলোনি থেকে শুরু করে একাধিক রাজ্যে লাগাতার বাঙালিদের হেনস্তার অভিযোগ উঠছে। রবিবার দুপুরে তৃনমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ” আমরা অবাক, এ কোন দেশ! বিজেপি শাসিত যে কোনও রাজ্যে গেলেই, সে বাঙালি হলে নাকি দেশবাসী নয়! বাংলার অস্মিতাকে অপমান করা হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে! আর এই অপরাধমূলক কাজে মদত দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। মানুষ আতঙ্কিত। বাঙালি হলেই বিদ্যুৎ, জলের লাইন কেটে দিচ্ছে। পরিচয়পত্র থাকলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। সেই সঙ্গে এনআরসি আতঙ্ক। আমরা এই অত্যাচারকে ধিক্কার জানাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও প্রতিবাদ করেছেন। এবারও প্রতিবাদ করবেন।” সেখানেই ১৬ জুলাই মিছিলের কথা ঘোষণা করেন চন্দ্রিমা। আগামী ১৬ জুলাই ১ টায় কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মিছিল হবে। একইদিনে দুপুর ২ টো থেকে ৪ টে পর্যন্ত জেলায় জেলায় মিছিল হবে। দিল্লিতেও প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে বলে জানিয়েছেন চন্দ্রিমা।
মোদী-মমতার জন্য আম পাঠাচ্ছেন ইউনূস, তবে কি বরফ গলবে?

১৪ জুলাই, ২০২৫: গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশে ছাত্র অভ্যুত্থানের ফলে আওমীলিগ, তথা হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছয়। এরকম পরিস্থিতিতে ভারতে আশ্রয় নেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সম্পর্কে তিক্ততা বাড়ে। হাসিনার সময়ে ঢাকার সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক মধুর থাকলেও, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর পথে হেঁটেছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বেড়েছে নানান কূটনৈতিক চাপ। এরকম পরিস্থিতিতে এবার ইউনূস সরকারের তরফ থেকে ভারতে প্রথম উপহার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য ১,০০০ কেজি বিখ্যাত ‘হাড়িভাঙ্গা’ আম পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই নন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকেও এই আম ‘উপহার’ হিসেবে পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। যদিও এই রীতি নতুন নয়। হাসিনা সরকারের সময়ও প্রতি বছর নিয়ম করে উপহার হিসাবে ঢাকা থেকে আম ও ইলিশ আসত ভারতে। কিন্তু বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে মহম্মদ ইউনূস সরকারের পাঠানো এই উপহারকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও চলতি বছরের এপ্রিলে ব্যাংককে BIMSTEC শীর্ষ সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মহম্মদ ইউনূস মুখোমুখি হন। সেখানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে ইউনূসকে সরাসরি বার্তা দেন মোদী। তারপরই ঢাকার এই আম উপহার পাঠানোকে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে বরফ গলার ইঙ্গিত হিসাবেই ধরছেন অনেকেই। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মহম্মদ ইউনূস নিজেই উদ্যোগ নিয়ে এই এক হাজার কেজি হাড়িভাঙা আম উপহার হিসাবে ভারতে পাঠাচ্ছেন। ৬০টি কার্টুনে প্যাক করা এই আম গত ১০ জুলাই আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ভারতে রওনা দেয় এবং ১৪ জুলাই তা দিল্লিতে পৌঁছানোর কথা। এখন দেখার, এই আমের সৌজন্যে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক আগের অবস্থানে ফেরে কিনা।
সংসদের উচ্চ কক্ষে রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দিলেন চার বিশিষ্টকে

প্যারালাল নিউজ ডেস্ক: ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮০ (১) (ক)–এর অধীনে রাজ্যসভায় ৪ জন সদস্যকে মনোনীত করলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। রবিবার সকালে রাইসিনা হিলস এর র তরফে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৪ জন বিশিষ্ট নাগরিককে রাজ্যসভাতে মনোনয়ন দিলেন। তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু চমক। যে চার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন বিশিষ্ট আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম, কেরলের সমাজকর্মী তথা শিক্ষাবিদ শ্রী সদানন্দন মাস্টার, প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবং ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈন। রাষ্ট্রপতি মনোনীত সাংসদদের তালিকায় কসাবকে ফাঁসিতে ঝোলানো আইনজীবী, তেমন এই তালিকায় আছেন প্রাক্তন আমলা, আবার শিক্ষাবিদ ও গবেষক রয়েছেন। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ২৬/১১ মুম্বই হামলায় ধৃত একমাত্র জঙ্গি অজমল কাসবের বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বিশিষ্ট সরকারি আইনজীবী উজ্জ্বল। ২০১০ সালে আদালত কসাবকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন বিচারক এবং পরবর্তী পর্যায়ে সেই রায় সুপ্রিম কোর্ট ও রাষ্ট্রপতির দ্বারাও অনুমোদিত হয়ে অবশেষে, ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর কসাবের ফাঁসি কার্যকর হয়। পাশাপাশি ১৯৯৩ মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, গুলশন কুমার হত্যা, প্রমোদ মহাজন হত্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার আইনজীবী ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ২০২৪ এ নির্বাচনে বিজেপি মুম্বই উত্তর-মধ্য লোকসভা কেন্দ্রে উজ্জ্বল নিকম’কে প্রার্থী করলেও ব কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে হেরে যান। প্রাক্তন বিদেশসচিব দার্জিলিং এর আদি বাসিন্দা হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দীর্ঘদিন কূটনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করার পর অবশেষে সংসদে প্রবেশ করতে চলেছেন। তবে এর আগে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে তিনি বিজেপি প্রার্থী হতে পারেন এমন সম্ভাবনা তৈরী হলেও শেষ পর্যন্ত টিকিট পান রাজু বিস্তা। তবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে রাষ্ট্রপতির তরফে তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত করা হল। রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্যদের নামের ওই তালিকায় রয়েছেন কেরলের প্রবীণ সমাজকর্মী ও শিক্ষাবিদ সি. সদানন্দন মাস্টার। ঘটনাচক্রে তিনি কেরল বিজেপির অন্যতম মুখ। কেরলের ত্রিশূর জেলার প্রখ্যাত শিক্ষক ও সমাজসেবী তিনি। ১৯৯৪ সালে পেরিঞ্চেরি এলাকায় রাজনৈতিক হামলার শিকার হন। বাদ যায় দু’টি পা। তা সত্ত্বেও শিক্ষা ও সমাজকল্যাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন তিনি। সদানন্দনের উপর হামলার ঘটনায় কাঠগড়ায় তোলা হয় বামেদের। ২০২১ সালে কেরল বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হলেও জয় পাননি তিনি। তবে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ার পিছনে রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী বছর কেরলে বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। রয়েছে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈ ওনের নামও। ত মধ্যযুগ ও ঔপনিবেশিক ভারতের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ইতিহাস নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করেছেন তিনি। দিল্লির গার্গী কলেজে ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। নেহরু মেমোরিয়াল মিউজ়িয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরির ফেলো হিসাবেও কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চের সিনিয়র ফেলো হিসেবে যুক্ত। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ২০২০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।
আবারও নিম্নচাপের চোখ রাঙানি, ভাসবে বাংলা

কলকাতা, ১৪ জুলাই: ফের একবার বর্ষার প্রকোপে বাংলায় বাড়তে চলেছে বৃষ্টি। নিম্নচাপের জেরে এই বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে বলেই আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। এই নিম্নচাপের নেপথ্যে কাজ করছে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত। আর সেই ঘূর্ণাবর্তই শক্তি বাড়িয়ে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দাপট বাড়াবে, অন্তত তেমনই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই সোমবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো দমকা হাওয়াও। সোমবার দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরেও রয়েছে ভারী বর্ষার সম্ভাবনা। এছাড়াও পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি ৯ জেলায় বিক্ষিপ্ত বর্ষণের সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। শুধু সোমবারই নয়, আগামী মঙ্গলবারও দক্ষিণবঙ্গে চলবে বৃষ্টি। মঙ্গলবার বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে হলেও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে হাওয়া অফিস। মোটামুটিভাবে সারা সপ্তাহ জুড়েই কম-বেশি বৃষ্টিতে ভিজতে পারে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলা। তাই আগামী ৫ দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি বৃষ্টি চলবে উত্তরবঙ্গেও। সোমবার উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় ভারী বর্ষার পূর্বাভাস রয়েছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে সোমবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা থাকছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ মঙ্গলবারও ভারী বৃষ্টি হতে পারে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ারে।
রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে ফের জল ছাড়ল ডিভিসি, সংঘাত চরমে

রাজ্যকে কোনও কিছু না জানিয়ে আবারও জল ছাড়ার অভিযোগ উঠল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (DVC) বিরুদ্ধে। শুক্রবার পাঞ্চেত জলাধার থেকে এক ধাক্কায় ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে রাজ্যের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। যার জেরে ফের নবান্ন-ডিভিসি সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। জল ছাড়ার আগে নাকি রাজ্যকে কোনওরকম সতর্কবার্তাই দেওয়া হয়নি বলেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেচ দফতরের তরফে নাকি মেল মারফত কড়া আপত্তি জানানো হয়েছে ডিভিসিকে। মেলে উল্লেখ করা হয়েছে, এই জল ছাড়ার ফলে হাওড়া ও হুগলি সহ একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমনিতেই কিছুদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে এই সমস্ত এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। এখনও সেই ক্ষয়ক্ষতি সামলে উঠতে পারেনি প্রশাসন। তারই মধ্যে ফের জল ছাড়ায় নতুন করে বিপদের সম্মুখীন হতে পারে এইসব অঞ্চল, এমনটাই আশঙ্কা নবান্নের। রাজ্যের তরফ থেকে নাকি ডিভিসি-কে জানানো হয়েছে, যখন পাঞ্চেত জলাধারের জলস্তর ৪১১ ফুটের আশেপাশে রয়েছে (যা বিপদসীমার নিচে) তখন কেন এতটা জল ছাড়া হল? কেন কোনওরকম যোগাযোগ না করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? ভবিষ্যতে যেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। সেই দাবিও জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। তবে এটা নতুন নয়, এর আগেও একাধিক বার এই অভিযোগ করা হয়েছে রাজ্যের তরফে। এদিনই ডিভিসির জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্য সচিব। পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার নদীবাঁধ মেরামতির অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় যান সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কেউ যাতে ত্রাণ থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করা হবে। এমনকী বিপর্যয় মোকাবিলায় যে রাজ্য সরকার সমস্ত রকম ভাবে প্রস্তুত, তাও স্পষ্ট করে দেন মানস বাবু।
এআই ছবি কাণ্ডে অবশেষে পুলিশে অভিযোগ জানালেন রাজন্যা

দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় তৃণমূলের ছাত্রনেতা মনোজিৎ মিশ্র গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছিলেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেত্রী রাজন্যা হালদার। বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি লাগাতার অভিযোগ করে গেছেন, তৃণমূলের ছাত্র ও যুব নেতারা তাঁর এআই(AI) নির্মিত ন্যুড ছবি হোওয়্যাটএপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। তবে তিনি নির্দিষ্ট ভাবে কারও নাম নেননি। তিনি এও জানিয়েছিলেন, দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে এ বিষয়ে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। যদিও তৃণমূলের তরফে রাজন্যার এই অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছ থেকে তেমন প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তৃণমূলের তরফে মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষের কন্যা প্রিয়দর্শিনী ঘোষই একমাত্র এই বিষয় নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তিনি পাল্টা প্রশ্ন তুলেছিলেন, “এই ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে রাজন্যা এতদিন কিছু বলেননি কেন? কেনই বা তিনি পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানাননি? তাহলে কি ফুটেজ খাওয়ার জন্যই তিনি মিডিয়ার সামনে এ সব বলে বেড়াচ্ছেন।” অবশেষে পুলিশের দারস্থ হলেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেত্রী রাজন্যা হালদার। শনিবার সোনারপুর থানায় ইমেলের মাধ্যমে এবং কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন রাজন্যা। অভিযোগপত্রের সঙ্গে তিনি ওই বিতর্কিত ছবিগুলির কপিও সংযুক্ত করেছেন। রাজন্যার দাবি, রাজনৈতিকভাবে তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই ‘বিকৃত’ ছবি ছড়ানো হয়েছে। যদিও তিনি এখনও পর্যন্ত অভিযোগপত্রে কারও নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। তবে রাজন্যা জানিয়েছেন, তদন্তকারীরা চাইলে তিনি সম্ভাব্য অভিযুক্তদের নাম দিতে প্রস্তুত। পাশাপাশি পুলিশের কাছে তাঁর অনুরোধ ছবিগুলি সত্যিই এআই(AI) প্রযুক্তিতে বানানো কিনা, তা যাচাই করে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া হোক এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তদন্তের প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন রাজন্যা।